মার্কিন সামরিক বিমানে জন্ম নেওয়া আফগান শিশুর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন!
আন্তর্জাতিক প্রতিবেদকঃ আফগানিস্তান থেকে পালানোর পথে এক নারী যুক্তরাষ্ট্রের এক উদ্ধারকারী সামরিক বিমানে সন্তান প্রসব করেছেন। এই আফগান শিশুর নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ঐ আফগান প্রসূতি তার পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশেষ ফ্লাইটে কাবুল থেকে কাতার হয়ে জার্মানির রামস্টিন বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। বিমানেই তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তার পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে পড়লে বিমানটি অবতরণের পর রামস্টিন বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক চিকিৎসা কর্মীরা ঐ নারীকে সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন। এরপর মা ও নবজাতক কন্যা শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুই জনেই সুস্থ রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
এদিকে আকাশে জন্ম নেওয়া ঐ শিশুর নাগরিকত্ব কী হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, শিশুটি যেহেতু মার্কিন পতাকাবাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করা সামরিক বিমানে জন্মগ্রহণ করেছে সেজন্য তার মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। আরেক পক্ষ বলছেন, যেহেতু বিমানটি জার্মানিতে অবতরণের পর শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তাই জার্মান নাগরিকত্বই তার প্রাপ্য।
এ ব্যাপারে এভিয়েশন বিষয়ক এক পত্রিকার নিবন্ধে সামনার হাল লিখেছেন, বিমানপথে জন্ম নেওয়া শিশুর নাগরিকত্বের বিষয়টি একটু জটিল। তিনি লিখেছেন, স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী, শিশুর নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তার মায়ের এবং বাবার নাগরিকত্ব অনুযায়ী, যাকে বলে ‘জুস স্যাংগুইনিস’ (রক্তের অধিকার)। কিন্তু কোনো কোনো দেশ তার সীমানার মধ্যে শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়।
যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে এই নিয়ম আছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যানুয়াল অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগলিক সীমানার বাইরে যে কোনো স্থান যেমন দূতাবাস, কনসুলেট, সামরিক বিমান কিংবা ঘাঁটি ইত্যাদিতে জন্ম নিলেও কোনো শিশু মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকারী হবে না, যদি না তার পিতামাতার অন্তত একজনের মার্কিন নাগরিকত্ব থাকে।
তবে এই ম্যানুয়াল অনুযায়ী, আমেরিকার সীমান্তের ভেতরে ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে কোনো শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে। একে বলে ‘জুস সলি’ বা ভূমির অধিকার। কিন্তু অন্যান্য দেশে, যেমন জার্মানিতে, এই অধিকার থাকে না। সেই দেশের নাগরিকত্ব পেতে হলে পিতা-মাতার অন্তত একজনের জার্মান নাগরিকত্ব থাকতে হবে এবং অন্যান্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।