চোরাই মোবাইল কিনে বদলে ফেলে আইএমইআই নম্বর
অপরাধ প্রতিবেদকঃ একই সাথে ওরা ১২ জন। বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়। পরিচয় রাজধানীতে। পরিচয় আবার চোরাই মোবাইল কম দামে কিনে বদলে ফেলে আইএমইআই পরিবর্তনের সূত্রে। সে সূত্রে ওরা এখন ঘনিষ্ঠ বন্ধু !
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বুধবার মোবাইল ফোনের আইএমইআই পরিবর্তন করা ডিভাইস এবং বিপুল পরিমাণ চোরাই মোবাইল ফোনসহ তাদেরকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো -মুরাদ খান, লাভলু হাসান, আল আমিন ওরফে অনিক, বশির আলম শুভ, আব্দুল মালেক, মো. তামিম, শাহ আলম, স্বপন, জাহাঙ্গীর আলম, ইমাম হাসান, আরিফ ও আল আমিন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত এবং কিভাবে বন্ধুত্ব তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।
সিআইডি বৃহস্পতিবার তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগর এলাকায় মোবাইল চোরচক্রের কাছ হতে স্বল্প দামে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ক্রয় করে মোবাইল ফোনের আইএমইআই পরিবর্তন করার ডিভাইস ব্যবহার করে সমাজের ক্ষতি করে আসছিল।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন অপরাধীরা হত্যাসহ ছিনতাই, ডাকাতি করে ব্যবহারকারীর মোবাইল নিয়ে যাওয়ার কারণে পূর্বে তথ্য- প্রযুক্তির মাধ্যমে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সহজেই অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হতো।
কিন্তু সংঘবদ্ধ এই চক্রটি মোবাইলফোনের আইএমইআই পরিবর্তন করার কারণে চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার মুরাদ খান ও লাভলু হাসান শহরের বিভিন্ন চোরদের কাছ থেকে চোরাই মোবাইলফোন কিনে নিয়ে তার লক খোলা এবং মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার জন্য অনিক, বশির ও মীম টেলিকমের মালিক আব্দুল মালেকের কাছে দিত। অনিক, বশির ও মালেক ‘জেডথ্রিএক্স’ ডিভাইস ব্যবহার করে মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করত।
এরপর সুনির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে নির্ধারিত মূল্যের কম মূল্যে মোবাইলগুলো বিক্রয় করত। চোরাই ও আইএমইআই পরিবর্তন করা ২৬৫টি বিভিন্ন ব্রান্ডের চোরাই মোবাইল, আইএমইআই পরিবর্তন করার ‘জেডথ্রিএক্স’ নামক ৯টি ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
চক্রের সদস্যরা এই ডিভাইসগুলো গুলিস্তানের পাতাল মার্কেটের মাসুদ টেলিকম ও কবির টেলিকম থেকে কিনে বলে জানায়। ডিভাইসগুলো চায়না থেকে আনা। মাসুদ এবং কবির টেলিকম অবৈধভাবে ডিভাইসগুলো বাংলাদেশে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।