সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মানছেন না বিচারকরা; জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি
বিশেষ প্রতিবেদকঃ চার বছর আগের নির্দেশনা মেনে চলছে না বিচারকরা,ফলে জনসাধারণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। রবিবার দেওয়া সার্কুলারে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের সার্কুলার অনুযায়ী নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালন করছেন না।
কোনো কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা বিচারিক কর্মঘণ্টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের চেম্বার অথবা কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বরত অবস্থায় তোলা ছবি বা ভিডিও আপলোড করাসহ নিজের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ভঙ্গ কারী ছবি পাবলিক পোস্ট হিসেবে আপলোড করছেন, অন্যের আপলোড করা ছবি, ভিডিও বা কন্টেট শেয়ার বা তাতে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করছেন।
এছাড়াও রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে মন্তব্য বা শেয়ার করছেন এবং ইউটিউব বা অন্য কোনো মাধ্যমে নিজ বা ছদ্মনামে চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করাসহ অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন অনুষ্ঠানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করছেন।
কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে বিচার বিভাগ সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিত।
আরও সংবাদ পড়ুন।
https://wnews360.com/archives/51528
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেসবুকে যা পরিহার করতে হবেঃ
ক. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থি কোনো প্রকার তথ্য, মন্তব্য ও অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
খ. কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
গ. রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনা সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ঘ. কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয় প্রতিপন্নমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ঙ. কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
চ. লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ছ. জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রচার ও প্রকাশ।
জ. কোনো মামলাসংক্রান্তে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।
ঝ. নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।
ঞ. সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ ও প্রচার।
ট. অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, মানহানিকর ও নৈতিকতা পরিপন্থি কোনো স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদিতে অন্যজনকে সংযুক্ত করা (ট্যাগিং), আদান-প্রদান (শেয়ারিং), প্রকাশ ও প্রচার।
আরও সংবাদ পড়ুন।
কোনো বিচারক দুর্নীতি করলে তাকে বিচার বিভাগে রাখ হবে না – প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
যেসব বিষয় অনুসরণ করতে হবে বিচারকদের।
ক. প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
খ. প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
গ. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা এবং বিচারকসুলভ মনোভব অবলম্বন করতে হবে।
ঘ. অপ্রয়োজনীয় বা গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেওয়া যাবে না।
ঙ. বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল/গ্রুপ থাকতে পারে, যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ছাড়া কেবল আইনগত বিষয়ে অ্যাকাডেমিক আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে।
চ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
ছ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।
জ. বাস্তব ও স্বাভাবিক অবস্থায় সহকর্মীদের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি, করণীয় ও বর্জনীয় দিকগুলোর প্রতিফলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিশ্চিত করতে হবে।
আরও সংবাদ পড়ুন।
প্রধান বিচারপতির নির্দেশে – বগুড়ার সেই বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক মিসইউজ ও অ্যাবিউজ দেখেছি – আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
আরও সংবাদ পড়ুন।