কার্টুনিস্ট কিশোরের জামিন

কার্টুনিস্ট কিশোরের জামিন

বিশেষ প্রতিবেদকঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (আইসিটি) মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৩ মার্চ) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

এরআগে, ২০২০ সালের ৫ মে র‌্যাব-৩, সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মিনহাজসহ ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা করেন। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই রাতে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কার্টুনিস্ট কবির কিশোর ও লেখম মুশতাক আহমেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩। পরে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা র‌্যাবের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। গত ১৩ জানুয়ারি এ মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদকে (কারাগারে সদ্য প্রয়াত) অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা থানা পুলিশ। যেখানে জুলকারনাইন খান ওরফে সামিসহ অন্য আট জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।

অব্যাহতির সুপারিশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, নেত্র নিউজের সম্পাদক ও সুইডেন প্রবাসী তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরি প্রবাসী জুলকারনাইন শায়ের খান ওরফে সামি, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম ও ফিলিপ শুমাখার।

‘মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়টি হলফনামা আকারে জানাতে বললেন হাইকোর্ট’

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন মামলাটি অধিকতর তদন্তে সিটিটিসিকে নির্দেশ দেন।

এদিকে মামলার আসামি লেখক মুশতাক আহমেদ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে মারা যান। রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে তাকে মৃত অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. শরীফ জানান। এ ঘটনায় প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানায়। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করার অভিযোগ তুলে ও লেখক মুশতাকের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের অ্যাডমিন শায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ সমাচার, স্বপন ওয়াহিদ, মুস্তাক আহমেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচ জন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছে।

আহমেদ কবীর কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’ এর প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, ‘তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইলফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনা ভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগে বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top