গত ২ বছরে উন্নয়নের জন্য তালিকা করে বহু প্রকল্প নিয়েছি – প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক
বিশেষ প্রতিনিধিঃ আমি দায়িত্ব নেয়ার পরে গত ২ বছরে সদর উপজেলার রাস্তাঘাট, স্কুল, মাদ্রাসা, মাঠ, পুকুর, মসজিদের উন্নয়নের জন্য তালিকা করে বহু প্রকল্প নিয়েছি। স্থানীয় সরকার যখন এগুলোর অ্যাপ্রুভাল দিয়ে দিবে তখন আমরা কাজগুলো শুরু করবো। আমি এমপি হলাম মাত্র ২ বছর। কিন্তু আমার প্রশ্ন? আমার আগেও তো অনেকে সংসদ সদস্য ছিলো, যারমধ্যে একজনই ৪ বার অর্থাৎ ২০ বছর সংসদ সদস্য ছিলো। কিন্তু তিনি আপনাদের জন্য অর্থাৎ সদর উপজেলার জন্য স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট কিছু বানিয়েছে! কিছুই বানায়নি। বানালে তো সদর উপজেলার এই অবস্থা হয়না। হিরণ সাহেব মেয়র থাকাকালীন শহরটাকে সুন্দর করতে পেরেছেন। কিন্তু সংসদ সদস্য তো সদর উপজেলার কোন উন্নয়ন করেননি।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্পে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক-এমপি এসব কথা বলেন।
নিজ সংসদীয় এলাকায় নদীভাঙ্গন রোধে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক,এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে আমাকে বরিশাল সদর আসন থেকে মনোনায়ন দেয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। আমি দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ, নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের দুঃখ কষ্টগুলোর বিষয়ে আমি জানি। সেজন্য আমি বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াই। এর ভেতরেও প্রতি শুক্র ও শনিবার আমি বরিশালে আসি। কারণ আমি চাই আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। আমার সাথে দেখা করার জন্য ঢাকায় কারো যাওয়ার দরকার নেই।আমি আপনাদের জন্য প্রতি সপ্তাহে আসবো। কেই বলতে পারবে না শুক্র এবং শনিবার দেখা করতে এসে পারেননি কিংবা ফিরে গেছেন, আমি সকলের সাথেই কথা বলি। কারণ আমি মনেকরি আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, এখন আপনাদেরকে দেখভাল করার দায়িত্ব আমার।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলেই কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনারবাংলা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন।পদ্মা সেতুর কাজ আগামী বছর শেষ হয়ে যাবে। তখন সেটি দিয়ে গাড়ি-ট্রেন চলবে। বরিশালের মানুষ ট্রেনে চড়বে। আবার সড়কপথে ৩ সাড়ে ৩ ঘন্টার মধ্যে রাজধানীতে যেতে পারবে বরিশালের মানুষ। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। আগে আমরা ভিক্ষুকের দেশ ছিলাম, এখন মধ্যম আয়ের দেশে চলে এসেছি। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উচু করে দাড়াতে পারবো। দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকতে পারে সে কথাই সবসময় প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন।
করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, যে ভ্যাকসিন বের হয়েছে, তারমধ্যে ২০ লাখ গত বুধবার দেশে পৌঁছেছে। আরো ৫০ লাখ ফ্রেব্রুয়ারির ৬ তারিখে পৌছে যাবে। এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে বানানো হয়নি, এটা অক্সফোর্ডের। পৃথিবীর সব জায়গায় এই ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। এটা নিলে দোষের কিছু নেই, আপনি সুরক্ষিত থাকবেন। সবথেকে বড় কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদেরকে সুস্থ-সবল রাখার জন্য টাকার দিকে চিন্তা করেননি, তিনি প্রথম থেকেই নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশে ভ্যাকসিন প্রথম দিকেই আসতে হবে।
তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ হিসেবে আপনাদের মনের জোর অনেক। তারপরও আপনাদের অনুরোধ সংক্রমন রোধে ও নিজে সুস্থ থাকতে মাস্কটা ব্যবহার করুন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে উন্নয়ন হচ্ছে, তার সুফল পেতে হলে, বেঁচে থাকতে হবে। এজন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, ভ্যাকসিন দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমি হারাম খাই না। আমার মন্ত্রনালয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ হয় কিন্তু কেউ বলতে পারবে না আমাকে কারো টাকা দিতে হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আমি মৃত্যুবরণ করলে সাড়ে ৩ হাত মাটির মধ্যে থাকতে হবে। সেটিকে আমি সুরক্ষিত রাখতে চাই। আমার মৃত্যু হলে মন্ত্রী হিসেবে ৫ হাত কবর করেও কেউ দিতে পারবেন না। এজন্যই আমি হারাম-টারাম আমি খাইতে চাইনা এবং খাইনা।
জাহিদ ফারুক বলেন, সামনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার ইলেকশন। সদর উপজেলার উন্নয়ন করতে চাইলে আমার মনোনীতদের ভোট দিয়ে বানান। আমি আপনাদের এনশিওর করতে পারি আমাদের মনোনীতদের বিজয়ী করে আনুন, তাদের চুরি করতে দিবো না, তারা কাজ করবে। এতে আপনাদেরই ভালো হবে। আর কেউ খারাপ কাজ করলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জোবায়ের আব্দুল্লাহ জিন্নাহ, চরকাউয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, মহানগর ছাত্রলীগের নেতা মাহাদ, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাবুব।