।। দশভূজা ।৷ অজয় দাশগুপ্ত
ঘুম থেকে জাগতেই চেঁচালেন তিনি
বেড টিতে দুধ কম বেশী কেন চিনি?
দৌড়ে এলেন হাতে চিনি নিয়ে যিনি
দুই হাতে দশহাত ধারণের ইনি
ওঘরে যে বড় মেয়ে কলেজের ক্লাশে
যাবে বলে টাকা চেয়ে ঘুরে আসে পাশে
বাবা যা দেবার দিয়ে আর নাই তাতে
বাড়তি পাবার ব্যাংক আছে জানে মা’তে।
ততক্ষণে বড় ছেলে বাড়ীময় ঘুরে
জুড়েছে কান্নাকাটি সকরুণ সুরে
এক পায়ে জুতো তার এক পা খালি
বড়টা ‘কে দেখে ছোট দেয় হাততালি
দাদা রেগে বলে, তোকে করবোই সোজা
মা এসে দাঁড়ায় মাঝে মা’র হাতে মোজা
ছোটজন বসেছিল রুটি ডিম খেতে
উল্টালো পানি জগ ছোট টেবিলেতে
পানি না গড়াতে মা নিলো সব তুলে
দু হাতের সাথে আরো হাত গেল খুলে
সবাই গেলে পরে স্নান আহার সেরে
তার কি সময় আছে ঘুম নেবে কেড়ে?
বিকেল নাগড়াতেই বুয়া এসে ডাকে
ব্যস্ততা ভাসিয়েই নিয়ে যায় তাকে
দুই ছেলে এক মেয়ে আর তার স্বামী
সামলাতে সামলাতে রাত আসে নামি
কেউ পড়ে কেউ ফোনে কেউ দেখে টিভি
মাতো শুধু মা নয় কারো তিনি বিবি
ইচ্ছে অনিচ্ছে মন চায় বা না চায়
নিজেকে গুছিয়ে তিনি যান বিছানায়
কতদিন বাবা নাই মা র নাই দেখা
সংসারে এতজন তবু তিনি একা
কন্যা ছিলেন বটে আজ মা ও জায়া
রোদে ঝড়ে আজ তিনি আলো, তিনি ছায়া
তাকে ঘিরে পরিবার বেদনা ও সুখ
মায়া তিনি কায়া তিনি একাধিক মুখ
স্যালুট জানাই তাকে সালাম বা পুজা
মায়েরাই চিরকাল গৃহে দশভূজা।
অজয় দাশগুপ্ত
কবি ও সাহিত্যিক
অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী