সারা বিশ্বে গণমাধ্যম এগিয়ে যাচ্ছে – সাগর চৌধুরী।
সাগর চৌধুরী।।
উন্নত বিশ্বে গণমাধ্যম যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, স্বল্প আয়ের দেশে বা উন্নয়নশীল দেশে গণমাধ্যম সেভাবে বিকাশ মান নয়। আমেরিকার গণমাধ্যমে যে সকল ছবি, সংবাদ সর্বোপরি তথ্যবহুল একটি নিউজ যেভাবে প্রকাশিত হয়, ফ্রান্সে সামাজিক অবস্থান পারিবারিক অবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় অবস্থানের কারণে সেই ছবি, সংবাদ বা তথ্য সমান ভাবে প্রকাশ পায় না।
উন্নত রাষ্ট্রে গণমাধ্যম যেভাবে স্বাধীনতা ভোগ করে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা তেমনভাবে স্বাধীনতা ভোগ করে না। প্রথম বিশ্ব, দ্বিতীয় বিশ্ব, তৃতীয় বিশ্ব কিন্তু এই তিন ধাপের বিশ্বের পরেও চতুর্থ ধাপে যে সকল দেশগুলো আছে, সেই সকল দেশের মধ্যে সরকার, জনগণ, দেশের আইন বা সংবিধান সেভাবে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতাকে স্বাধীনতা দিতে পারে না।
তৃতীয় বিশ্ব বা দক্ষিণ এশিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল বিশাল দেশগুলো জনসংখ্যা ও ভূমি গত কারণে অনেক বিশাল। এশিয়ার দেশ চীন, জাপান, পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার এসব দেশের গণতন্ত্র নামক সোনার হরিণটি চিড়িয়াখানায় বসবাস করে। তার পার কিছু কিছু দেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা কাগজের ফুলের মত ভাঁজ পড়ে গেছে। চীন বা জাপান ভারত কিংবা পাকিস্তান বাংলাদেশ হয়ে আফগানিস্তান সাংবাদিকতার পতাকার রং ঝলসে গেছে।
পৃথিবীর সেরা সেরা গণমাধ্যমগুলোর সংবাদ ফিচার এবং সম্পাদকীয় তাদের প্রমাণ বহন করে, ভারতীয় গণমাধ্যম এই উপমহাদেশের খোঁজ খবর নিয়ে প্রতিনিয়ত খবর প্রকাশ করত, চীন এবং পাকিস্তানের গণমাধ্যম সমানভাবে পাল্লা দিয়ে ভারতের গণমাধ্যম এর কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করত কিন্তু যুগের পরিবর্তনে সেই সংবাদ যুদ্ধ আজ আর কোথাও নেই।
ভারতীয় গণমাধ্যমে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ, পাকিস্তান বাংলাদেশ যুদ্ধ, আফগানিস্তান যুদ্ধের উত্থান পতন, পাশের দেশ চীনের ওপর নানা ধরনের ফিচার প্রকাশ করেছে। চীন, পাকিস্তান বাংলাদেশ এবং সেই সাথে নেপাল, ভুটান ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ গুলো রিলের করে সম্প্রচার করেছে এতদিন মাত্র।
এখন ভারতীয় উপমহাদেশে প্রতিটি দেশের গণমাধ্যম ক্ষুদ্র পরিসরে, তাদের নিজস্ব বলয়ে সংবাদ প্রকাশে বদ্ধপরিকর হয়ে উঠেছে। যদিও এই পরিসরে স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রকট হয়ে উঠছে রোজ রোজ।
ভারতীয় উপমহাদেশের সাংবাদিকতার সুবিশাল পটভূমি ছিল। সেখানে সাংবাদিকতার নামে ও সাংবাদিকতায় বেশি, খাঁচা ভরা গণতন্ত্র নামক টিয়া পাখিটি মত আচরন করে গণমাধ্যম ।
বহুজাতিক কোম্পানীর বিজ্ঞাপন, ব্যক্তিস্বার্থে গণমাধ্যমকে ব্যবহার, হিন্দু – মুসলিম তোকমা, বিভিন্ন রাজনীতির দলীয় স্বার্থ ইত্যাদি বিষয়গুলো এখানে বিরাজ করে, যার কারনে সাংবাদিকতার আসল রূপ, গণমাধ্যম এর আসল পরিচয় এখানে বেশ অপরিচিত।
যারা সাংবাদিক নেতা বা গণমাধ্যম কর্মীদের নেতা তাদের কেউ কেউ অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করেন এখানে। অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনৈতিক আচার-আচরণ রাজনৈতিক প্রভাব সামাজিক ও দলীয় দায়মুক্তি ইত্যাদি বিষয়গুলো বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
নতুন প্রজন্মের কাছে গণমাধ্যম বা সংবাদ মাধ্যম হলো অনলাইন গণমাধ্যম। পৃথিবীর বিখ্যাত বিখ্যাত পত্রিকার, টেলিভিশন এবং রেডিও অনলাইন ভার্সন আছে। বর্তমান সময়ের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অনলাইনে তাদের সংবাদ, ফিচার এবং নিবন্ধ প্রচার করে। পত্রিকা বা টেলিভিশন সংবাদ প্রচার ও প্রসারে যেমন ভূমিকা পালন করছে তার চেয়েও বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে অনলাইন গণমাধ্যম।
সারা বিশ্বে আজ মুহূর্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে অনলাইন নিউজ, অনলাইন সংবাদ, অনলাইন ফিচার, অনলাইন নিবন্ধ।
পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশে গণমাধ্যম এর ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয় যদিও বাংলাদেশ রেডিও ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রচার বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে। সেক্ষেত্রে
বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের সংবিধানে গণমাধ্যম চতুর্থতম স্তম্ভ হওয়া সত্ত্বেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পুরোপুরি ভাবে বিকাশ লাভ করেনি এখানে।
স্বাধীন বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্ব সংবাদ বিশাল ভূমিকা পালন করছে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। বিশ্বের এই প্রান্তের খবর ওই প্রান্তে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এখন একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে অনলাইন গণমাধ্যম। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অনলাইন গণমাধ্যম ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছে।
যারা এর সুফল ভোগ করেন প্রত্যেকেই এর কুফল সম্পর্কে অবগত আছেন। আশা করি, অনলাইনের ভালো কিছু গ্রহণ করবেন; মন্দ টুকু থেকে বিরত থাকবেন।
।।
আজ সারাদেশে “এটিএন নিউজ” এর ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। আমরা এটিএন নিউজ এর ১০ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে “এটিএন নিউজ” এর সকলকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।
শুভ জন্মদিন এটিএন নিউজ।