দুর্নীতি দমন কমিশনে ‘আমলাতান্ত্রিক’ আদেশ, উদ্বেগ জানিয়ে প্রত্যাহারের আহ্বান টিআইবির

Picsart_23-01-08_07-44-39-091.jpg

দুর্নীতি দমন কমিশনে ‘আমলাতান্ত্রিক’ আদেশ, উদ্বেগ জানিয়ে প্রত্যাহারের আহ্বান টিআইবির

বিশেষ প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অনুসন্ধান ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষমতা সচিবের হাতে ন্যস্ত করে আদেশ জারি করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

এক বিবৃতিতে দুর্নীতি বিরোধী এই সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দুদকের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের ক্ষমতা দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের হাত থেকে সরিয়ে সচিবের হাতে ঢালাওভাবে ন্যস্ত করা হয়েছে। এর ফলে দুর্নীতি প্রতিকারে কমিশনের ক্ষমতা পদদলিত হওয়ার ভয়ানক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সংস্থাটি এই আদেশকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে পদদলিত করার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের হতাশাব্যঞ্জক দৃষ্টান্ত হিসাবে বিবেচনা করছে।

বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী দুদকের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যান ও তার নেতৃত্বে কমিশনের হাতে অর্পিত। এই প্রতিষ্ঠানের মূল ম্যান্ডেট-সংক্রান্ত উক্ত নির্বাহী ক্ষমতা ঢালাওভাবে সচিবের হাতে অর্পণের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি কী প্রক্রিয়ায়, কোন যুক্তিতে হলো?

কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হওয়ার শঙ্কার বিষয়টি কতটা বিবেচিত হয়েছে? সিদ্ধান্তটি কি কমিশন কর্তৃক সজ্ঞানে গৃহীত, নাকি এতদিন ‘নখদন্তহীন বাঘ’ হিসাবে কথিত এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাকে বাস্তবে রূপান্তর করার এক অশুভ প্রয়াসের ফসল-এসব প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক। এসব প্রশ্নের যোক্তিক উত্তর পাওয়া জরুরি। বিশেষ করে কমিশন কেন নিজের হাতে থাকা উক্ত ক্ষমতাসহ আরও কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ এখতিয়ার সচিবের তথা আমলাতন্ত্রের হাতে নিরঙ্কুশভাবে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল? সেটাও স্পষ্ট করা প্রয়োজন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসাবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগের দৃষ্টান্ত অনুসরণের যে ব্যাখ্যা দুদকের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে তা দুদক যে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান নয় সেটা অনুধাবনে ব্যর্থতার পরিচায়ক।

দুদকের এই অফিস আদেশকে অশুভ উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শুধু উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নই নয়, এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের বলে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ী ও নিয়মিতকরণ, চলতি দায়িত্ব প্রদান, ভাতা-ছুটি, পেনশন পিআরএল এবং মামলার সাজার প্রেক্ষিতে পুরস্কারসহ সব ক্ষমতা আমলাতন্ত্রের হাতে অর্পিত হয়েছে। দুদক এখন পুরোপুরিভাবে প্রাক্তণ ব্যুরোতে রূপান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে আর কিছুই বাকি থাকল না।

বিবৃতিতে হতাশা ব্যক্ত করে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, এই আদেশের ছ অনুচ্ছেদের ৪ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢালাওভাবে দুদক আইনের ১৬ ধারার আওতাভুক্ত সব এখতিয়ার বাস্তবায়নের ‘পূর্ণ ক্ষমতা’ সচিবের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর বলে উক্ত আইনের ৩(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দুদকের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হওয়ার জনপ্রত্যাশার কফিনে শেষ পেরেক ছাড়া আর কিছুই নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top