সরকার আনসার ব্যাটালিয়ন আইন প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

PicsArt_02-13-04.18.49.jpg

সরকার আনসার ব্যাটালিয়ন আইন প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধান প্রতিবেদকঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার আনসার ব্যাটালিয়ন আইন প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ এবং ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স ও আম্রকানন’-এর নিরাপত্তার জন্য দুইটি আনসার ব্যাটালিয়ন গঠনের কার্যক্রম প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি অ্যাকাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম জাতীয় সমাবেশে এসব কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

এসময় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে জননিরাপত্তা রক্ষায় সততা, সাহসিকতা ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বাহিনীর একটি গার্ড ব্যাটালিয়নসহ চারটি আনসার ব্যাটালিয়ন গঠন, ব্যাটালিয়নের সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করে জনবল বৃদ্ধি, আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ঝুঁকি ভাতা প্রবর্তনসহ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন সরকার প্রধান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতা বর্তমানে সর্বজন স্বীকৃত। জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনসহ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও মৌলবাদ নির্মূলে আনসার বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। এ বাহিনীর সদস্যদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা—জননিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে সততা, সাহস ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। আমরা সবাই মিলে কাজ করলে শিগগিরই  ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।’

আরও উন্নয়ন কাজে এই বাহিনীকে সম্পৃক্ত করতে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আনসার ও ভিডিপি বাহিনীকে উন্নয়ন কাজে আরও সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। এ বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার অঙ্গীভূত সদস্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধান করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করছেন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় এ বাহিনীর সদস্যরা ‘এভসেক (এভিয়েশন সিকিউরিটি)’-এর অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশ ও জনপদকে নিরাপদ রাখতে দুইটি মহিলা ব্যাটালিয়নসহ এ বাহিনীতে ৪২টি আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে। পার্বত্য এলাকায় এ বাহিনীর ১৬টি ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে অপারেশনাল ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া নবগঠিত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা কূটনৈতিক এলাকা, কূটনৈতিক ব্যক্তি এবং দেশের বিশিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’

খেলাধুলায় আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের সফলতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এ বাহিনীর সদস্যরা খেলাধুলা ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন। সদ্য সমাপ্ত এসএ গেমসে বাংলাদেশের অর্জিত ১৪২টি পদকের মধ্যে ৬৮টি পদক অর্জন করেছেন আনসার বাহিনীর খেলোয়াড়রা।

তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ৬১ লাখ সদস্য রয়েছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে দৃষ্টান্তমূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ১৪৩ জনকে ‘সেবা’ ও ‘সাহসিকতা’র পদক তুলে দেন তিনি।

হেলিকপ্টারে করে গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও ভিডিপি অ্যাকাডেমিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শন করেন। প্যারেড পরিদর্শন শেষে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিবেশন করা হয়। অভিবাদন মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top