চাচার ধর্ষণেই ভাতিজি অন্তঃসত্ত্বা

চাচার ধর্ষণেই ভাতিজি অন্তঃসত্ত্বা

জেলা প্রতিনিধিঃ ফাঁকা বাড়িতে পরপর তিন দিন চাচার দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে এক কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ মিলেছে ডিএনএ রিপোর্টে।

আলোচিত এই ঘটনায় পাঠানো ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন আজ শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) হাতে পেয়েছেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আখতার হোসেন। তিনি নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভাতিজির গর্ভের সন্তানের ডিএনএ রিপোর্টে চাচার সম্পৃক্ততা মিলেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের হেসিয়ারা গ্রামে। ধর্ষক সোহেল (৪৫) হেসিয়ারা গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। এ ঘটনায় কিশোরী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের উদ্যোগে গত ১৩ জুন কিশোরীর বাবা তার আপন ভাই ধর্ষক সোহেলকে (৪৫) আসামি করে মামলা করেন।

পরদিন ১৪ জুন পুলিশ আসামি ধর্ষক সোহেলকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। ওই কিশোরী তার চাচা সোহেলকে দায়ী করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

গত জুন মাসের শেষ দিকে সিজারের মাধ্যমে ওই কিশোরী মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়। পরে নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যস্থতায় কিশোরীর মেয়ে সন্তানটিকে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে এক নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে দত্তক দেওয়া হয়। সন্তানটিকে দত্তক দেওয়ার শর্ত ছিল, ডিএনএ পরীক্ষাসহ মামলার তদন্তের স্বার্থে যে কোনও সময় সন্তানটিকে হাজির করতে হবে। পরে কিশোরীর সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।

তবে সোহেল নামের এই ধর্ষককে কারাগারে আটকে রাখা গেছে মাত্র এক মাস। সেই ধর্ষক ছেলেকে বাঁচাতে ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার বাবাকে বাড়িছাড়া করার ঘোষণা দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের চেষ্টা করেছিলেন ধর্ষকের বাবা আবদুল মান্নান। চাপ দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ছিলেন ধর্ষকের এক মামা, এক ফুপুসহ মামাতো ভাই। এ পরিস্থিতিতে বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনদের চাপ ও ভিটে ছাড়া করার ভয়ে  কিশোরীর বাবা অসহায় অবস্থায় নিমরাজি থাকায় জামিনে বের হয়ে আসে তার ভাই ধর্ষক সোহেল। পরবর্তীতে গলায় ফুলের মালা পরে মোটরসাইকেল শোডাউন ও আনন্দ উল্লাস করে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করেছে সে। তার মোটরসাইকেল শোডাউন ও উল্লাসের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি ভীষণ আলোচিত হয়।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আখতার হোসেন জানিয়েছেন, ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে ধর্ষক চাচা সোহেলের সম্পৃক্ততা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্রুত মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top