আদম -৯ শাহানা সিরাজী
হাওয়া নূপুর পেলো কোথায়?
এমন ঝুমুর তাল তুলেছে যে নেইল পলিশ পরা নখগুলো পাকা জামের মতো আদমের তৃষ্ণা জাগায়!
স্মিত হেসে কোমরের বিছায় হাত রাখে
হাওয়া চমকে ওঠে বৈশাখী বিজলীর মতো
আদম ঝলসে যায়,আহা নন্দিনী থামলে কেন?
চাঁদের আলোর মতো নরম দেহ সাপের মতো পেঁচানো
আদম অনুভব করে হাওয়ার নতুন ব্যঞ্জনা
দুষ্টু হাতে দীঘল বিনুনি খুলে দিয়ে বলে-
ঈশ্বরের কাছে শোকর, আমার জান্নাত তুমি!
হাওয়ার চপল ঠোঁটে মেঘের প্রস্রবণ
ভাষা নীরব;অস্ফুটে বলে এ আদম বদলে যাবে ক্ষণ পরে-
হাওয়া হারিয়ে যায় গহীন আঁধারে। ভেসে ওঠে তারই গর্ভজাত ক্লোন।
আদম লুটিয়ে পড়ে, একী অপরূপা রোদের কন্যা পুড়ে যাচ্ছি যে!
ঈশ্বর প্রমাদ গুণে-
আদমের এ কী করুণ হাল!
আদম পাতার বাঁশি বাজায়-
পিরিতি কাঁঠালের আঠা…
অন্তরালে হাওয়ার চুড়িতে বাজে –
কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি।
অসহিষ্ণু ডাক চারদিক হতে হাওয়ার ভূগোলকে রাতারাতি পালটে দেয়
এখন সে একলা পড়ে থাকা ঘরটিকে একাই সাফ করে
একাই সাজায়
একাই বাজায়
একাই গায়
তারার ঝিলিক থেকে থেকে তাকে পথ দেখায়
আদম হিতাহিত জ্ঞান শূন্য। যেখানেই যাচ্ছে হাওয়ার ক্লোন।ক্লোনের ক্লোন, তারপরের ক্লোন। জমিন জুড়েই কেবল ফল আর ফল,বৃক্ষ আর বৃক্ষ!
আদমের ঠোঁটে এখন চুরুট,টেবিলে স্যাম্পেইন
আদম টালমাটাল –
ঈশ্বরের কথা বেমালুম ভুলে যায়
ঈশ্বর দেখে আর হাসে,হাসে আর দেখে। আদম কী কী করে!
আদমের চোখে আগুন ধরে যায়
বুক পুড়ে ছাই
আমাজানের অগ্নি তার চিবুক পুড়িয়ে দেয়
আয়ন্য দেখে… কে তুমি?
হাওয়া মাঝ রাতে উঠে জিয়লমাছ কাটে,চচ্চরি রাঁধে
আদম চেটে পুটে খেয়ে বলে
এতোদিন কোথায় ছিলে?
পশমী আঁচলে মুখ মোছে
চোখে আটলান্টিক
দিন শেষে সবাই একা…
আদম ততোধিক গভীরতায় আচ্ছন্ন
ঈশ্বরের চরণে মাথা খুঁড়ে বলে
আর কিছু নয়, বার বার বহুবার,হাওয়াকেই চাই…
শাহানা সিরাজী
ইন্সট্রাক্টর (সাধারণ)
পিটিআই মুন্সিগঞ্জ
কবি প্রাবন্ধিক কথা সাহিত্যিক।