ওসি ও তদন্ত ওসি সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা – পুলিশের হেফাজতে সাবেক দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু

Picsart_23-01-03_00-12-44-891.jpg

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার ওসি ও তদন্ত ওসি সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা – পুলিশের হেফাজতে সাবেক দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু। মামলার বাকি আট আসামি হলেন—চান্দগাঁও থানার এএসআই মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান, মো. জসীম উদ্দিন, মো. লিটন, রনি আক্তার তানিয়া ও কলি আক্তার।

অপরাধ প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশের হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর (৬৪) মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়েছে।

মামলায় চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল ইসলামসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুননেছার আদালতে এ মামলা করা হয়। সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর স্ত্রী ফেজিয়া আনোয়ার বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে মামলাটি থানায় রেকর্ড করারও নির্দেশ দেন আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।   

মামলার বাকি আট আসামি হলেন—চান্দগাঁও থানার এএসআই মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান, মো. জসীম উদ্দিন, মো. লিটন, রনি আক্তার তানিয়া ও কলি আক্তার।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে দুদকের উপপরিচালক পদ থেকে অবসর নেন সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জের ধরে গত ২৯ আগস্ট শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামে এক নারী। আদালত মামলার শুনানি শেষে ওই দিন তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। ফলে আসামিরা আদালতে হাজির হওয়ার সমন পাননি। মামলার পরবর্তী তারিখে আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাহকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পর আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে শহীদুল্লাহকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মৃত্যু হয়।

চান্দগাঁও থানার ওসি মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘শহীদুল্লাহকে ৩ অক্টোবর রাতে গ্রেফতারের পর শরীর খারাপ লাগছে বলে জানান আমাদের। তখন আমার কক্ষে এনে বসিয়েছি। পরে তার ভাইদের জানিয়ে পার্কভিউ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গ্রেফতারের পর থানায় এনে তাকে কোনও ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।’

এর আগে শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা হলেন নগরের চান্দগাঁও থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ আলী ও এ টি এম সোহেল রানা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মারধরের অভিযোগ এনে শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া। গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানাটি ১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানায় আসে। পরদিন পরোয়ানা তামিল করতে থানার এএসআই ইউসুফ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত জানুয়ারি থেকে তিন হাজার টাকা বেতনে রনি আক্তার তানিয়া শহীদুল্লাহর বাড়িতে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। প্রথম দুই মাস বেতন ঠিকমতো দিলেও মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত বেতন বকেয়া ছিল। ১২ আগস্ট বকেয়া টাকা চাইলে ওই সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন শহীদুল্লাহ। ২৩ আগস্ট রাতে বকেয়া বেতন চাইতে গেলে শহীদুল্লাহ তানিয়াকে চড়থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে তার শ্যালক কায়সার আনোয়ার তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন।

তবে শহীদুল্লাহর স্বজনদের দাবি, রনি আক্তার তানিয়া নামের কেউ তাদের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন না। হয়রানি করতেই প্রতিপক্ষের লোকজন বাদীকে দিয়ে মিথ্যা মামলাটি করেছিলেন।

আরও সংবাদ পড়ুন।

২০ লাখ টাকা ছিনতাই – জড়িত দুই পুলিশ কনস্টেবল

আরও সংবাদ পড়ুন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান এর বিষয়ে রায় কি!

আরও সংবাদ পড়ুন।

পুলিশ যখন মাদক ব্যবসায়ী – মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top