সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর ওপর হামলা – অনির্দিষ্ট কালের জন্য জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ

Picsart_23-01-11_22-59-43-225-scaled.jpg

সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর ওপর হামলা – অনির্দিষ্ট কালের জন্য জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ

সাগর চৌধুরীঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় সাবরেজিস্টারের এজলাস রুমে সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর ওপর ‘সন্ত্রাসী হামলার’ প্রতিবাদে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য জমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের সভাপতি অহিদুল ইসলাম ও মহাসচিব এসএম শফিউল বারী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আজ বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল থেকেই এ ঘোষণা কার্যকর করা হয়েছে বলে সংগঠনের মহাসচিব গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় সন্ত্রাসীরা হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলীর ওপর হামলা চালায়।


শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (uno) আবুল হায়াত নিজে ইউসুফের এজলাস কক্ষে গিয়ে তাকে শারীরিকভাবে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন। এরপর তার উসকানি ও নির্দেশে একদল সন্ত্রাসী পরিকল্পিত ভাবে হকিস্টিক এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাবরেজিস্ট্রারকে বেদম মারধর ও জখম করে। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সেলাই দিতে হয়েছে।


এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার (১১জানুয়ারী২০২৩) সকাল থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেজিস্ট্রি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

এই ঘটনায় দায়ী শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (uno) আবুল হায়াত সহ সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি ও গ্রেফতার করার দাবি জানান তারা।

অন্যথায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (uno) আবুল হায়াত এর সরকারি ফোন নাম্বারে ঘটনার বিষয়ে তার মতামত জানার জন্য একাধিক বার ফোন করলেও তিনি, ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জুবায়ের আহম্মদ আজ রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সেখানে দলিল লেখক, নকলনবিশ ও জমিসংক্রান্ত কাজে আসা সাধারণ মানুষ ছিলেন। কে বা কারা তাঁর ওপর হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে হামলা করেছেন, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাননি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে, যোগাযোগ করেছিলাম জেলা রেজিস্ট্রার আফসানা বেগম এর সাথে; তিনি বলেন, ‘ঘটনার আধা ঘন্টা আগে ইউএনও দলবল নিয়ে গিয়ে সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীকে শাসিয়ে এসেছিলেন। তাকে মারপিটের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ইউসুফ আলী আমাকে তাৎক্ষণাৎ ফোনে জানিয়েছিলেন। শাসিয়ে আসার সময় ইউএনও ইউসুফ আলীর ফোনটিও ছিনিয়ে নিয়ে এসেছেন। ওই ফোনটি এখনো ইউএনও তার কাছে রেখেছেন। এসব ঘটনা আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসক স্যার বিষয়টি দেখবেন বলেছিলেন। কিন্তু তার পর পরই সাবরেজিস্ট্রারের ওপরে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিব খাঁন বলেন, হামলার আগে ইউএনও’র সঙ্গে সাবরেজিস্ট্রারের কথাকাটাাকিাটির বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু হামলার সঙ্গে ইউএনও জড়িত আছে এটা সঠিক নয়। সাবরেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল। ভূক্তভোগীরাই হয়তো এই হামলার সঙ্গে জড়িত। তবে যারাই এই ঘটনা ঘটাক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও সংবাদ পড়ুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top