আসামিকে মারধর করায় অবরুদ্ধ দুই পুলিশ
জেলা প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত আসামিকে মারধর করে বিবস্ত্র করায় জনরোষের শিকার দুই পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার ও আসামীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। এঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা হিসেবে ১২০ জনকে আসামী করে মামলা করেন অবরুদ্ধ হওয়া শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মামুনুর রশিদ। এমামলায় মা-ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্ব খন্ড গ্রামের গাঢ়োপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই আসামীকে থানায় নিয়ে যান।
গ্রেফতারকৃত আবুল কালাম (৪৫) ওই এলাকার মৃত শাফিজ উদ্দিনের ছেলে। এঘটনায় শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদ ও আব্দুর রাজ্জাক রাজুসহ দুই পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় লোকজন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে দায়ের করা মামলায় শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্ব খন্ড গ্রামের মৃত শাফিজ উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৪২), তার ছোট ভাই জুয়েল (৩০), বোন রাশিদা খাতুন, স্ত্রী শাহানাজ পারভীন মেয়ে কারিশমাসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১২০ জনকে আসামী করা হয়।
ঘটনার পরপর আবুল কালামের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন বলেন, সন্ধ্যার পর তার স্বামী বাড়ির বাইরে যান। এসময় সিভিল পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে এসে তাকে মারধর করে উলঙ্গ করে ফেলেন। খবর পেয়ে পারভিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আবুল কালামকে মারধর করার কারণ জানতে চান পুলিশ সদস্যের কাছে। এসময় ওই দুই পুলিশ সদস্য কালামের স্ত্রীকে দুটি লাথি মারেন। নারীকে মারধরের প্রতিবাদ করলে পাশের একটি সেলুনে নিয়ে কালামকে আটকে রাখা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী শারিরিকভাবে অসুস্থ। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। সব মামলাতেই তিনি জামিনে রয়েছেন। তবুও প্রায়ই এসে পুলিশ গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না পেলেই হয়রানি করে।
থানায় দায়ের করা এস আই মামুনুর রশিদের অভিযোগে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে জিআর মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামী আবুল কালাম আজাদের হাতে থাকা খালি এক বোতল ফেন্সিডিল ও লুঙ্গির কোচ থেকে আরেক বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের খবরে আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন, মেয়ে মোছা. কারিশমা ও ভাই জুয়েলসহ স্থানীয়রা গতিরোধ করে আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার চেস্টা করে অতর্কিত হামলা করলে স্থানীয় একটি সেলুনে অবস্থান নেয় পুলিশ। পরে সেলুনের সাটার ভেঙ্গে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আসামী আবুল কালাম আজাদকে ছিনিয়ে নেয়ার চেস্টা করে আসামীরা।
এসময় আসামীদের বাধা দেয়া হলে তারা দুই পুলিশ সদস্যদের মারধর শুরু করলে তারা গুরুতর আহত হয়। পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেলুনের ভেতর অবরুদ্ধ হওয়া দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার ও পরোয়ানা ভুক্ত আসামী আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আনিসুর আশেকীন জানান, মারামারির মামলায় আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
পুলিশ আদালতের জারি করা পরোয়ানা তামিল করতে গেলে তারা দুই পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এঘটনায় আবুল কালাম আজাদ ও তার মা জহুরা খাতুনকে গ্রেফতার করে শুক্রবার বিকেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।