ডেসটিনির রফিকুলের ১২বছর এবং হারুনের ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত

Picsart_22-05-12_12-29-40-584.jpg

ডেসটিনির রফিকুলের ১২বছর এবং হারুনের ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত

আদালত প্রতিবেদকঃ ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের ১২ বছর ও চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের ৪ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায় দেন।

এর আগে গত ২৭ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

ওইদিনই রায়ের জন্য এদিন ঠিক করেন আদালত।

আইনানুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ ১২ বছর সাজা প্রত্যাশা করছে দুদক।

দুদক কৌঁসলী মীর আহম্মেদ আলী সালাম বলেন, এই মামলায় আসামিদের নামে আমরা সাক্ষ্য প্রমাণ যথাযথ ভাবে উপস্থাপন করেছি।

আইনানুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে প্রত্যাশা করছি। ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ‍দুদক এ মামলা দায়ের করা হয়।

১০ বছর পর এবার সেই মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। ডেসটিনির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ-আত্মসাতের আরেকটি মামলা বিচারাধীন।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এছাড়া আসামিদের মধ্যে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন।

দুদকের উপ পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় এই মামলা করেন। আর সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে উভয় মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

আসামিদের মধ্যে জামিনে রয়েছেন লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম, লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, মিসেস জেসমিন আক্তার (মিলন), জিয়াউল হক মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম রুবেল। কারাগারে আছেন এমডি রফিকুল আমীন ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন।

অন্য ৩৯ আসামি পলাতক। পলাতক আসামিরা হলেন- ডেসটিনির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ফারাহ দীবা, সাঈদ-উর-রহমান, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, জমশেদ আরা চৌধুরী, ইরফান আহমেদ, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, এসএম আহসানুল কবির, জুবায়ের হোসেন, মোসাদ্দেক আলী খান, আবদুল মান্নান, আবুল কালাম আজাদ, আজাদ রহমান, মো. আকবর হোসেন সুমন, মো. সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মো. মজিবুর রহমান, ড. এম হায়দারুজ্জামান, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, মো. শফিউল ইসলাম, ওমর ফারুক, সিকদার কবিরুল ইসলাম, মো. ফিরোজ আলম, সুনীল বরণ কর্মকার ওরফে এসবি কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান তপন, মেজর (অব.) সাকিবুজ্জামান খান, এসএম আহসানুল কবির (বিপ্লব), এএইচএম আতাউর রহমান রেজা, গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, মো. আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমেদ, একেএম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. শফিকুল হক।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ প্রোজেক্টের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ওই অর্থ-আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন। আর ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী।

দুদক ৩৪টি ব্যাংকে এ ধরনের ৭২২টি হিসাবের সন্ধান পায়, যেগুলো পরে জব্দ করা হয়। আত্মসাৎ করা চার হাজার ১১৯ কোটি টাকার মধ্যে ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগপত্রে বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top