ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জনকল্যাণমূলক সর্বাত্মক কার্যক্রম অব্যাহত – আতিকুল ইসলাম
নগর প্রতিবেদকঃ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জনকল্যাণমূলক সর্বাত্মক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আজ ০২ মে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ রোজ- রবিবার দুপুরে বিদ্যমান কোভিড-১৯ ও লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোঃ জাহিদ মালেক এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরী ভার্চুয়াল মিটিংয়ে সংযুক্ত হয়ে ডিএনসিসির মেয়র একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য ৭২ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরের প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খাদ্যশস্যও বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ওয়ার্ড প্রতি ৫০০ জন অসহায়-হতদরিদ্র মানুষকে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণের জন্য ৭২ জন কাউন্সিলরের প্রত্যেককে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা করে মোট ১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিএনসিসি এলাকার ১ হাজার ৯ শত ৭ টি মসজিদের প্রত্যেক ইমামকে ২ হাজার টাকা ও প্রত্যেক মুয়াজ্জিনকে ১ হাজার টাকা করে মোট ৫৭ লক্ষ ২১ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ৩৩৩ ও হটলাইনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তার জন্য ফোন করা অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য ১০ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, খাদ্য সহায়তা বাবদ দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৭ লক্ষ টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। শিশু খাদ্য ক্রয়পূর্বক বিতরণের জন্য একই মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়, ক্রয় প্রক্রিয়া শেষে অনতিবিলম্বে তা বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক, ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজ, গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও উন্মুক্ত স্থানে অদ্যাবধি মোট ৩৯ লক্ষ লিটার ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হয়েছে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের ৭২ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টি মাস্ক, ১ লক্ষ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১ লক্ষ ৫০ হাজার টি সাবান, ৫০ হাজার টি তিন স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক, ২ হাজার বোতল লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মহাখালীতে অবস্থিত “ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল” বর্তমানে দেশের সর্ববৃহৎ করোনা হাসপাতাল। আগামীকাল আমার পক্ষ থেকে হাসপাতালটিতে ২টি এ্যাম্বুলেন্স ও ১টি লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যান হস্তান্তর করা হবে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নগরবাসীকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ডিএনসিসির আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারি প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত ৫টি নগর মাতৃসদনে ৯ এপ্রিল ২০২১ থেকে টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক বার্তা সম্বলিত ৫০ হাজার স্টিকার বিতরণ করা হয়েছে এবং জনসচেতনতামূলক বার্তা মাইকিং করে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও লকডাইন বাস্তবায়নে এবং কালোবাজারি, মজুদদারী ও অহেতুক দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে ডিএনসিসি এলাকার কয়েকটি কাঁচাবাজার পার্শ্ববর্তী সুবিধাজনক মাঠ বা উন্মুক্ত জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ প্রদানের লক্ষ্যে ওয়াসা থেকে হস্তান্তরিত খাল ও স্টর্ম স্যুয়ারেজ লাইন পরিষ্কার করা হচ্ছে। করোনা মহামারীকালে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি খাল ও জলাশয় পরিষ্কার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে এডিশ মশাজনিত ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করার লক্ষ্যে অগ্রিম বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
ভার্চুয়াল মিটিংয়ে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রবৃন্দ ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডঃ আহমদ কায়কাউস, সিনিয়র সচিবগণ, পুলিশ মহাপরিদর্শক এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ অংশগ্রহণ করেন।