জাল-জালিয়াতি করে পরিবহন রুটে জবরদস্তি মালিকানা ছিনতাইয়ের অভিযোগ!
নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি ও জবরদস্তি করে পরিবহন রুট ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে মালিক সমিতির এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। কেবল তা’ই নয় ঘটনায় রাজধানীর রমনা ও বংশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ওই ভুক্তভোগী। এছাড়াও লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে। এতো কিছুর পরও কতিপয় অসাধু রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় ও দুষ্ট চক্রের প্রভাবে সুরাহা চেয়ে ভুক্তভোগীকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। তিনি কারো কাছেই সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগী গোলাম ফারুক মানিক (৫৮) চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মূখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে দায়ের করা মামলায় (নং-১১২২) অভিযোগ করেন, মামলার ৬ আসামি, হোসাইন রফিকুল আলম (৫৫), আশরাফুল ইসলাম আশরাফ (৪৮), মামুন মিয়া (৩৫), আল আমীন বুলবুল (৪৮), নূরুল ইসলাম বাচ্চু এবং হাসিবুল হাসান সাগর। উল্লেখ্য সকলেই ‘পরস্পর পরধনলোভী, ঠগ, জাল জালিয়াতীকারী, প্রতারক চক্রের সদস্য বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বাদী দীর্ঘদিন যাবত সদরঘাট ভিক্টরিয়া পার্ক হইতে বাইপাল পর্যন্ত সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচলে জন্য (রুট পারমিট) অনমতি প্রাাপ্ত হইয়া ভিক্টর ক্লাসিক বাস মলিক পরিবহন সমিতির ব্যনারে ভিক্টর ক্লাসিক নামে বাস চালাচল করিয়া আসিতেছেন।
বাদীর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ করার উদ্দেশ্যে কিছুদিন যাবৎ প্রচার করছে যে, তারা একই নামে অর্থাৎ ভিক্টর ক্লাসিক বাস মালিক পরিবহন লি. এই নামে একটি কোম্পানী গঠন করেছে। যার ভিত্তিতে বি.আর.টি.এ হতে রুট পারমিট নিয়ে বাদীর নামে বরাদ্ধ হওয়া একই রুটে একই নামে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করিতেছে।
খোঁজ নিয়ে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে জয়েন্টস্টিক কোম্পনী হতে বাদীর অনুমোদন প্রাপ্ত একই নামে একটি কোম্পানী স্মারক রেজিষ্ট্রেশন করে উক্ত রোড পারমিট নিজেদের বলে দাবি করেন। যাহা কুটকৌশল ও প্রতারণার শামিল।
কথিত কোম্পানীর স্মারক সংঘে অত্র বাদীসহ ৫ জনকে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হিসেবে দেখানো হয়েছে। যাহার সম্পর্কে অত্র মামলার বাদী কোনভাবেই জানতো না।
আরও অভিযোগ রয়েছে, আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে রেজিষ্টেশন ফরম সহ যাবতীয় ফরম এ বাদীর স্বাক্ষর জাল করিয়া জালজালিয়াতির মাধ্যমে জয়েন্টস্টক হইতে কোম্পানীর স্মারক সংঘের কোম্পানীটির রেজিষ্ট্রেশন করে বাদীর নিকট গোপন রাখে। যা দ্বারা বাদীকে মারাত্মক বিপদে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
চলতি বছরের গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাদি গোলাম ফারুক মানিক অভিযুক্ত হোসাইন রফিকুল আলমের কাছে স্বাক্ষর জালজালিয়াতির কারন জানতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে বাদীর সাথে মামলার অভিযুক্ত আশরাফের সাথে তর্ক বিতর্ক হলে উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত রফিকুল বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়।
এম আর এ মোতালেব বলেন, আকাশ পরিবহনের রোড পারমিট ছিল আমার নামে আমি হঠাৎ করে শারীরিক অসুস্থ হয়ে পরলে আমার সরলতার সুজোগ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ভয় ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক আমার নামে রোড পারমিটটি লিখে নেয় আশরাফ।
আরেক ভুক্তভোগী মোঃ বাচ্চু বলেন আমার সদরঘাট ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে বাড্ডা আব্দুল্লাহ পুর হয়ে বাইপাইল প্রর্যন্ত তিনটি গাড়ী ভিক্টোরিয়া ক্লাসিক এই রোডে চলে আমার। শুপ্রাভাত পরিবহনে আমার গাড়ী থাকাকালিন শুপ্রাভাতের রোড পারমিট ছিল আশরাফ এর নামে। তখন প্রতিদিন অবিলের কথা বলে রোডের খরচের নামে ১৪০০’শ টাকা চাঁদা দিতে হতো আশরাফকে। বর্তমানে আমার গাড়ী চলে ভিক্টর ক্লাসিক এর ব্যনারে রোডে চলতে অবিল বাবদ চাঁদা দিতে হয় ৪’শ থেকে ৫ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শর্তে ভিক্টর ক্লাসিকের এক ড্রাইভর জানান, বাসের হেলপার থেকে আশরাফ আজ পরিবহন মালিক সমিতির নেতা সেজে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার চৌধুরীকে সুপ্রাভাত পরিবহনের একটি গাড়ী চাপা দিয়ে হত্যা করার পর সুপ্রাভাতের রোড পারমিট বাতিল করে। তখন সুপ্রভাত ব্যানারে ৪০০’শ গাড়ী চলতো এই রোডে। প্রতিদিন একটি গাড়ী থেকে ১৪০০’শ টাকা অবিল এর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠাতো আশরাফ। পাহাড় সমান অন্যায় ও অপরাধের সাথে জড়িত আশরাফ এখন আরও বেপরোয়া। মোতালেব ও ফারুক মানিকের কাছ থেকে রোড ছিনতাই করে আবার সেই চাদাবাজি শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য অভিযুক্ত আশরাফের গ্রামের বাড়ী ব্রাহ্মনবাড়ীয়াতে নামে বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়, ঢাকাতে ও রয়েছে তার একাধিক ফ্লাট ও প্লট। পরিবহনে চাঁদাবাজি ও অনিয়মের সাথে জড়িত থেকে আশরাফ নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আশরাফের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির, সমিতির কমিটির অন্তর্ভুক্ত থাকার মেয়াদ ২০১৮ সালে মানিকের শেষ হয়। তার পরবর্তীতে আমার কোম্পানীর মাধ্যমে উক্ত রুট পরিচালিত হবে মর্মে সমিতির অনুমতি দেয়। মানিক আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যাচাই বাছাই করলি পরিষ্কার হয়ে যাবে।