নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় আদালতের এক্তিয়ার বাড়ানো হোক
বিশেষ প্রতিবেদকঃ করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়গুলো কোর্টের জুরিডিকশনে এনে প্রয়োজনে বিশেষ আদালতে জটিল মামলাগুলো পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ ভার্চুয়াল কোর্টে আসামির আত্মসমর্পণ করার কোনো সুযোগ নেই। এরই মধ্যে ২ হাজার ৩০০ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। অনেক পুরোনো মামলার শুনানি হচ্ছে না। এগুলো এখন ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে থানা মামলা না নিলে কোর্টে মামলা দায়ের করা যাচ্ছে না। ফলে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব না হলে আমরা আরো পিছিয়ে পড়ব।
সোমবার এসংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপপরিষদের উদ্যোগে এই অনলাইন মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
অ্যাডভোকেট জেয়াদ-আল-মালুম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলো দুটি ভাগে বিভক্ত। একটা ফৌজদারী মামলা অন্যটি পারিবারিক আদালতের। কোভিড সংক্রমণের কারণে নারী নির্যাতনের নালিশি মামলার কার্যক্রম স্থগিত। স্থগিত হয়ে যাওয়া মামলাগুলো অবারিত করার জন্য উদ্যোগ প্রহণ করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, আইনজীবীরা মামলা ভার্চুয়ালি পরিচালনা করতে সক্ষম। নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে একসেস টু জাস্টিস বা নালিশী মামলা করার এবং পারিবারিক আদালতে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বক্তাগণ নারী ও কন্যার সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আদালতের এখতিয়ার বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অ্যাডভোকেট অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, কোভিড সংক্রমণের ক্রান্তিকালে ভার্চুয়াল কোর্ট আইন পাশ হয়। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন ফৌজদারী অপরাধ। এক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার নারী প্রতিকার চেয়ে থানায় অথবা কোর্টে মামলা করতে পারেন। কিন্তু কোর্ট বন্ধ থাকার কারণে থানা ছাড়া মামলা করার সুযোগ ছিল না। ভার্চুয়াল কোর্ট সৃষ্টি হওয়ার ফলে তারা এখন মামলা করতে পারবেন। অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টে এফআইআর, তদন্ত, সাক্ষ্যগ্রহণ, শুনানি করা যাবে। কিন্তু সিপিসি, সিআরপিসি অনুযায়ী ভার্চুয়াল কোর্টে সব প্রসিডিউর সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সীমিত পরিসরে হলেও নিয়মিত আদালত চালু করা না গেলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক বলেন, বর্তমানে ঘরে থাকার কারণে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়ে গেছে। এর প্রতিকারের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। আলোচনায় অংশ নেন মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, সহসাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম, অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা, অ্যাডভোকেট এ কে এম আলমগীর পারভেজ ভুঁইয়া। সভা পরিচালনা করেন লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি ডিরেক্টর মাকছুদা আখতার।