নৌবাহিনীতে ৬৫ নবীন কর্মকর্তার কমিশন লাভ

নৌবাহিনীতে ৬৫ নবীন কর্মকর্তার কমিশন লাভ

বিশেষ রিপোর্টঃ নৌবাহিনীতে ৬৫ নবীন কর্মকর্তার কমিশন লাভ করেছেন। নৌ বাহিনীতে ৬৫ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেছেন। নবীন এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে ২০১৮/বি ব্যাচের ৪৭ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২১/এ ব্যাচের ১৮ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার। এদের মধ্যে ৯ জন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন।

চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে রোববার (২৭ জুন) নবীন কর্মকর্তাদের গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণ শেষে এসব নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশিপম্যান ২০১৮/বি ব্যাচের সাইফ খান বিজন সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেছেন।

এছাড়া মিডশিপম্যান মো. আবুল কাশেম প্রশিক্ষণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণ পদক’ ও ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২১/এ ব্যাচ থেকে এ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট মো. মেহেদী হাসান তুহিন শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণ পদক’ লাভ করেন। পরে নবীন কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিভাবে শপথ গ্রহণ করেন। তাদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয়।

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, তোমরা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে। ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।

তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর গর্বিত সদস্য হিসেবে দেশপ্রেম ও শৃঙ্খলাবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।

পরিশেষে নৌপ্রধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নবীন কর্মকর্তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করার পরামর্শ দেন।

নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে এরইমধ্যে বর্তমান সরকারের গৃহীত বহুমুখী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে নৌপ্রধান বলেন, গত প্রায় এক দশকে নৌবহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফটসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে। সম্প্রতি নতুন ছয়টি যুদ্ধজাহাজ নৌবহরে কমিশনিং করা হয়েছে। একই সঙ্গে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও উন্নততর জাহাজ এবং আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন ঘাঁটিসমূহের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড ও শীপইয়ার্ডগুলোর আধুনিকায়নের কাজও চলমান রয়েছে।

বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা উল্লেখ করে নৌ বাহিনী প্রধান বলেন, বর্তমান সরকারের সময়োচিত বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে এখন পর্যন্ত অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি নৌসদস্যদের জন্য টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দুর্যোগময় এ পরিস্থিতির মধ্যে নবীন কর্মকর্তাদের তাদের মনোবল অক্ষুণ্ন রেখে যে উন্নত প্রশিক্ষণ ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে নৌপ্রধান তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। নৌপ্রধান একই সঙ্গে কঠোর এ প্রশিক্ষণ প্রদানে যেসব কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও নৌসদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা ও সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top