সোনালী ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারি – গিয়াস আল মামুন ও সোনালীর এমডি সহ ২১ বিরুদ্ধে মামলা

Picsart_22-06-20_16-28-59-005.jpg

সোনালী ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারি – গিয়াস আল মামুন ও সোনালীর এমডি সহ ২১ বিরুদ্ধে মামলা

সাগর চৌধুরীঃ অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের তথা সরকারের ৩২,৬৭, ৯৪, ৬১২/= (বত্রিশ কোটি সাতষট্টি লক্ষ চুরানব্বই হাজার ছয় শত বার) টাকা ক্ষতিসাধন করায় সোনালী ব্যাংক ও মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেড এর ২১(একুশ) জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা রুজুর অনুমোদন প্রদান ক‌রে।
মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেড এর মালিকগণ ও সোনালী ব্যাংক এর প্রধান কার্যালয় ও স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণ পরস্পর যোগসাজশে জামানত ছাড়াই ঋণপত্র স্থাপন, ঋণপত্রের শর্তাবলী প্রতিপালিত না হওয়া শর্তেও এলটিআর সৃষ্টি করে ৩২,৬৭,৯৪, ৬১২/= (বত্রিশ কোটি সাতষট্টি লক্ষ চুরানব্বই হাজার ছয় শত বার) টাকা পরিশোধ এবং মেশিনারীজ আমদানী করে বিধি মোতাবেক ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করা সত্ত্বেও আমদানী ডকুমেন্টেস এর মাধ্যমে পোর্ট থেকে মেশিনারীজ ছাড়িয়ে নিয়ে বর্ণিত অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে ব্যাংকের তথা সরকারের ক্ষতিসাধন করে। যান কার‌ণে দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায়
শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় বর্ণিত ২১(একুশ) জনের বিরুদ্ধে উল্লিখিত ধারায় একটি মামলা রুজু করার জন্য কমিশন কর্তৃক অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।

আসামীদের নাম
মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড এর-
(১) মোঃ হারুন অর রশীদ, চেয়ারম্যান,
(২) গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক,
(৩) জি. আর চৌধুরী ওরফে গোলাম রব্বানী চৌধুরী, পরিচালক (ওরিয়ন মাশরুম লিমিটেড এর পক্ষে মনোনিত),
(৪) নাসির উদ্দিন মিয়া, পরিচালক,
(৫) এ. এইচ. এম. জাহাঙ্গীর ওরফে আবু হাসান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, পরিচালক,
(৬) রাজিব সিরাজ, পরিচালক,
সোনালী ব্যাংক লি এর-
(৭) মুহম্মদ তাহমিলুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা,
(৮) মোঃ আমানুল্লাহ্, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা,
(৯) মোঃ মিজানুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক,
(১০) মো: শফিকুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক, স্থানীয় কার্যালয়,
(১১) খন্দকার মোশারফ আলী, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক, শিল্প ঋণ বিভাগ, স্থানীয় কার্যালয়,
(১২) মোঃ কামরুল ইসলাম, সাবেক উপ মহাব্যবস্থাপক, স্থানীয় কার্যালয়,
(১৩)আবু জাফর মোঃ সালেহ, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক,
(১৪)আলী আরশাদ, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক,
(১৫) আবু মুসা, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক,
(১৬) আব্দুল গফুর ভুইয়া, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক
(১৭) আ‌তিকুর রহমান, সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার,
( ১৮) এস এম এম আওলাদ হোসেন, সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার,
(১৯) আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার, বৈদেশিক বিনিময় বিভাগ
(২০) ওয়াা‌হিদ উ‌দ্দিন আহম্মদ, সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, বৈদেশিক বিনিময় বিভাগ
(২১) শাহ আলম, সাবেক সিনিয়র অফিসার (এফ,এ), বৈদেশিক বিনিময় বিভাগ
ঘটরা সং‌ক্ষেপ
কনসোর্টিয়াম অর্থায়ন ব্যবস্থায় মঞ্জুরীতব্য প্রকল্প ঋণের অধীনে জার্মানী হইতে ক্যাপিটাল মেশিনারীজ আমদানীর জন্য ১০% মার্জিনে
NAGAR০০ সমমান ৪০,২৩ কোটি টাকা মূল্যমানের ঋণপত্র/এলসি স্থাপনের জন্য ব্যাংকের নিকট ০৪-১১-২০০৪ ইং
তারিখে আবেদন করলে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ০৮-১১-২০০৪ ইং তারিখে মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেড এর
অনুকূলে প্রস্তাবিত প্রকল্প ঋণ মঞ্জুরীর পূর্বে এলসি মূল্যের ১০% সমপরিমান মার্জিন হিসেবে নিয়ে এবং অবশিষ্ট ৯০% মূল্য প্রস্তাবিত
কনসোর্টিয়াম অর্থায়ন ব্যবস্থায় মঞ্জুরীতব্য প্রকল্প ঋণের আওতায় সমন্বয় অথবা প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর না হলে পরিচালকগণ কর্তৃক নিজস্ব
উৎস হতে সমন্বয় করার শর্তে ইউরো ৫২,৮৩,৩৩৪,০০ সমমান ৪০,২৩ কোটি টাকা মূল্যমানের ঋণপত্র (সাইট ভিত্তিতে) স্থাপনের
অনুমোদন প্রদান করেন।
উক্ত অনুমোদন মোতাবেক স্থানীয় কার্যালয়, ঢাকা গত ০৮-১১-২০০৪ ইং তারিখে আমদানী ঋণপত্র স্থাপন করে। তৎপ্রেক্ষিতে
ইস্যুকৃত এলসির মাধ্যমে আমদানীকৃত মালামাল চট্টগ্রাম পোর্টে আসলে তখনও কনসোর্টিয়াম লোন মঞ্জুরী না হওয়ায় কোম্পানী নিজস্ব
উৎস হতে এলসির দায় পরিশোধের শর্ত থাকলেও তারা তা না করে এলসি মূল্যের ৯০% সমপরিমাণ এলটিআর (Loan Against Trust Receipt) সৃষ্টির মাধ্যমে মালামাল ছাড় করার জন্য ০৭-০২-২০০৫ ইং তারিখে আবেদন করলে স্থানীয় কার্যালয়, ঢাকা তাদের ০৭-০৩-২০০৫ ইং তারিখের পত্রের মাধ্যমে মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেড এর অনুকূলে স্থাপিত ঋণপত্র এর বিপরীতে গৃহীত ক্যাপিটাল মেশিনারীজ এর বিল মূল্য নেগোশিয়েটিং ব্যাংকে পরিশোধের নিমিত্ত বিল মূল্য ইউরো ৩৯,৬২,৫০০,০০ এর ৯০%
বাবদ ইউরো ৩৫,৬৬,২৫০,০০ সমপরিমাণ ২৪,৪২,৯০,০০০/- টাকার এলটিআর অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে উপরোক্ত ঋণপত্রের
বিপরীতে গৃহীত আরো একটি বিলের মূল্য ইউরো ১৩, ২০,৮৩৪.০০ এর ৯০% বাবদ ইউরো ১১,৮৮,৭৫০.৬০ এর বিপরীতে এলটিআর অনুমোদনের জন্য কোম্পানী ০৩-০৪-২০০৫ ও ০৫-০৪-২০০৫ ইং তারিখে আবেদন করলে স্থানীয় কার্যালয় তাদের ২৮-০৪-২০০৫ ইং তারিখে মঞ্জুরীপত্রের মাধ্যমে ইউরো ১৩, ২০,৮৩৪.০০ এর ৮৫% বাবদ ইউরো ১১,২২,৭০৮.৯০ সমপরিমান
৮,২৮,২৮,০০০/- টাকার এলটিআর অনুমোদন করা হয়। এভাবে ২টি এলটিআর বাবদ অনুমোদিত ( ২৪,৪২,৯০,০০০+ ৮, ২৮, ২৮,০০০)= ৩২,৭১,১৮,০০০/= টাকার বিপরীতে ( ২৪,৪০, ৭৬,৫৪৬+৮,২৭,১৮,০৬৬)= ৩২, ৬৭, ৯৪, ৬১২/- প্রদান করে বর্ণিত অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুকক সচিব মাহাবুব হোসেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top