বোরহানউদ্দিনে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না; বোরহানউদ্দিন সাবরেজিস্টার মামুন এবং জেলা রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমানের দেখার সময় নেই।
সাগর চৌধুরীঃ ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতি মহা উৎসব চলছে।
সরকারি নিয়ম ও নীতি’র কোন তোয়াক্কাই করছে না বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সরকারের নির্ধারিত সময় সকাল (৮টা থেকে বিকেল ৩টা) থাকলেও সঠিক সময়ে অফিসে আসেন না কর্মকর্তা ও অফিসের কর্মচারীগণ। বোরহানউদ্দিন উপজেলার স্থানীয় দলিল দাতা ও দলিল গৃহীতারা একাধিক অভিযোগ করেছেন। যা জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে একাধিক বার বলা হলেও তিনি ভুক্তভোগীদের কথা শোনেন নি।
জমি নিবন্ধন কারী সেবাভূগীরা দলিল রেজিষ্ট্রেশন করতে এলে প্রতিটি দলিল থেকেই সরকারের নির্ধারিত রেট থেকে বেশি টাকা দিতে হয়। প্রতিবাদ বা অনুযোগ করলেই সেই দলিল গৃহীতা ও দলিল দাতাকে হয়রানী করা হয়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টারকে অতিরিক্ত টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কোন দলিল হয় না, এমনই অভিযোগ দলিল নিবন্ধন করতে আসা ভূমি মালিকদের। এই অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টারকে জানানো হলে, তারা আরও বেপরোয়া ব্যবহার করে, যা ভাষায় প্রকাশ অযোগ্য।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ১২ টার সময়ও পতাকা স্টান খালি,পতাকা নেই।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টেম্বর২০২২) বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ১২ টার সময়ও পতাকা স্টান খালি,পতাকা নেই। অবাক হওয়ার কথা! কিন্তু এটাই সত্যি। পতাকা স্টান খালি, যেখানে পতাকা থাকার কথা সেখানে পতাকা নেই।
যদিও সরকারি অফিস চলাকালীন সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা বাধ্যতামুলক। তবে, কেউ যদি এই আইন অমান্য করে, জেল ও জরিমানার উভয় বিধান আইনে রয়েছে।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করে সরকারের আইন অমান্য করেছেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার ও অফিসের কর্মচারীরা। সরকারের বিধি বিধান লঙ্ঘন করেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পতাকা অবমাননা করায় তারা উভয় দন্ডেদন্ডিত হতে পারেন।
দলিল নিবন্ধন করতে আসা আমজাদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, সরকারি অফিস চলাকালীন সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নি। এটি আইনের চরম বরখেলাপ। কেন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নি? এমন প্রশ্নে তিনি চুপ করে যান।
আরেকজন নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, জাতীয় ভাবে শেখ রাসেল দিবস পালন করা হয়, কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানে তো দূরের কথা জাতির পিতার জম্ম ও মিত্যু অনুষ্ঠানেও বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার মামুন আসেন না। যেখানে uno এবং এ Acland সরাসরি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন কিন্তু বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার মামুন কখনই সরকারি এই সকল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন না। প্রমান হিসাবে দেখান, আজকের শেখ রাসেল দিবসে তিনি উপস্থিত ছিলেন কি না?
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহাম্মদ উল্লাহ বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না,এই অভিযোগ শুণে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমি লজ্জিত। জেলার মিটিংএ আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে এই বিষয়টি জানতে চাইব। একটি স্বাধীনদেশে এত বড় ক্ষমতা বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার পায় কোথায়? জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে না! একে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার অফিসে সরকার নির্ধারিত অফিস টাইমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নি, কেন? ভোলা জেলা রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমানের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে ফোনে কল করলে, তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
ভোলা জেলা তথ্য কর্মকর্তার কাছে জানতে প্রশ্ন করা হলে, ‘সরকার নির্ধারিত অফিস টাইমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নি কেন? এমন প্রশ্নে তিনি জানতে চান কোন অফিসে অফিস চলাকালীন সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে নি?
তখন তাকে জানানো হয়,আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা সময়ে সরকারি অফিস চলাকালীন সময়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা সাবরেজিস্টার অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নি।
ভোলা জেলা তথ্য কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বরং সরকারি আইন ও বিধি অনুযায়ী তো জেলা অফিস প্রধান আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি জেলা রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমানের নজরে নিয়ে আসতে পারেন। এবং বিষয়টি সম্পর্কে আমিও জেলা রেজিস্ট্রারকে বলার চেষ্টা করব।
আরও সংবাদ পড়ুন।