চট্টগ্রামে ৩৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক।
চট্টগ্রাম কারাগারের চাকরিচ্যুত সাবেক জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ ও সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম কারাগারের বর্তমান ও সাবেক ৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ লক্ষ্যে দুদকের পরিচালক মানসুর ইউসুফের নেতৃত্বাধীন একটি উচ্চপর্যায়ের টিম চট্টগ্রাম পৌঁছেছে।
আজ (মঙ্গলবার) থেকে টানা ৩ দিন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায় চট্টগ্রাম কারাগারের সাবেক ডিআইজি প্রিজন পার্থ গোপাল বণিক, জ্যেষ্ঠ জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক, ইকবাল করিম চৌধুরীও আছেন।
তাদের ঢাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কমিশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপ-পরিচালক মাহবুব আলম (জিজ্ঞাসাবাদ টিমের সদস্য) সোমবার জানান, সাবেক জেলার সোহেল রানা ও তার দুর্নীতির সঙ্গে কানেকটেড ৩৬ জনকে আজ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবেন তারা।
চট্টগ্রাম কারাগারের অফিসেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাদের ইতিমধ্যে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
গত ২৫ অক্টোবর ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার নগদ টাকা, আড়াই কোটি টাকার ব্যাংক এফডিআরের কাগজপত্র, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক এবং ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হন চট্টগ্রাম কারাগারের তৎকালীন জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস।
চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার পথে ভৈরবে রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনায় রেলওয়ে থানায় পুলিশ বাদী হয়ে জেলার সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে দুটি মামলা করে।
মানি লন্ডারিং আইনে হওয়া মামলাটি তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে : চট্টগ্রাম করাগারের সাবেক ডেপুটি জেলার হুমায়ন কবির হাওলদার (বর্তমানে পঞ্চগড়), মো. ফখর উদ্দিন (বর্তমানে মাগুরা), মনজুরুল ইসলাম (বর্তমানে নড়াইল), মো. আতিকুর রহমান (বর্তমানে দিনাজপুর), মু. মুনীর হোসাইন (বর্তমানে ঝালকাঠি), আবদুস সেলিম, সহকারী সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ফার্মাসিস্ট রুহুল আমিন, রামেন্দু মজুমদার পাল, কর্মচারী মাহজারুল হক, হিসাবরক্ষক এমদাদুল ইসলাম (বর্তমানে বান্দরবান), সার্জেন্ট ইন্সপেক্টর আনজু মিয়া (বর্তমানে পটুয়াখালী), সর্বপ্রধান কারারক্ষী মো. মোসলেম উদ্দিন (বর্তমানে পঞ্চগড়), আবদুল করিম (বর্তমানে ভোলা), বেলাল হোসেন (বর্তমানে বান্দরবান), সহকারী প্রধান কারারক্ষী লোকমান হাকিম (বর্তমানে খুলনা বিভাগের সদর দফতরে)।
ছাড়া বর্তমানে সিলেট বিভাগীয় দফতরে থাকা কারারক্ষী কাউছার আলম, আরিফ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, শহীদুল মাওলা, শরীফুল ইসলাম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় দফতরের অংচিং হলা মার্মা, শাহাদাত হোসেন, আবদুল হামিদ, রুহুল আমিন, রংপুর বিভাগীয় দফতরের ইকবাল হোসেন, শামীম শাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে কর্মরত এসএম শোভন, অলি উল্লাহ, মো. মাজহারুল হক খন্দকার, আবুল খায়ের (বর্তমানে নোয়াখালী), মহসিন তফাদার (বর্তমানে ফেনী) ত্রিভূষণ দেওয়ান (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া), স্বপন মিয়া (বর্তমানে নোয়াখালী), মিতু চাকমা (বর্তমানে বান্দরবান), জুয়েল মিয়া (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া), শাকিল হোসেন (বর্তমানে চাঁদপুর), বিল্লাল হোসেন (বর্তমানে বান্দরবান), শিবারণ চাকমা (বর্তমানে কুমিল্লা) ও ওসমান গণি (বর্তমানে নোয়াখালী)।