দুই সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা; আর্টিকেল নাইনটিনের তীব্র নিন্দা

PicsArt_04-15-08.55.51.jpg

দুই সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা; আর্টিকেল নাইনটিনের তীব্র নিন্দা

স্টাফ রিপোর্টারঃ ত্রাণ বিতরণের চাল উদ্ধারের পর প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী এবং জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার সহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আর্টিকেল নাইনটিন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্য অধিকার সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই মামলা বিষয়ক পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নিতে এবং অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

আজ সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থার বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ’’ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলোর অপব্যবহার করে যেভাবে সাংবাদিক ও মতপ্রকাশকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করা হচ্ছে, এই মামলা সেই ধারাবাহিকতায় নতুন সংযোজন। এমন একটি সময়ে এ মামলা করা হলো-যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও আত্মৎসাতের খবর সাংবাদিকরা তুলে আনছেন। আর এসব সংবাদের ভিত্তিতেই প্রশাসন বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম বন্ধে তৎপর হচ্ছে। সেই দিক থেকে এই মামলাটি তৃণমূল পর্যায়ে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনকে বর্তমানে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিল।’’

আর্টিকেল নাইনটিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানতে পারে যে, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী তাকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং তার নিজের ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগ এনে গত ১৭ এপ্রিল বালিয়াডাঙ্গি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯ ও ৩১ ধারায় এই মামলাটি করেন।

মামলায় তৌফিক ইমরোজ খালিদী ও মহিউদ্দিন সরকার ছাড়াও শাওন আমিন ও রহিম শুভ নামের আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে।

আর্টিকেল নাইনটিনের আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ’’আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, একমাসের ব্যবধানে তিনটি গণমাধ্যমের সর্বোচ্চ নির্বাহীর বিরুদ্ধে প্রায় একইভাবে মামলা হল, যা সাম্প্রতিক সময়ে নজিরবিহীন।

এর আগে গত ৯ মার্চ মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন মাগুরা-১ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর। ওই মামলা দায়ের পর থেকে নিখোঁজ আছেন মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল।

মামলাটি প্রত্যাহারের পাশাপাশি কাজলের সন্ধান বের করতে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।’’

আর্টিকেল নাইনটিন বিভিন্ন পরিসরে বলে আসছে যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়। এমন অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকেই বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন আইনটির বাস্তবায়ন শুরুর আগে এরকম আইনের বিরোধিতা করেছিল। তাই আইনটি পর্যালোচনা করে তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে আর্টিকেল নাইনটিন সরকারের প্রতি ফের আহ্বান জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top