ভুয়া পরোয়ানায় কারাগারে; হাইকোর্টের ক্ষোভ
আদালত প্রতিবেদকঃ ভুয়া ওয়ারেন্ট দিয়ে একজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে রেখে দেয়া হলো, কারা কর্তৃপক্ষের কি কেনো দায়-দায়িত্ব নেই?– গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রোগ্রাম অফিসার আওলাদ হোসেনের বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
এরপর এ বিষয়ে রায় দেয়ার জন্যে আগামী বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানি শেষে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠি বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ভুয়া পরোয়ানায় গ্রেফতার হওয়া আওলাদকে আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে হাজির করা হয়। একই সঙ্গে, কারা এসব ভুয়া পরোয়ানার সঙ্গে যুক্ত তা খুঁজে বের করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এছাড়া শেরপুরের পরোয়ানা যাচাই সাপেক্ষে তাকে জামিন দিতে ওই আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিনের পর শেরপুর কারাগার থেকে আওলাদকে মুক্তি দিতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যদি অন্য কোনো পরোয়ানা আসে সেটার সত্যতাও যাচাই করতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে কক্সবাজারের এক মামলায় গত বছরের ৩০ অক্টোবর আওলাদকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেদিন আওলাদকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন চাওয়া হয়। ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আশুলিয়া) জামিন নামঞ্জুর করে নথিপত্র কক্সবাজারের আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন।
কক্সবাজারের আদালতের দেয়া আদেশ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। আদেশ পৌঁছার পর ঢাকা কারাগার থেকে জানানো হয়, নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে রাজশাহীর এক মামলায় (১৩৭/২০১৬) আওলাদকে রাজশাহীর আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আওলাদকে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনাল গত ২৪ নভেম্বর আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা এই ট্রাইব্যুনালের নয়, সার্বিক পর্যালোচনায় ওই মামলায় আওলাদ আসামি নন। তাকে অব্যাহতি ও মুক্তি দেয়া হোক।
এরপর ট্রাইব্যুনালের ওই আদেশ রাজশাহীর কারাগারে পৌঁছে। তখন জানানো হয়, বাগেরহাটের একটি সিআর মামলায় (২৪৫/১৭) আওলাদকে বাগেরহাটে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে আওলাদকে বাগেরহাট আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন চাওয়া হয়।
গত ১ ডিসেম্বর বাগেরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে বলা হয়, হাজিরা পরোয়ানামূলে হাজির আওলাদ এই মামলায় আসামি নন। হাজিরা পরোয়ানাও এই আদালত কর্তৃক ইস্যু করা হয়নি। বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অস্তিত্বহীন স্মারক নম্বর ব্যবহার করে পরোয়ানাটি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। আদালতের ওই আদেশ বাগেরহাট কারাগারে পৌঁছে। তখন জানানো হয়, শেরপুরের একটি মামলায় (সিআর ১৫৯/১৮) আওলাদকে গ্রেফতার দেখানো হয়।