দখলের রাজা ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক!
নগর প্রতিনিধিঃ রাজধানীর পল্লবী থানার ৫নং পলাশ নগরের স্থায়ী বাসিন্দা মৃত অহিদ মোল্লার মেয়ে নুরুন নাহার অভিযোগ করে বলেন, তার পৈত্রিক সম্পত্তি পলাশ নগরে হাজী অহিদ মোল্লা, মাতা হাজী বাহারুনেসা জীবিত থাকালীন তার দুই সন্তান এর নামে সিটি খতিয়ান ১৬৫১নং এ ২৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে ১৪৩৪৪ নং দলিলে ২০১০ সালে। তারা মারা যাবার পর জালদলিল করে এলাকার চিহ্নিত ভূমি দস্যু বিএপি নেতা জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আলম স্বাধীন ও হারুন অর রশিদ জোর করে দখল করে। দখলের নেপথ্যে কাজ করে স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক। একটি সহজ বিষয় লক্ষ্য করলেই জানতে পারবেন যে তারা যে দলিলের কথা বলছেন সে দলিলে সনাক্তকারী ও পরিচয়দানকারী একজনই, সে হচ্ছে এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক।
মানিক কাউন্সিলরের দখল কাজের আরেক সহযোগী শহিদুল ইসলাম জীবন। শহিদুল স্থানীয় যুবদলের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও একাধিক নাশকতা মামলার আসামী। শহীদুল র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতেও গিয়েছিল। কাউন্সিলর মানিক শুধু মাত্র নিজের দখল তান্ডব চালিয়ে যাওয়ার জন্য এরকম নামকরা গুনী (?) সন্ত্রাসী দখলবাজদের লালিত পালিত করে। নুরুন নাহার আরও জানান, তিনি কাউন্সিলর মানিকের এসব দখল ও সম্পত্তি আত্বস্বাতের বিরুদ্ধে নথিপত্রসহ গত ১৭ এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে দূর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক ও তার বিএনপি জামাত সম্বলিত সন্ত্রাসী দখলদার বাহিনীর অত্যাচারের প্রতিবাদে বেশ কয়েকবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
আরও জানাযায়, জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আলম ভূইয়া স্বাধীন এক সময় চটপতি বিক্রি করলেও বর্তমানে ৩/৪টি বাড়ী ও একটি কারখানার মালিক। তার নিজের একটি রিয়েল ষ্টেটের প্রতিষ্ঠানও আছে। কোম্পানীটি মাটির মায়া রিয়েল স্টেট নামে পরিচিত।
কাউন্সিলর মানিকের ভুমি দখল সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, দেলোয়ার, শাহিন। দেলোয়ার ২০০৪ সালে রাজধানীর মিরপুরেই একটি গার্মেন্টেসে চাকুরি করতেন। দেলোয়ার এখন মানিকের বদন্যতায় দেলোয়ার সাহেব নামে পরিচিত আর এলাকায় ৬/৭টি বাড়ীর মালিক তিনি। মানিকের আরেক সদস্য শাহিন একসময় মিরপুরেই একটি পানির পাম্পে চাকুরী করতেন। পানির কোম্পানীতে চাকুরীর সুবাদে তাকে এলাকায় পানি সাহিন নামেও সবাই চেনেন। কাউন্সিলর মানিকের পানিগ্রহে বর্তমান সরকারের স্বল্প সময়ের মধ্যেই ৫/৬টি বাড়ীর মালিক বনে গেছেন। জহিরুল ইসলাম মানিকের আরেক সদস্য কাজী হারুন। এই হারুন অর রশিদই কাফরুলের আওয়ামীলীগ নেতা আরিফুর ইসলাম বাবুর ২০কাঠা জমির পুরোটাই দখল করে নেয়ার চেষ্টা করে। ২০ কাঠা সম্পত্তির মধ্যে ইতিমধ্যে ১০ কাঠায় দখল করে নিয়েছে। বাকী জমি টুকুও দখলের নানা হীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়ার্ড কমিশনার মানিক গং।
এ বিষয়ে আরিফুর ইসলাম বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি , কে জানান, আপনারা খোজ খবর নিয়ে দেখেন পলাশনগর, ঈমাননগর, এভিনিউ ৫ এলাকায় এই ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক কতো জমি বাড়ী, ফুটপাত দখল করেছে। কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিকের এই সন্ত্রাসী দখল বাহিনীর অত্যাচারে এলাকার নিরীহ মানুষ কতোটা অত্যাচারিত। শুধুমাত্র মানিকের সন্ত্রাসী বাহিনী ও সরকার দলীয় নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর হওয়ায় কেউ কিছু বলতে সাহস করে না। অনেকে সাহস করে থানা পুলিশের কাছে গেলেও মানিকের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক তার পদ ও ক্ষমতা সাথে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকায় নিজে ও তার শ্বশুরের নামে প্রায় ৭টি বাড়ী দখল করে, বলে বাবু অভিযোগ করেন।
যার মধ্যে ১০নং সেকশনের ডি ব্লকে ৩৪ নং রোডের ৪নং বাড়ি, ২৮নং রোডের ৩২নং বাড়ী, ২৮নং রোডের ২২ ও ২৪ নং ২টি বাড়ী, ২৯ রোডের ১৭, ৩৩নং রোডের ১৬, ২৭নং রোডের ১৮নং বাড়ী কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক দখল করেন।
তিনি আরও জানান, ১০নং সেকশনের বি-ব্লকের ঢাকা রাড্ডা বার্নান মেইন রোড থেকে সংযোগ সড়ক এভিনিউ-১ ঝুটপট্টি রোডের উত্তর মাথায় শহীদ আবু তালেব উচ্চ বিদ্যালয়ের নকশা বহির্ভূত বর্ধিত অংশ সিটি কর্পোরেশনের ৪০ ফুট রাস্তার মধ্যে ৬ফুট প্রস্থ ও ৭০ফুট দৈর্ঘ্য দখল করে ভবন নির্মান করেছে ওই ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক। জহিরুল ইসলাম মানিকের এই দখল উচ্ছেদের জন্য এলাকার প্রায় ৩ শতাধিক নারী পুরুষ মাননীয় মেয়রের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
আরিফুর ইসলাম বাবু আরও বলেন, আমি ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিকের এসব কু-কির্তির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, র্যাবের প্রধান, পুলিশ কমিশনার, ডিসির কাছে সুনিদৃষ্ট তথ্য প্রমানাদিসহ অভিযোগ করেছি। আশাকরছি কর্তৃপক্ষ এই ভূমিদস্যু দখলবাজ ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিকের বিরুদ্ধে তড়িৎ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে এলাকার সাধারণ জনমানুষের মনে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে দিবেন।
এদিকে এই জমির মালিক কাউন্সিলর মানিক নিজের নামে বলে দাবী করে আসছেন। তিনি বলেন, জমির কাগজপত্র সবই তার নামে। তার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ তাদের দাবী করলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের কাছে কোন প্রমানাদি নেই।
তবে এই অভিযোগ ছাড়াও কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে অত্র ওয়ার্ডে জমি দখল, মাদক বিক্রির শেল্টার, নিরীহ মানুষকে হয়রানী সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে কাউন্সিলের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের বিষয় জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনো বক্তব্য না দিয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে দেখা করে বক্তব্য দেওয়ার কথা বলে সময় চায় কিন্তু বহুসময় অপেক্ষা করার পরও তিনি কোন বক্তব্য দেন নি।