পুলিশের ভুলে সাজা খাটছেন নিরপরাধ বৃদ্ধ
জেলা প্রতিনিধিঃ শুধু নামের মিল থাকায় ৮০ বছরের নিরপরাধ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নামে এক বৃদ্ধকে জেল খাটতে হচ্ছে। গলাচিপা শহরের কলেজ পাড়ার বনানী এলাকার ঐ বৃদ্ধকে ৪ অক্টোবর একটি চেক ডিজঅনার মামলায় গলাচিপা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে জেলখানায় পাঠিয়েছে।
গলাচিপা থানা সংলগ্ন সদর রোডের ‘নাহার গার্মেন্টস’র মালিক মো. হাবিবুর রহমান, পিতা-নূর মোহাম্মাদ মাস্টার, মুজিবনগর রোড, গলাচিপা পৌর শহরের বাসিন্দা ২০১২ সালের ৬ আগস্ট ব্র্যাক থেকে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি ব্র্যাকের অনুকূলে উত্তরা ব্যাংক গলাচিপা শাখায় তার নিজস্ব একাউন্টের (হিসাব নম্বর ২২০০) ঋণের সমপরিমাণ অর্থের একটি চেক জমা দেন। কিন্তু তিনি ঋণ যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ জমাকৃত চেকটি ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল ব্যাংকে জমা দিলে তাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। এ ঘটনায় পরে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় পটুয়াখালীর যুগ্ম দায়রা জজ জিন্নাত্ জাহান ঝুনু ২০১৮ সালের ২৫ মার্চ রায় দেন। রায়ে মো. হাবিবুর রহমানকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ঋণের দ্বিগুণ অর্থ অর্থাত্ ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ের দিন ঋণ গ্রহিতা মো.হাবিবুর রহমান আদালতে অনুপস্থিত থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ঐ গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী গলাচিপা থানার উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আল-আমিন শুধু নামের মিল থাকায় বৃদ্ধ হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পটুয়াখালী কারাগারে পাঠায়। সাজাভোগ করা হাবিবুর রহমানের পিতার নাম নূর মোহাম্মাদ পণ্ডিত।
এ ব্যাপারে জেলে থাকা হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আবু সালেহ বলেন, ‘আমার বাবা সদর রোডে কোনো দিন ব্যবসা করেননি আর আমরা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণও গ্রহণ করিনি। পুলিশকে বিষয়টি বলা হয়েছিল কিন্তু তারা শোনেনি।’
গলাচিপা থানার এএসআই আল-আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালত থেকে একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে আমরা তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাই। কিন্তু পরে জানতে পারি তিনি প্রকৃত আসামি নন। বিষয়টি দুঃখজনক এবং আমার ভুল হয়েছে। তবে নিরপরাধ ঐ বৃদ্ধকে জেল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করছি।’
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার প্রকৃত আসামি নুর মোহাম্মদ মাস্টারের ছেলে মো. হাবিবুর রহমানকে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামির নাম ও পিতার নামে মিল থাকায় সরল বিশ্বাসে এএসআই আল-আমিন তাকে গ্রেফতার করে। বিষয়টি আমরা সংশোধন করে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠিয়েছি এবং ঐ বৃদ্ধকে দ্রুত কারামুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ’