শ্রদ্ধেয় বাবার মৃত্যুবার্ষিকী – মাইনুল হোসেন বিপ্লব
শ্রদ্ধেয় বাবার মৃত্যুবার্ষিকী আজ। যাকে হারিয়েছি জন্মের ছয় মাস পূর্বে। বাবাকে নিয়ে লেখার মত কোন স্মৃতি আমার নেই। তবে মুরুব্বীদের কাছে শুনেছি বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, একজন সৎ নিষ্ঠাবান সাহসী পরিশ্রমী ব্যক্তি ছিলেন। পেশাগত জীবনের শুরুতে পুলিশে খেলোয়াড় হিসেবে চাকরি করেছেন, পরবর্তীতে ব্যবসা করেছেন। আজকের এইদিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। প্রথম জানাজা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মহান এই নেতা এয়ারপোর্টে উপস্থিত হয়ে হেলিকপ্টার এ করে বাবার লাশ ভোলাতে পাঠিয়েছিলেন। আমাদের পরিবারের সকলের রক্ত দিয়েও আমরা জাতির পিতার ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবোনা।জানাজায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্নেহাস্পদ রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ সহ উপস্থিত সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তার প্রানপ্রিয় বড় ভাই আমার বাবা।
মায়ের স্নেহ মমতায় শিশুকাল গ্রামে কাটলেও আনুমানিক ছয় সাত বছর থেকেই আমার লালন পালন শুরু হয়েছিল আমার বাবার আদরের কলিজার টুকরা ছোট ভাই আমাদের পরিবারের হীরা মানিক জনাব তোফায়েল আহমেদের ঢাকার বাসায়। সম্পর্কের বিষয়গুলো তেমন বুঝিনা তখন। কাকুকে আব্বু বলে এবং কাকীমা কে আম্মু বলে ডাকা শুরু করলাম। শুরু হলো আমাকে পরম যত্নে আদর স্নেহে লালন পালন।আজকের এইদিনে অবাক হয়ে ভাবি শুধু আমি নই তাদের একমাত্র আদরের কন্যা সহ আমাদের সকল চাচাতো এবং ফুফাতো ভাইবোনদেরকে একই ভাবে আদর স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছেন। কি ধৈর্য, কি মহব্বত, কি মমতা,কি প্রেম। কোনোদিন বাবা মায়ের অভাব বুঝতে পারিনি। ছোট বিপ্লবের সকল আবদার সামর্থের মধ্যে তারা পূরণ করেছিলেন।আজ ও আমাদের কারো কোন সমস্যা হলে তাদের অস্থিরতা আমি কাছে থেকে উপলদ্ধি করি। এরই নাম ভালোবাসা, এরই নাম দায়িত্ববোধ, এরই নাম অভিভাবকত্ব।
জানিনা তাদের এই ভালোবাসা, ধৈর্য ও পরিশ্রমের মূল্য আমরা কিভাবে শোধ করব।আমার এই জীবন আমি আমার শ্রদ্ধেয় আব্বু আম্মুর জন্য উৎসর্গ করেছি। জানিনা কতটুকু নিষ্ঠার সাথে এই দায়িত্ব পালন করতে পারছি। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে একটাই ফরিয়াদ তিনি যেন আমৃত্যু আমার অভিভাবক, আমার আব্বু আম্মুকে খেদমত করার তৌফিক দান করেন, আমিন।
আপনারা আমার দাদা-দাদু, বাবা-মা, মেঝো চাচা, টুটুল ভাই- বিনু আপা সহ আমাদের যেসকল আত্মীয়স্বজন দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন তাদের সকলের জন্য দোয়া করবেন। হে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনি তাদের সকলকে জান্নাতবাসী করুন, আমিন।
মাইনুল হোসেন বিপ্লব
সমাজ সেবক ও দানবীর এবং
ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।