রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

PicsArt_08-17-11.56.12.jpg

রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

বিশেষ প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ আরেকটি মাইলফলক অতিক্রম করেছে।

কোরবানির ঈদের পরও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে উর্ধ্বগতিতে সোমবার দিন শেষে রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারও ছাড়িয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বেশি রিজার্ভ আগে কখনই ছিল না। রেমিটেন্স বাড়ায় গত দেড় মাসে ৩৪ বিলিয়ন ডলার থেকে রিজার্ভ ৪০০ কোটি ডলার বেড়ে ৩৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।

প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেব করে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাড়ে নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সোমবার রাতে রিজার্ভের নতুন রেকর্ডের তথ্য জানিয়ে বলেন, “মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করেই রিজার্ভ একটার পর একটা রেকর্ড গড়ছে।”

মহামারীর এই কঠিন সময়ে বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অবদান রাখার জন্য তিনি প্রবাসীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

তিনি একই সঙ্গে বলেন, “এই রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারের বড় ভূমিকা আছে। বৈধ পথে রেমিটেন্স আনতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছরের জুলাই থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

“অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে সরকার তার সঙ্গে ২ টাকা যোগ করে স্বজনকে ১০২ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রবাসীরা উৎসাহিত হচ্ছেন। বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছেন।”

তবে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারীর কারণে হুন্ডি বন্ধ হয়ে যাওয়াও বৈধ পথে রেমিটেন্স বাড়ার একটি কারণ।

এছাড়া সঙ্কটকালে পরিবারের সহায়তার জন্য প্রবাসীরা যেমন বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন, আবার সঙ্কটে পড়ে বিদেশের পাট চুকিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলেও তা রেমিটেন্স বাড়ায় প্রভাব ফেলছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ পাঁচ বার রেকর্ড গড়েছে।

গত ৩ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২৪ জুন সেই রিজার্ভ আরও বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।

এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ৩০ জুন রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এক মাস পর ২৮ জুলাই রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরও অতিক্রম করে।

তিন সপ্তাহ পর সোমবার (১৭ অগাস্ট) রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “রিজার্ভের এই উল্লম্ফন আমাদের সাহস জোগাচ্ছে; আমরা সাহসিকতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করতে পারব বলে আশা করছি।”

রেমিটেন্সের পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও এআইআইবির ঋণ সহায়তাও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

গত চার মাসে (এপ্রিল-জুলাই) এই দাতা সংস্থাগুলোর সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ-সহায়তা যোগ হয়েছে রিজার্ভে।

এক বছর আগে গত বছরের ৮ অগাস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top