বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফকে বদলী করা হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা এই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
বিশেষ প্রতিবেদনঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে পুলিশের পদস্থ সাতজন কর্মকর্তা ও এক ডিসিকে প্রত্যাহার করতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর তিন ওসিকে সংশ্লিষ্ট জেলার বাইরে অন্যত্র বদলি করতে বলা হয়েছে।
প্রত্যাহার করতে বলা পুলিশের সাত কর্মকর্তার মধ্যে সিলেট ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার রয়েছেন। বাকি পাঁচজন হলেন-হবিগঞ্জ, পিরোজপুর, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুর জেলার এসপি।
চিঠিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসিকেও প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। তিনি ওই জেলার সবগুলো আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তাও। আর ওসি তিনজন গাজীপুরের শ্রীপুর এবং মানিকগঞ্জের সদর ও সিংগাইর থানায় রয়েছেন। এই তিন ওসিকে সংশ্লিষ্ট জেলার বাইরে বদলি করতে বলা হয়েছে।
‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে’ তাদের প্রত্যাহার করে নিতে রোববার স্বরাষ্ট্র এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পৃথক চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এতে প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের স্থলে অভিজ্ঞ ও যোগ্যদের পদায়ন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নির্বাচন কমিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
ইসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সম্প্রতি চারজন নির্বাচন কমিশনার বিভিন্ন জেলায় সফর করে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের ওই সফরের পর্যবেক্ষণ এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসব কর্মকর্তা মাঠ পর্যায় থেকে প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
ইসির এ আদেশ কার্যকর হলে এসব কর্মকর্তার নির্বাচনের কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকবে না। মূলত তাদের নির্বাচনি কার্যক্রম থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হতে পারে বলেও জানান তারা। জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসির পাঠানো চিঠি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পেয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর এবারই প্রথম একসঙ্গে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করতে বলা হলো। এর আগে ইসির নির্দেশে ময়মনসিংহের ডিসিকে প্রত্যাহার করে নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সুনামগঞ্জের ডিসিকে ময়মনসিংহ বদলি করা হয়। এছাড়া ২০৫ জন ইউএনও এবং ৩৩৮ জন ওসিকে বদলির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করে। ফলে তারা বদলি হওয়া এলাকায় গিয়েও নির্বাচনি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এবার যাদের প্রত্যাহার করার জন্য বলা হয়েছে তারা নির্বাচনের কাজে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে পাঠানো ইসির এক চিঠিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ এবং পাঁচ জেলার এসপিদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
বরিশালের পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বিসিএস ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০২২ সালের ১৪ জুলাই থেকে তিনি পুলিশ কমিশনার হিসাবে রয়েছেন।
অপরদিকে সিলেটের পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফও ২০তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি এ পদে রয়েছেন।
অপরদিকে হবিগঞ্জের এসপি এসএম মুরাদ আলী পুলিশ ক্যাডারের ২৪ ব্যাচ কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ১২ জুলাই থেকে তিনি সেখানে রয়েছেন। ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা এসপি মো. শফিউর রহমান গত ৩ জুলাই পিরোজপুরের এসপি পদে যোগ দেন। নোয়াখালীর এসপি শহীদুল ইসলামও ২৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা।
২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে এ জেলার এসপি হিসাবে রয়েছেন। সাতক্ষীরার এসপি কাজী মনিরুজ্জামান ২৫ ব্যাচ কর্মকর্তা এবং ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট থেকে সেখানে কর্মরত এবং মেহেরপুরর এসপি রাফিউল আলম ২৫ ব্যাচের কর্মকর্তা এবং বর্তমান পদে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই থেকে কর্মরত।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে পাঠানো চিঠিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি মো. শাহগীর আলমকে প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনও তার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া আরেক চিঠিতে মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম, একই জেলার সিংগাইর থানার আমিনুর রহমান এবং গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ওসি ফায়েজুর রহমানকে প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট জেলার বাইরে বদলি করতে জননিরাপত্তা বিভাগকে বলা হয়েছে। এদিকে আরও কয়েক ডিসিকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
আরও সংবাদ পড়ুন।
যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমারকে বদলি করতে সিইসিকে চিঠি এলাকাবাসীর
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
থার্টি ফার্স্টে খোলা জায়গায় অনুষ্ঠান করা যাবে না – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী