ইউনিয়ন ভূমি কর্তার বিরুদ্ধে ঘুস-দুর্নীতির অভিযোগ!
জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে লেবুখালী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের এক উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস কেলেঙ্কারি ও নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এসব অভিযোগের কারণ জানতে চেয়ে খোদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওই কর্মকর্তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের শিকার হয়েছেন।
এ ছাড়াও লক্ষাধিক টাকা ঘুস নিয়ে কাজ না করার প্রতিবাদ করায় এক সেবাগ্রহীতাকে খুন করার হুমকিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রের তথ্যমতে জানা যায়, উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা (সহকারী তহশিলদার) শিমুল পাইন শান্তার বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরকারি খাস জমির দাখিলা প্রদানসহ ঘুস দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।
জানা গেছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২৮৪৩২৩ নম্বর দাখিলার মাধ্যমে দুমকি মৌজার ৪৬২ নম্বর খতিয়ানের রেকর্ডিও মালিক মধুর নাথ ও বিলাস মনি দাসীর ০.২৭ একর পরিত্যক্ত জমির বিপরীতে জসিম উদ্দিন গংদের দাখিলা প্রদান ও এক জেলে পরিবার পারভীন বেগমের কাছ থেকে ১ হাজার ২০ টাকার দাখিলায় ৫ হাজার টাকা নেন শিমুল পাইন শান্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-ইমরান ভূমি অফিস পরিদর্শনে গিয়ে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি (শিমুল পাইন শান্তা) কোনো সদুত্তর না দিয়ে বরং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন! এছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি শোকজও রয়েছে।
দুমকির উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-ইমরান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সঙ্গে সঙ্গেই জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছি।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা খলিলুর রহমান মৃধার স্ত্রী পারভীন বেগম নামের একজন বলেন, আমার এক হাজার ২০ টাকার দাখিলায় ৭ হাজার টাকা দাবি করেন শিমুল পাইন শান্তা। পরিশেষে ধারদেনা করে ৫ হাজার টাকা দিয়ে দাখিলা কাটানো লাগছে। এ বিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
লক্ষাধিক টাকা ঘুস দিয়েও কাজ না করে দেওয়ায় মাসুম মৃধা নামের এক ভুক্তভোগী জানান, ইতোমধ্যে আমার কাছ থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা নিয়েছেন সহকারী তহশিলদার শিমুল পাইন শান্তা। টাকা নিয়ে আমার কেসটি খারিজ করে দিয়েছেন- এখন আমি পথে পথে ঘুরছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী তহশিলদার শিমুল পাইন শান্তা বলেন, পারভীন বেগমের দাখিলায় এক হাজার বিশ টাকাই নেওয়া হয়েছে বাড়তি কোনো অর্থ নেওয়া হয়নি।
দুই লাখ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, একদম মিথ্যা অভিযোগ এটা। তিনি যদি টাকা দেওয়ার কোনো প্রমাণ না দিতে পারেন তাহলে তাকে আমি একেবারেই খুন করে ফেলব!
ইউনিয়ন তহশিলদার মো. সেলিম হোসেন বলেন, ভুলত্রুটি নিয়েই মানুষ। তবে তিনি কারো কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নিয়েছেন কি-না আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি মাত্রই শুনলাম; তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।