ভোলায় বিটিসিএল এর সহকারি ব্যবস্থাপক মনিরুলের অনিয়ম!
জেলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এর সহকারি ব্যবস্থাপক মো. মনিরুল আলম এক মাস আগে পিরোজপুরে বদলী হলেও কর্মস্থল পিরোজপুরে না গিয়ে ভোলা অফিসেই অফিস করেন।
এমনকি পিরোজপুরের সহকারি ব্যবস্থাপক প্রভাস কুমারের সাথে লিয়াজো করে এ কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে মনিরুল আলমের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও মনিরুল ভোলার দায়িত্বে না থেকেও অফিসে গিয়ে কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করছেন ভোলা বিটিসিএল কর্মচারীরা।
গত নভেম্বর মাসের তিন তারিখে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এর ভোলার সহকারি ব্যবস্থাপক মো. মনিরুল আলমের বদলী হয় পিরোজপুর জেলায়। ভোলায় দেয়া হয় পিরোজপুরের সহাকরী ব্যবস্থাপক প্রভাস কুমারকে। কিন্তু মনিরুল আলম যোগদানের তারিখে পিরোজপুর যোগদান করে আসে। এর পর থেকেই গত প্রায় এক মাস ধরে সেখানে না গিয়ে সেখানকার সহকারী ব্যবস্থাপক প্রভাস কুমারের সাথে লিয়াজো করে অফিস করে আসছে। সপ্তাহে এক দিন পিরোজপুরে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্বাক্ষর করে আসে। প্রভাষ কুমরাও একই ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
এমনকি মনিরুল আলম পিরোজপুরে বদলী হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও ভোলার অফিসে তার রুমের সামনে এখনও নেম প্লেট ঝুলছে। তিনি এখনও ভোলার অফিসে বসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভোলা বিটিসিএল এর একাধিক কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, ২০১১ সাল থেকে মনিরুল আলম ভোলা বিটিসিএল এ কর্মরত আছেন। দীর্ঘ দিন এক যায়গায় কর্মরত থাকায় তিনি নানাবিধ দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ছে। নিজের ইচ্ছেমত সে ছুটি কাটায় তাকে কিছু বলার সাহস কারো নেই। ভোলার টেলিফোন বিভাগের বিপর্জয় ডেকে এনেছে এ কর্মকর্তা। শহরে গ্যাস লাইন ও ড্রেন করার সময় টেলিফোনের তার কেটে গেলে অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে তা ঠিক করে ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা উত্তোলন করে তা নিজে আত্মসাৎ করে। বিল ভাউচারের এক টাকাও কর্মচারীদের দেয়া হয় না। তার বিরুদ্ধে টেলিফোনের সরকারি ড্রপওয়ার বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। মনিরুল ইসলাম ভোলা থেকে পিরোজপুরে চলে গেলে এখানকার সকল দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে সে ভোলা ছাড়তে চাচ্ছেন না বলেও জানান কর্মচারীরা।
তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, মনিরুল আলম নিজের নামে সরকারি বাসা না নিয়ে লাইনম্যান ইউছুফের নামে বাসা বরাদ্দ নিয়ে ওই বাসায় থাকেন। যাতে করে সরকারকে টাকা কম দেয়া লাগে।
গত বুধবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেডের ভোলা অফিসে গিয়ে দেখা যায় সহকারী ব্যবস্থপকের রুমের সামনে মনিরুল আলমের নেমপ্লেট লাগানো রয়েছে। সেদিনও সে ভোলায় অফিস করেছেন। কিন্তু সাংবাদিক আসার খবরে সে বাসায় চলে যায়। তবে অফিসে থাকা জুনিয়র সহাকরি ব্যবস্থপক মো. হারুন অর রশিদ জানান, মনিরুল আলম ভোলা অফিসে থাকে কিন্তু কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে না। এমনিতেই অফিসে আসে। তবে সপ্তাহের রবিবার পিরোজপুর গিয়ে মঙ্গল-বুধবার চলে আসেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মনিরুল আলম বলেন, এখানকার কিছু কাজ বাকী থাকায় সে পিরোজপুরে যায়নি। এবং প্রভাস কুমারও এখনও স্থায়ীভাবে ভোলায় আসেনি। দু’জনেই দুই যায়গার কিছু কাজ বাকী থাকায় সমজোতা করে তারা অফিস করেন। এছাড়াও তিনি সরকারি কোনো ড্রপওয়ার বিক্রি করেননি। এগুলোর বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই।
এব্যাপারে পিরোজপুর থেকে ভোলায় বদলী হওয়া সহাকরি ব্যবস্থাপক প্রভাষ কুমার জানান, পিরোজপুরে ১০৩টি মামলা রয়েছে। আর এসকল মামলার বাদী তিনি। তাই সে ভোলায় আসতে পারেন না। আর এ সকল কাজ তারা বরিশালের উপ-মহাব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলেই করছেন। তবে শিগ্রই সে পদন্নতি পেয়ে ঢাকায় চলে যাবেন। এবং মনিরুল আলমই ভোলার দায়িত্বে থাকবেন।
বরিশাল বিটিসিএল এর উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শামীম ফকির বলেন, আমার জানামতে মনিরুল আলম পিরোজপুরে অফিস করেন, আর প্রভাস কুমার ভোলায় অফিস করেন। কাগজপত্রেও স্বাক্ষর একই রকম। তবে মনিরুল আলমের বাড়ি ভোলায় ও প্রভাস কুমারের বাড়ি পিরোজপুরে হওয়ায় তারা দু’জন সপ্তাহে এক দিন কম বেশী কর্মস্থলে থাকেন বলে আমি জানি।
তারা কর্মস্থলে থাকেন না এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তার পরও আমি বিষয়টি দেখছি।