অবশেষে জেলের খাঁচায় পতেঙ্গার ইয়াবা সম্রাট
অপরাধ প্রতিবেদক : নৌকার মাঝি থেকে শত কোটি টাকার মালিক শিরোনামের সম্প্রতি গণমাধ্যমে চট্টগ্রামের ইয়াবা সম্রাট নুরুল আফসার এর বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রচার করে। অবশেষে সে নুরুল আবসার আদালতের নির্দেশেে একটি মামলায়় জেলার খাঁচায় বন্দী।
পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিল নুরুল আবছার নামে এক মাদক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় দুদক অভিযোগকারী আবছারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। শেষমেশ এ মামলায় কারাগারে যেতে হল তাকে।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নুরুল আবছার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে চট্টগ্রাম মহানগর বিশেষ দায়রা জজ আদালত শেখ আশফাকুর রহমান তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অভিযুক্ত নুরুল আবছার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার দক্ষিণপাড়া ‘কোনার দোকান’ নাগর আলীর বাড়ির বদিউল আলমের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু।
তিনি বলেন, ‘দুদকে পুলিশ সদস্য ও তার বিরুদ্ধে এক মামলার স্বাক্ষীদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার অপরাধে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মো. নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে দায়ের করে দুদক। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগে জামিন আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দেওয়া হয়। মঙ্গলবার আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবারও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আবছার। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নিদের্শ দেন আদালত।
২০১৯ সালের ২৫ মার্চ ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি ও ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনে পতেঙ্গা থানার সাবেক ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন নুরুল আবছার। মামলায় আসামি করা হয় পতেঙ্গা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভুঁইয়া, সেকেন্ড অফিসার প্রণয়, এএসআই তরুণ কান্তি শর্মা, এসআই আবদুল মোমিন, পতেঙ্গা থানার সাবেক এএসআই কামরুজ্জামান, এএসআই মিহির, ইলিয়াস, জসিম ও নুরুল হুদা।
মামলায় অভিযোগ আনা হয় পতেঙ্গা থানার সাবেক ওসিসহ আসামিরা তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা ঘুঘ দাবি করেন এবং ১৫ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন। এছাড়া বাকি ১৫ লাখ টাকা দিতে আসামিকে চাপ প্রয়োগ করে। আরও অভিযোগ করা হয় নুরুল আবছারের শ্যালেকের মোবাইল ফোনে কল করে টাকা দাবি করেন পতেঙ্গা থানার এএসআই তরুণ কান্তি শর্মা।
তবে আদালত বিষয়টি দুদককে অনুসন্ধান করতে দিলে দুদক অনুসন্ধান করে দেখেন মামলায় যার নম্বর দেওয়া হয়েছে সেটি মিথ্যা। এছাড়া মামলা যাদের স্বাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে তাদের সন্ধানও পাওয়া যায়নি। এছাড়া নুরুল আবছারের কাছ থেকে পুলিশের ঘুষ নেওয়া ও ঘুষ দাবির বিষয়টি সত্য নয়। তদন্তে সবকিছু মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপসহকারী পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে মো. নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে ২০০৪ এর ২৮ (গ) ধারায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।