অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বিরোধ বাড়ছে
আন্তজার্তিক প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাস তদন্ত নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বিরোধ ও ক্ষোভ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। গত কয়েক দিন ধরে অস্ট্রেলিয়া সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের কোনো ফোনের উত্তর দিচ্ছে না চীন সরকারের কেউ। তবে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী সাইমন বার্মিংহাম বলেছেন, এ অবস্থার একটা বিহিত করতে তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
চীন অস্ট্রেলিয়ার বার্লিতে ৮০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী সাইমন বার্মিংহাম তাঁর চীনা প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিনি সফল হতে পারেননি। বার্লিতে ৮০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে চীনের অভিযোগ, অস্ট্রেলিয়া সরকার ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ দামের চেয়ে কম দামে এই বার্লি চীনে রপ্তানি করছে। ফলে চীনের দেশীয় উৎপাদন মার খাচ্ছে চরমভাবে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, চীনের হুয়াওয়ে কোম্পানির হাইটেক ৫জি নেক্সট জেনারেশন নেটওয়ার্ক স্থাপনে অস্ট্রেলিয়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় চীনের নেতৃত্ব আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তার ওপর সম্প্রতি করোনাভাইরাসের মূল উৎসের স্বচ্ছ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করায় এই কর আরোপের ব্যবস্থা নিচ্ছে চীন। এর আগে করোনাভাইরাস নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-চীন সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠলে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চেং জিংয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি চীন বার্লি আমদানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের পর অস্ট্রেলিয়ার মাংস আমদানিও স্থগিত করেছে। অস্ট্রেলিয়ার মাংস বিক্রির প্রধান ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৩৫ শতাংশ মাংস রপ্তানি করে চীনে। সাম্প্রতিক বছরে চীনে অস্ট্রেলিয়ার মাংসের চাহিদা অনেক বেড়েছিল। এই বছর অস্ট্রেলিয়া রপ্তানি করেছিল ৩৫০ কোটি ডলারের মাংস। এ ছাড়া, অস্ট্রেলিয়া চীনে সবচেয়ে বড় বার্লি রপ্তানিকারক দেশ। দেশটির ৮৮ শতাংশ বার্লি রপ্তানি হয় চীনে।
চীনের সিদ্ধান্তের পর অস্ট্রেলিয়া বলছে, শুল্ক আরোপ করা হলে চীনকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় নিয়ে যাওয়ার কথা বিবেচনা করবে।
অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১১৬টি দেশ করোনাভাইরাসের মূল উৎসের স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে স্বাক্ষর করেছে। ব্রিটেন, কানাডা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও রাশিয়াও তাদের সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে।