বৃহস্পতিবার
বৃহস্পতিবারগুলো আর আগের মতো জমে ওঠে না
কোথাও যাবার তাড়া নেই
কেউ আসার তাড়া নেই
অপেক্ষা-প্রতীক্ষা কিছুই নেই
কেবলই রুটিন মাফিক যাত্রা-
সিএনজি টু সিএনজি
তারপর ইকবাল
আরো পরে পায়ে হেঁটে নির্বাক চলা।
হুটহাট ফোন বাজে না
টুংটাং ম্যাসেজের শব্দ নেই
মোবাইল ফোনটি শীতলতায় ঘুমিয়ে থাকে।
সবার আনন্দ বেদনার স্ট্যাটাসগুলো তলিয়ে যায় আমি দেখার আগেই…
থেকে থেকে ক্রনিক কাশরোগীর মতো খুকখুক কাশি, কফ নেই, তাই রাস্তাঘাট নোংরা করার দরকার পড়ে না, খালা কেবল বলে-
মরার কাশ ভালো হয় না ক্যান!
মনে মনে হাসি,তাও তো কাশি লেগেই আছে
অনুভব করতে পারি বেঁচে আছি!
মাঝে মাঝে ভাবি,
সুখের অনুভূতি কারোর উপর নির্ভরশীল?
তাহলে সুখের অস্তিত্ব কোথায়?
সবাই ছুটছে
সবাই হাহাকার করছে
সবাই অতৃপ্ত
সবারই অন্তরে আগুন জ্বলছে-
কারো পাওয়ার জন্য
কেউ হিংসার জন্য
অবজ্ঞা অবহেলার জন্য
জ্বলছেই, পুড়ছেই
আতসবাজির মতো, উল্কার মতো, অগ্নিগিরির মতো-
ভিক্ষুক হাত বাড়ায়, মুখে কতো কতো কাতরবুলি,কতো মিনতি
কতো মুখ ঝামটা দিই
কতো তাচ্ছিল্য করে বলি- কাজ করতে পারো না!
যাতনা যার কষ্ট তার
বিষ যে খায় নীল তাকেই স্পর্শ করে!
বৃহস্পতিবারগুলোয় সঞ্জীবনী সুধা নেই
কেবল ধুলোবালি
কেবল একদল অভাবি মানুষের আর্তনাদ
আমার দশ টাকায় সে হয়তো এক আঁটি পালংশাক কিনবে
আমার দশ টাকায় সে হয়তো এক পোয়া আলু কিনবে
আমার দশ টাকায় আসলে সে কিছুই কিনতে পারবে না
আবার কারো কাছে যাবে, হাত পাতবে,আবার আবার আবার ধুলোবালিতে ঢাকা পড়বে সুন্দর অবয়ব, বহুবার মুখ ঝামটি খাবে, বহু বহুবার….
অথচ বৃস্পতিবার আসতে পারতো চাঁদের হাঁট হয়ে
সরাইখানার উজ্জ্বলবাতি হয়ে
কিংবা এপার ওপার তোলপাড় উচ্ছ্বাস হয়ে……
শাহানা সিরাজী
ইন্সট্রাক্টর সাধারণ
পিটিআই মুন্সীগঞ্জ
কবি প্রাবন্ধিক কথা সাহিত্যিক।