মেডিক্যালে ‘ভর্তি কারসাজির গুরু’ ডাঃ তারিম খুলনায় আটক
মেডিক্যালে ভর্তি কারসাজির অভিযোগে খুলনার কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরসের মালিক ডাঃ তারিমকে (ইউনুছ খান) আটক করা হয়েছে। দেড় যুগ ধরে মেডিক্যালে ‘ভর্তি কারসাজির গুরু’ হিসেবে পরিচিত ডাঃ তারিম বিএমএর সদস্য, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) খুলনা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও একাধিক ক্লিনিকের অংশীদার।
ছাত্রলীগ খুলনা মেডিক্যাল কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি তারিম খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারও।
জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে খুলনার বেণীবাবু রোডের কোচিং সেন্টার থেকে তাঁকে আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান খান ও মিজানুর রহমান। তাঁরা জানান, আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন হিসেবে ডাঃ তারিমকে আটক করা হয়েছে। কোচিংয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্কও জব্দ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান খান জানান, এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এক মাস দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে থ্রি ডক্টরস খোলা রেখে এর মালিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে থ্রি ডক্টরসের পরিচালক তারিম যুক্ত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
খুলনা শহরের কেন্দ্রস্থল ফুল মার্কেটের কাছে একটি বহুতল ভবনে সরকারি চিকিৎসক ইউনুস খান তারিমের মালিকানাধীন এ কোচিং সেন্টারের অবস্থান।
ডাক্তার বানানোর কারিগর বলে খ্যাত কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরস প্রসঙ্গে স্থানীয়দের মাঝে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। শোনা যায়, এই প্রতিষ্ঠানে কোচিং করলে মেডিক্যালে ভর্তি নিশ্চিত। অবশ্য এ জন্য মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন করতে হয়। গত ১৮ বছরে তাঁদের কোচিং সেন্টারের চার হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ জন্য অনেকে ডাঃ তারিমকে মেডিক্যালে ‘ভর্তি কারসাজির গুরু’ বলে মানে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কোচিং সেন্টারের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সিন্ডিকেটের যোগসাজশের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়। যেসব শিক্ষার্থীর সঙ্গে কোচিং সেন্টারটি চুক্তিবদ্ধ হয়, তাদের সঠিক ও যথাযথ উত্তর জানা না থাকলে উত্তরপত্রের (ওএমআর শিট) ঘর খালি রাখতে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকজন ওই ঘর পূরণ করে দেন। এ কারণে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা নেই—এমন অনেক শিক্ষার্থীও মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যায়।
তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।