বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে করোনা টিকা গ্রহনে দিতে হয় টাকা
তুহিন খন্দকারঃ ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভ্যাকসিন গ্রহন করতে আসা সাধারন মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য ৪৭১৪৫ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের ১ম ডোজ গ্রহণ করেছে। পর্যায়ক্রমে সবাই ভ্যাকসিন এর আওতায় আসবেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কিছুদিন ধরে করোনা এখানে ভ্যাকসিন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সকালে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সাধারন সম্পাদক হোসেন হাওলাদার ২য় ডোজ ভ্যাকসিন ও আরেক শিক্ষক পারভেজ করোনা ১ম ডোজ ভেকসিন গ্রহন করতে সকাল ১১ ঘটিকায় বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।
ওই সময় ইমন ও বাপ্পি নামের দুইজন সেচ্ছাসেবী করোনা টিকা রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ব্ল্যাঙ্ক ফটোকপি কাগজে নাম তুলতে ভেকসিন নিতে আসা শিক্ষকদের কাছে জনপ্রতি ৫০ টাকা হারে দাবি করেন। ১ হাজার টাকার ভাংতি না দিতে পারায় তাদের নামের রেজিস্ট্রেশন কার্ডে ফটোকপি কাগজ ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় দুই শিক্ষক ও সেচ্ছাসেবীদের সাথে হট্টগোল শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমান সাদি ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত সেচ্চাসেবী ইমন ও বাপ্পির কাছ থেকে বেশকিছু রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ব্ল্যাঙ্ক ফটোকপি কাগজ উদ্ধার করেন ও শিক্ষককে তার কক্ষে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ওই সময় অভিযুক্ত সেচ্ছাসেবীরা পালিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় শিক্ষক পারভেজ জানান, আমাদের মত সচেতন ব্যক্তি টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে এটা খুবই দুঃখজনক। ৫০ টাকা করে আমরা দুইজনে ১ শত টাকা নিতে ১ হাজার টাকার একটি নোট দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাংতি ১ শত টাকা দিতে না পারায় ইমন ও বাপ্পির দেওয়া আমাদের নামের রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি কাগজ ছিনিয়ে নেয়। তিনি আরো জানান, করোনা গ্রহণ করতে আসা প্রত্যেকের কাছ থেকেই ৫০ টাকা করে গ্রহণ করছে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবীগন। এতদিন কেন কর্তৃপক্ষ এর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তা সাধারণ মানুষের কাছে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএস) ডা: তপতি চৌধুরী জানান, টাকা চাওয়ার এই ঘটনাটি আমি শুনেছি, তবে এর আগে এধরনের অভিযোগ কেউ করেনি। যে ছেলেটি এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে রেড ক্রিসেন্ট সেচ্ছাসেবী হিসেবে ছিলেন, তাকে হাসপাতালে আসতে নিষেধ করেছি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা টিকা প্রদানের স্বেচ্ছাসেবী টিম লিডার নাইন জানান, স্বেচ্ছাসেবী জনবল কম থাকায় বাপ্পি নামের একজন ছেলে এনেছি। আমি উপস্থিত না থাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, এর কয়েক মাস পুর্বে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টিকার কোন ডোজ শরীরে গ্রহণ না করেও অনেকেই পেয়েছে টিকার ডোজ সম্পন্ন হওয়া সার্টিফিকেট।
এমন অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসান নাগর ইউপি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (সিএসসিপি) আসমা’র বিরুদ্ধে। সকল তথ্য উপাত্য উপস্থিত করা হলে তখনও ওই ঘটনাকে স্বাভাবিক ভাবেই দেখছিলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তপতি চৌধুরী।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে এসকল জালিয়াতির বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে এটি এক সময় মহামারী আকার ধারণ করবে বলে সচেতন নাগরিকগন মনে করেন।