শত্রু তৈরি হওয়ার জন্য সাফল্যই যথেষ্ট – বিএমইটি’র মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি

Picsart_22-10-11_11-21-20-276.jpg

শত্রু তৈরি হওয়ার জন্য সাফল্যই যথেষ্ট – বিএমইটি’র মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি

সাগর চৌধুরীঃ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণব্যুরো (বিএমইটি) ১৯৭৬ সালে তৎকালীন “জনশক্তি উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের” সংযুক্ত বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ ও প্রেরণের লক্ষ্যে এ ব্যুরো কাজ করে।

বিএমইটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োগ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান, অভিবাসী কর্মীদের অধিকার সংরক্ষণ ও দক্ষতা, প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করে দেশের কর্মোপযোগী জনগোষ্ঠীকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে।

অভিবাসী কর্মী, চাকুরী অন্বেষী ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সেবাপ্রদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএমইটি ব্যাপক অবদান রয়েছে।

০১ জুন ২০২১ বিএমইটি’তে মহাপরিচালক হিসাবে যোগাদানের পর শহীদুল আলম এনডিসি দেশ ও জনগণের সেবায় ব্রত হয়ে উন্নয়ন মূলক গবেষণা লব্দ বিভিন্ন কাজ করেছেন।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০ বছরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ১০ লক্ষ কর্মী বিদেশে প্রেরণ করেছেন, যা ইতোমধ্যে প্রসংশা কুড়িয়েছেন তিনি। দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাগণ এর আগে এত দ্রুত ও নিশ্চিত ভাবে বিদেশে যেতে পারে নি। নিসন্দেহে এটি একটি মাইলফলক, যা করোনা কালিন সময়কে অতিক্রম করে দেশে ডলার পেতে সাহায্য করেছে। দেশের উন্নয়নের চাকা সচল করেছে।

যখন সারা পৃথিবীতে অতিমারি করোনা তখন বিদেশগামী বাংলাদেশী কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ টিকা প্রাপ্তিতে সহায়তা করে প্রত্যেক কর্মীর জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করেন। মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের একযোগের কাজের ফলেই মূলত শ্রমিকদের টিকা নিশ্চিত করে বিদেশে পাঠানো হয়েছে।

সরকারের অন্য অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর লোকসান দিয়ে চলছে বা ভর্তুকি দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে, সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে ননটেক্স রেভিনিউ খাতে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১২ গুন রেভিনিউ সরকারী কোষাগারে জমা দিয়েছে প্রতিষ্টানটি। সরকারের একজন সৎ কর্মকর্তা হিসাবে এর চেয়ে দৃষ্টান্ত আর কি হতে পারে!

দেশের ২২টি জেলায় নতুন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডিইএমও) স্থাপনের প্রশাসনিক অনুমোদন করে
সকল ট্রেডে শতভাগ আসনে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদান নিশ্চিত করেছেন। যে পদক্ষেপে সরকারের সেবা সাধারন জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। ফলে বিদেশগমন ইচ্ছুক কর্মীদের অন্য জেলায় না গিয়ে নিজ জেলায় বসেই সেবা গ্রহন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে সেবা সহজিকরণ এবং অতিরিক্ত অর্থনৈতিক খরচ থেকে মুক্ত হয়েছেন সেবা প্রার্থীরা।

সারাদেশে ৭০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাথে ১১টি ডিইএমও তে থ্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) চালু করেন এবং বিদেশগামী কর্মীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপ চালু করেছেন। যা শেখ হাসিনা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায়ে একদাপ এগিয়ে গেছে প্রতিষ্টানটি।

সরকারের বিএমইটির আওতাধীন রিক্রটিং এজেন্সিসমূহ ব্যবস্থার জন্য অনলাইন RAIMS সিস্টেম চালুকরণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি এবং বিএমইটির আওতাধীন দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের PDS সিস্টেম এ অন্তর্ভূক্তি করেছে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে একধাপ এগিয়ে গেছে প্রতিষ্টানটি।

দরিদ্র, মেধাবী, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০০টি বাইসাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিএমইটি’র মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি।

সম্প্রতি দেশের বন্যা দুর্গত জেলাসমূহে (সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম) জেলা প্রশাসন,উপজেলা প্রশাসন, টিটিসি এবং ডিইএমও এর সমন্বয়ে দরিদ্র মেধাবী, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০০টি বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। যা মানবিক সহযোগিতা এবং দরিদ্রদের মাঝে কাজ করার গতি বাড়িয়ে দিয়েছে।

টিটিসি ও আইএমটিসমূহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন করেছেন।বাংলাদেশের ইতিহাস রক্ষায় এবং প্রতিটি দেশের নাগরিকদের সঠিক ইতিহাস জানতে সহায়তা করেছে।

বর্হিগমনের ক্ষেত্রে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে জেলা-উপজেলায় মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করেছেন। সাধারণ মানুষ হয়রানী থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

সম্প্রতি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণব্যুরো (বিএমইটি) সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিএমইটি’র মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি বলেন, মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়াই আমার কাজ। অনেক মানুষ এখানে কাজ করে। তাদের মনোভাব বুঝতে পারাটাও কঠিন। তাই হয়তো কারো কারো কাছে আমার কাজ অপছন্দ হয়েছে। শত্রু তৈরি হওয়ার জন্য সাফল্যই যথেষ্ট। কারণ ইতোমধ্যে দেশের স্বার্থে আমাকে অনেক কঠিন ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।

আমি সরকারি চাকুরী করি। আমার প্রমোশন ও বদলি বলতে সরকারের কিছু নিয়ম কানুন মেনেই চলতে হয়। সবাইকে সমান ভাবে সুযোগ দেওয়টাও কষ্টসাধ্য, যাকে অনৈতিক সুবিধা দেই নি; তারাই এখন প্রতিষ্ঠানটির বিপক্ষে এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রধান হিসাবে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটায়।

এক প্রশ্নের জবাবে, বিএমইটি’র মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি বলেন, আমি মানুষ। আমার ভুলত্রুটি হতে পারে। ভুল শুধরে আগামীতে আরও সেবা দিব এটাই আমার ব্রত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top