বাল্য বিবাহ – সবাই গেল পালিয়ে, ধরা খেলেন কাজী
জেলা প্রতিনিধিঃ বিয়ের সব আয়োজন শেষ। বর পক্ষের লোকজেনর ভূরিভোজও হয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রির একটু আগে হাজির ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে সবাই পালিয়ে গেলেও ধরা পড়েন কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন খান। তিনি তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজী ও সুজানগর উপজেলা কাজী সমিতির সভাপতি। পরে তাকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পাবনার সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের ফুলালদুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের ফুলালদুলিয়া গ্রামের রায়হান আলীর মেয়ে সুমা খাতুনের (১৫) সঙ্গে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা গ্রামের গোলাম কিবরিয়ার ছেলে মনিরুল ইসলামের বিয়ে ঠিক হয়। কনে সুমী সুজানগর উপজেলার জাহানারা কাঞ্চন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। তার জন্ম সনদ অনুযায়ী বয়স মাত্র ১৫ বছর।
বাল্য বিয়ের এ বিষয়টি গ্রামের কিছু সচেতন মানুষ জানার পর তারা উপজেলা প্রশাসনকে জানান।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রওশন আলী পুলিশ ফোর্স নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় বিয়ে রেজিস্ট্রির আগে মেয়ের বাবার বাড়িতে হাজির হন।
এ সময় তিনি তাৎক্ষণিক বিয়ের সব প্রস্তুতি বন্ধ করে দেন। তাকে দেখে কনে ও তার মা-বাবা এবং বরসহ বরযাত্রীরা পালিয়ে যান। তবে বিয়ের কাজী পালাতে না পারায় পুলিশ তাকে আটক করে।
ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রওশন আলীর আদালত কাজীর কাছে থাকা বিয়ে রেজিস্ট্রির বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে কাজী তার অপরাধ স্বীকার করেন। পরে কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন খানকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুদ্দোজা জানান, সাজাপ্রাপ্ত কাজীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ইউএনও বলেন, ইউনিয়নের কাজী বাল্যবিয়ে পড়ানো অপরাধ জেনেও বিবাহ নিবন্ধন কাজ করছিলেন। সুজানগর উপজেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।