কিপটের টুপি বানানোর গল্প – মোঃ আখতারুজ্জামান

PicsArt_07-09-11.59.32.jpg

কিপটের টুপি বানানোর গল্প – মোঃ আখতারুজ্জামান

এক হাড় কিপটে একটুখানী কাপড় কিনে দর্জির কাছে গিয়ে বললো একটা টুপি বানিয়ে দিতে। দর্জি রাজি হলে কিপটে চলে গিয়েও আবার ফিরে এল ভাবলো একই কাপড় দিয়ে যদি ২টি টুপি বানাতে পারে কিনা? দর্জিকে বললো দুইটা টুপি বানিয়ে দিতে। দর্জি রাজি হলো। কিপটে হাসি মন নিয়ে ফিরে গেল। কিন্তু আবার তার মনে হলো ৩টি টুপি বানালে হয়। দর্জিকে বললো তিনটি বানাতে। দর্জি আবারও সহজে রাজি হলে কিপটে ক্রমান্বয়ে ৪টি, ৫টি টুপি বানাতে বললো। যথা সময়ে টুপি ডেলিভারী নিয়ে দেখে টুপিগুলোর সাইজ এত ছোট যে মাথায় দেয়া যায় না। কিপটে খেপে গিয়ে দর্জিকে ধরলে দর্জি সহজ জবাব দেয় একটা টুপির কাপড় দিয়ে ৫ টুপি বানালে তা মাথায় দেয়া যায় না।

উপজেলা পর্যায়ে গরীবদের জন্য বাড়ী বানানো হয়েছে। কত কম দামে বানানো যায় মনে হয় তার প্রতিযোগিতা হয়েছে- কর্তৃপক্ষকে তেল মারার, খুশি করার।

দেশে এলজিইডি এর এস্টিমেট আছে এখানে তা ফলো করা হয় নাই। পিডাব্লিউডি এর এস্টিমেট আছে সেটাও ফলো করা হয় নাই। প্রাইভেট কোম্পানী পার স্কোয়ার ফুট ১০ হাজার টাকা নেয়, সেটাতো কল্পনা করা যায় না। এখানে সম্ভবত দুইটি ঘর দেয়া হয়েছে তার খরচ হয়েছে এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মাত্র। পাইলিং করা হয় নাই, মাটি কমপ্যাক্ট করা হয় নাই, লিংকার বা লিনটেন করা হয় নাই, লোহা বা রড ব্যবহার নাই। ঠিকাদার লাভ ছাড়া কাজ করবে ভাবা যায়? তাড়া হুড়ার তো অন্ত ছিল না। এখন সরকারী কিছু অনভিঞ্জ কর্মকর্তার চাকুরী নিয়ে জটিলতা তৈরী হবে. কিছু জনপ্রতিনিধির মান সম্মান নিয়ে টানাটানি হবে। মিডিয়া সরব হবে।

এটার জন্য সাজা হতে পারে যিনি এই এস্টিমেট করেছে কিংবা তৈল মর্দন করে কর্তৃপক্ষকে খুশি করার জন্য এগুলো করেছে। কম দামে ভাল জিনিস পাওয়ার চিন্তা অতি উর্বর মস্তিষ্ক হতেই আসে? কথায় বলে সস্তার বারো অবস্থা।

আমরা যদি ৫ লাখ টাকা দিয়ে দুইটি করে ঘর দিতাম তাহলে কি মহা ভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত। টাকাটাতো আমাদের দেশের গরীবরাই পেত। আমরা তেলা মাথায় তেল দিতে অত্যন্ত সিদ্ধহস্ত। রা্জউক পূর্বাচলে বা উত্তরায় যে প্লট ১০ লাখ টাকায় বরাদ্দ দিয়েছে তার বতর্মান বাজার মূল্য তিন থেকে ১০ কোটি টাকা। একজন মানুষ ঘুম থেকে উঠে দেখে সে অনেক বড়লোক। ধনীদেরকে যদি রাতারাতি আরও বড়লোক বানানো যায় তাহলে গরীবদেরকে ৫ লাখ টাকার বাড়ী দিতে কার্পন্য কেন?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার কোটি টাকা ব্যবসায়ী সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে প্রনোদনা দিচ্ছেন। তার কিছু অংশ গরীবরা পেতে পারেনই। মুজিবর্ষ উপলক্ষে এখনও সময় নিয়ে কিছু বাড়ী বেশী দামে বানিয়ে বিতরন করা যেতে পারে। শুধু পাওয়াটাই বড় না তারা যেন বাকী জীবনটা ঐ বাড়ীতে বসবাস করতে পারেন। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। সত্যিকার অর্থে গরীবরা উপকৃত হবে।

মোঃ আখতারুজ্জামান
সরকারি কর্মকর্তা ও লেখক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top