পুলিশের নিয়োগ বাণিজ্য – মাদারীপুরে সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Picsart_23-07-06_09-25-31-860.jpg

পুলিশের নিয়োগ বাণিজ্য – মাদারীপুরে সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অপরাধ প্রতিবেদকঃ মাদারীপুরে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়ায় সাবেক পুলিশ সুপারসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (৫ জুলাই২০২৩) দুপুরে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।

মামলায় আসামিরা হলেন, মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, সাবেক কনস্টেবল নুরুজ্জামান সুমন, জাহিদুল ইসলাম, বরিশালের মুলাদীর বালিয়াতলী গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান সরদারের ছেলে টিএসআই গোলাম রহমান, মাদারীপুর পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল সহকারী পিয়াস বালা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মৃত সফিউদ্দিন ফরাজীর ছেলে হায়দার ফরাজী।

মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৮ মে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হেড কোয়াটার্স। পরে অসংখ্য নারী-পুরুষ আবেদন করলে ২৬ জুন ৩১ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারীকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

এর আগেই গত ২০১৯ সালের ২৪ জুন থেকে ২৬ জুন কয়েক ধাপে ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উপরোক্ত আসামিদের কাছ থেকে গচ্ছিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ হেড কোয়ার্টাসের একটি বিশেষ দল। পরে অনুসন্ধানে পুলিশ হেড কোয়াটার্স জানতে পারে উদ্ধারকৃত টাকা বিভিন্ন চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি একাধিক বার তদন্তে উঠে আসে ঘটনার সত্যতা।

মাদারীপুর জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৯৩ জন। যাদের মধ্যে ৩৬৪ জন শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষায় ইংরেজি অংশের প্রশ্ন প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন মাদারীপুর জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার। 

এরপর চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এই নিয়োগ চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবৈধ ঘুষ লেনদেনের ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুলিশ বিভাগ ছয়টি ধাপে জব্দ করে। বিষয়টি পুলিশ সদর দফতর প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে এবং আদালতের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়।

তাৎক্ষণিক উপরোক্ত আসামিদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভিন্ন স্থানে সংযুক্তি করে রাখা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে দুদককে মামলা নিতে সুপারিশ করে পুলিশ হেড কোয়াটার্স। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করে দুদক।

জানা যায়, সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন। অপরদিকে কনস্টেবল নুরুজ্জামান সুমন ও জাহিদুল ইসলাম বরখাস্ত। এদিকে পিয়াস বালা চাকরিচ্যুত, অপরদিকে হায়দার ফরাজী পলাতক। আর গোলাম রহমানের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপপরিচালক আতিকুর রহমান জানান, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ১৯৪৭ সালের (৫) ২ ধারা ও অসৎ উপায়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করায় দণ্ডবিধির ১৬১/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা করা হয়েছে। শিগগিরই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ কমিটির তিন সদস্যদের মধ্যে সভাপতি ও প্রধান ছিলেন মাদারীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার। এছাড়া বাকি সদস্যরা হলেন, মাদারীপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ইসলাম ও গোপালগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।

আরও সংবাদ পড়ুন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির বরখাস্ত

আরও সংবাদ পড়ুন।

পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব খান চাকরি হারালেন; ঘুষ গ্রহণ ও অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে

আরও সংবাদ পড়ুন।

পুলিশের ডিআইজি মিজান চাকরি হারালেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top