বোরহানউদ্দিনে সরকারী বিধি অমান্য করে চলছে প্রাইভেট পড়ানোর রমরমা বানিজ্য; জড়িত সিনিয়র শিক্ষকরা
সাগর চৌধুরীঃ শিক্ষককতা একটি মহান পেশা। কিন্তু ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়। মহান পেশাকে রীতিমতো দাম দর করে পন্য হিসাবে বিক্রী করছেন শিক্ষকরা। ভোলা জেলার সচেতন মহল পীড়িত শিক্ষকদের এমন আচরণে।
ভুক্তভোগী বাচ্চারা ও অভিভাবকগণের অভিযোগ, স্কুলের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে স্কুলের বাচ্ছাদের নাম্বার কম দেওয়া সহ নানা রকম হয়রানী করা হয়। বাধ্য হয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদের অভিভাবকগন বাচ্ছাদের প্রাইভেট পড়তে পাঠান। এমনও অভিযোগ আছে, এডভান্স টাকা আগে দিয়ে তারপর প্রাইভেট পড়তে হয় স্কুলের শিক্ষকদের কাছে।
ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিয়ম ও নীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রাইভেট পড়ান বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা। সেই শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা খুব গর্বের সাথে বলেন, প্রাধান শিক্ষকদের কাছে থেকে অনুমতি নিয়েই তারা পড়াচ্ছেন। কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রাইভেট পড়ানোর অনুমতি দিয়েছেন? এমন প্রশ্নে নিচুপ থাকেন সেই শিক্ষক।
বিষয়টি সম্পর্কে গত তিন কার্যদিবসে বোরহানউদ্দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি। বোরহানউদ্দিন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে আজ মঙ্গলবার গেলে অফিসের স্টাফ বলেন, স্যার অফিসে আসেন নি। এরপর গণমাধ্যম কর্মীরা একাধিক বার বোরহানউদ্দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। অফিসে পাওয়া যায়নি একাডেমিক সুপার ভাইজার আয়েশা সিদ্দিকা। অভিযোগ আছেন এরা অধিকাংশ সময়ই অফিসে অনুপস্থিত থাকেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আইন কানুন মেনেই শিক্ষকরা শিক্ষা-কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন আশা করি। এই নিয়মের বরখেলাপ হলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
স্কুলের প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এই বিষয়ে আমি সঠিক তথ্য জানি না। তবে কোন শিক্ষক তার নিজের স্কুলের বাচ্ছাদের প্রাইভেট করার অভিযোগ পেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
ভোলা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাদব চন্দ্র দাশ বলেন, এর আগেও বোরহানউদ্দিন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সম্পর্কে অভিযোগ শুনেছি। তিনিও সঠিক ভাবে অফিস করেন না। আমি বিষয়টি বিভাগীয় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানাবো সেই সাথে আগামীকাল (বুধবার ৬ জুলাই২০২২) বোরহানউদ্দিনে আসব।
ভোলা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অফিসে উপস্থিত না থাকলে, আপনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাতে পারেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করতে পারেন। বিধি মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা উপজেলা চেয়ারম্যান আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারেন।
তবে, তিন দিন অফিসে শিক্ষা কর্মকর্তাকে না পাওয়া গেলেও শিক্ষকদের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ আছে এবং প্রাইভেট পড়ানোর টাকার একটা অংশের ভাগ তিনিও পেয়ে থাকেন।