আমরা এমন ভোট চাইনি: সিইসি কে এম নূরুল হুদা
নগর প্রতিবেদকঃ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিভিন্ন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, হাতাহাতি, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।
সাংবাদিকরা সিইসির কাছে জানতে চান−আপনি কি এমন ভোট চেয়েছিলেন? জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘আমরা এমন ভোট চাইনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা আছে তাদের কাছে আমার নির্দেশ, এ জাতীয় পরিস্থিতি যদি ঘটে, তাহলে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন। যারা প্রার্থী, ভোটার বা সমর্থক তাদের প্রতি আমার অনুরোধ, যাতে তারা পরিবেশ-পরিস্থিতি শান্ত রাখেন।’
সিইসি আরও বলেছেন, ‘ভোটার উপস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো না। হয়তো পরে ভোটার বাড়বে।’ আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ওই কেন্দ্রে দুপুর পর্যন্ত ২৭৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন।
সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘আমি বাসা থোকে আসার সময় পথে একটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সেখানেও সকালে ভোটার কম দেখেছি।’
প্রার্থীদের অভিযোগ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এখন পর্যন্ত অভিযোগ নেই। আমি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে টিভিতে দেখলাম মানুষ লাইন দিয়ে ভোট দিচ্ছে। ইভিএমের বিষয়ে মানুষের ইতিবাচক সাড়া মিলছে। ইভিএম বুঝতে যাদের কষ্ট হচ্ছে, তারা বুঝে নিয়ে ভোট দিচ্ছে। তারা খুশি।’
ইভিএম মেশিনে যাদের আঙুলের ছাপ মিলছে না, তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাদের ফিংগার প্রিন্ট মিলছে না, তাদের ভোট দেওয়ার তিন-চারটি উপায় রয়েছে। এর যেকোনও একটি উপায়ে তারা ভোট দিতে পারবেন।’ উনার নিজেরও আঙুলের ছাপ মেলেনি। পরে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে ভোট দেন।
ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সকালে আসেনি, হয়তো পরে আসবে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, ভোটার আনার বিষয়ে তাদের দায়িত্ব বেশি। এক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব কম। আমাদের পরিপূর্ণ দায়িত্ব আমরা পালন করেছি।’
বিএনপির এজেন্ট বের করে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা হলো ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি এমন অভিযোগ পায় তাহলে তাকে ভোটকেন্দ্রে ফের ঢুকিয়ে দেবেন। এজেন্টদের সঙ্গে এমন কিছু ঘটলে প্রথমে তিনি প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে যাবেন। তার সাহায্য চাইবেন। সেখানে কাজ না হলে ভোটকেন্দ্রের বাইরে এসে তার নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেট থাকলে তাকে জানাবেন। ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে ঊধ্বর্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের জানাবেন।’
সিইসি বলেন, ‘এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে টিকে থাকার সামর্থ্য থাকতে হবে। একজন বের হতে বললো আর বের হয়ে আসবেন, এমন হতে পারে না। বের হতে বললেই বের হবেন, এটা ম্যানেজ হলো না। তারা যেন তাৎক্ষণিক প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন। একজন বের হতে বললো আর বের হয়ে গেলো−এর না আছে কোনও অভিযোগ, না আছে কোনও ভিত্তি, না আছে লোকটির অস্তিত্ব। আমরা এমন অভিযোগের কী করতে পারি?’
তিনি বলেন, ‘এজেন্টকে বের হয়ে যেতে বললে সেটা তার প্রতিহত করা উচিত। এজেন্ট বলবে−আমি যাবো না।’
তাহলে কি এজেন্ট মারামারি করে কেন্দ্রে টিকে থাকবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমি মারামারির কথা বলছি না। যদি বলে ‘যাও’, এজেন্ট বলবে ‘আমি যাবো না।’ এরপরও যদি বের করার চেষ্টা হয় তাহলে পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারে এজেন্ট। এজেন্টকে কেউ বের করে দিলো, নাকি নিজের ইচ্ছায় বের হয়ে গেলো, তা প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার।’
কেন্দ্রে যাতে কোনও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি না হয়, সেজন্য তিনি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের প্রতি অনুরোধ করেন।
বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের পরিবেশ নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা বলেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘কোনও কেন্দ্র যদি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বা রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে সেই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে।