গণপূর্ত অধিপ্তরে ঘুষের হাট – ‘নিয়োগ সিন্ডিকেটের’ তদন্তের নির্দেশ মন্ত্রী-সচিবের

Picsart_22-12-13_18-25-12-917.jpg

অপরাধ প্রতিবেদকঃ গণপূর্ত অধিদপ্তরে চলছে নিয়োগ সিণ্ডিকেট। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পছন্দের বাছাইকৃতদের নিয়োগ নিয়ে লেগে গেছে জট। ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আলোচনা ঝড় উঠেছে।

জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর গণমাধ্যমে বলেন, অভিযোগ তদন্ত করার নিদেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরে ৪৪৯ পদের নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশ করা লোক নিয়োগ না পাওয়ার রাতের আধারে পরীক্ষার ফলাফল শীট পরিবর্তনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরে ৪৪৯ পদের নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল শীট পরিবর্তনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো.শহীদুল আলম জড়িত থাকে তা হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনয়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরে ৪৪৯ পদের নিয়োগ পরীক্ষায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও সাবেক সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সুপারিশ করা লোক নিয়োগ না পাওয়ার রাতের আধারে পরীক্ষার ফলাফল শীট পরিবর্তন। দুই বড় কর্তার লোক নিয়োগ দিতে নতুন নাটক তৈরি করেছেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. শহীদুল আলম।

পরীক্ষার ফলাফল শীট হারানো অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় গত বছর ডিসেম্বর মাসে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এছাড়া যাকে দিয়ে সাধারণ জিডি করা হয়েছে সেই কর্মকর্তা উপ-সহকারী মাহমুদুল হাসান। অভিযোগ দাখিলের সাত দিনের মধ্যে বদলী করা হয়েছে সহকারী প্রকৌশলীকে রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে আলোচনা ঝড় উঠেছে। এ দিকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সচিবের সুপারিশ করা লোকজনকে পরীক্ষার সময় পাশ না করলেও তাদের পাস দেখিয়ে নিয়োগের সুপারিশ করেছেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল আলম। অথচ পরীক্ষার সময় তাদের বাতিল করে দিয়েছিলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো.শহীদুল আলম। এ ঘটনা জানাজানি পরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী-সাবেক সচিবের পক্ষ থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারকে এ নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় এবং বলা হয়েছে আমার লোকের নিয়োগ ছাড়া কোনো নিয়োগ হবে না। সেই ফাইল এখনো স্বাক্ষর করতে পারেনি বলে জানা গেছে। এছাড়া গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও বদলী সিন্ডিকেট ছাড়া কাজ হচ্ছে না। সম্প্রতি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পদ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পদে বদলী করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল আলমের সিন্ডিকেট।

এ ঘটনায় সম্প্রতি গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সচিবকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. শহীদুল আলম, গণর্পূত ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নাছিম খান, গণপূর্ত বিভাগ -৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সাইফুজ্জামান চুন্নু, ঢাকা নগর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডল, ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান, গণপূর্ত বিভাগ -৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান, গণপূর্ত মেডিকেল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল হোসেন, গণপূর্ত ইডেন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সাত্তার, গণপূর্তের সংস্থাপন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী। তবে মুল ও বিশ্বস্ত ক্যাশিয়ার হলেন প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার (প্রশাসন ও প্রটোকল) মোহাম্মদ মাহফুজুল আলম। বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে গণপূর্তের নিয়োগ সিন্ডিকেটের দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য পরিনত করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. শহীদুল আলম যোগাযোগ করা হলে তিনি সউদী আরবে ওমরা পালন করতে গিয়েছেন এ জন্য বক্তব্য দিতে পারবেন না।

এ বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমে বলেন, আমাকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. শহীদুল আলম স্যার যা লিখে দিয়েছেন তা আমি স্বাক্ষর করে গত ডিসিম্বের মাসে শাহবাগ থানায় সাধারণ জিডি করেছি।এ কাগজ স্যারে কাছে আছে। এর বেশি বলতে পারবো না। আপনী স্যারকে বলেন।

জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৭টি পদে মোট ৪৪৯ জনকে নিয়োগের জন্য ২০২২ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে পদগুলোয় যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে আবেদন করতে বলা হয়। অনলাইনে পদগুলোর জন্য আবেদন শুরু ১৭-০৪-২০২২ থেকে ৩১-০৫ -২০২২ পর্যন্ত। গণপূর্ত অধিদপ্তরে ৪৪৯ পদের লিখিত পরীক্ষা ২৩ ডিসেম্বর। ৪৪৯ পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ১৪ থেকে ১৬তম গ্রেডের ৭ ধরনের পদে এসব জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। ১৯ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৪ থেকে ১৬তম গ্রেডে ৭ ক্যাটাগরির ৪৪৯টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে ৮ ও ৯ এপ্রিল ২০২২ তারিখে কয়েকটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এসব পদের লিখিত পরীক্ষা হবে ২৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায়। ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে।

কোন পদে কত জনঃ স্টেনোটাইপিস্ট কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ২৪ জন, জরিপকারী পদে ১৪ জন, নকশাকার পদে ১০৬ জন, কার্যসহকারী পদে ২৩ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে ১৮০ জন, হিসাব সহকারী পদে ১০১ জন এবং ট্রেসার পদে ১ জন নেওয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধা /শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে বয়স ৩২বছর বলা হয়। 

বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ অনুযায়ী সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে যুগোপযোগী প্রকৌশল প্রযুক্তির সর্বোত্তম প্রয়োগের মাধ্যমে টেকসই, পরিবেশ বান্ধব ও নিরাপদ সরকারি দপ্তর, বাসভবন ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ এবং সরকারী অবকাঠামো সমূহের সুদক্ষ পরিচালনা ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা গণপূর্ত অধিদপ্তরের মুল লক্ষ্য উদ্দেশ্য হলেও কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারনে স্বনামধণ্য এ প্রতিষ্ঠানটির সুনাম আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাড়িয়েছে। বর্তমান সরকারে আমল থেকে দায়িত্ব নিয়েছেন তখন থেকেই এই অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ ও বদলি বানিজ্য, ঢাকায় প্রাইজ পোষ্টিয়ে মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্য, ঠিকাদারি কাজে ঘুষ লেনদেন ও বিল পেমেন্টে কমিশন আদায়সহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি শুরু হয়। বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে গণপূর্ত অধিপ্তরে এখন ঘুষের হাট বসিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করলেও জুন ক্লোজিংকে সামনে রেখে সারাদেশের বিভিন্ন নির্বাহী প্রকৌশলীদের মাধ্যমে ওপেন শতশত কোটি টাকার ওপেন লেনদেন শুরু হয়েছে তাদেও আস্তাভাজন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।

দায়িত্ব পালনের দুই বছরেই বদলি, পুনর্বদলির ও পদায়নের রেকর্ড গড়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার। প্রায় সহস্রাধিক এ সংক্রান্ত ফাইলে সই করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়ন হয়েছে। এত অল্প সময়ে রেকর্ডসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়ন এর আগে কখনো হয়নি। উপসহকারী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে শুরু করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, বাদ যাননি কেউই। বদলি-পদায়ন স্বাভাবিক বিষয় হলেও গণপূর্তে এ নিয়ে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। আক্রোশের শিকার হচ্ছেন অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এরই মধ্যে বদলি, পুনর্বদলির ও পদায়ন নিয়ে বিধিমালা তৈরির জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়ন নিয়ে রেকর্ড সৃষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার গণমাধ্যমে বলেন, এর কোনোটি বাস্তবতা, কোনোটি মানবিক আর কোনোটি তদবিরের কারণে হয়েছে। বদলি-পদায়নের ফাইলে সই করে বাধার মুখেও পড়েছেন প্রদান প্রকৌশলী শামীম আখতার। অনেক ফাইলে সই করে আবার চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত তা স্থগিত করতেও বাধ্য হয়েছেন। বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়নের নজির সৃষ্টি করায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আদেশ জারির মাধ্যমে বদলি-পদায়নের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে।

২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অধিশাখা-১-এর যুগ্ম সচিব শেখ নূর মোহাম্মাদের সই করা চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হয়রানিমূলক বদলিসংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। সমন্বয়হীন ভাবে এ ধরনের বদলি করায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয় থেকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত গণপূর্ত অধিদপ্তরের তার নিয়ন্ত্রণাধীন সব ধরনের বদলি বা পদায়নসংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। করা হয় গত কয়েক মাস।
গত ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর গণপূর্তে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়ে ওই মাসেই ৭২ জনের বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়ন করেন শামীম আখতার।

২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ৩১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৩, মার্চে ৭৮, এপ্রিলে ১, মে মাসে ৬, জুনে ৪৬, জুলাইয়ে ৮, আগস্টে ৩৮, সেপ্টেম্বরে ৩৫, অক্টোবরে ৭১ জন এবং নভেম্বরে ২১৪ জনের বদলি এবং ডিসেম্বরে ৪৭ জনকে বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়ন করেন তিনি।

গত বছরের জানুয়ারি মাসে ২৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৫৮ জন, মার্চে ৩৯ জন, মে মাসে ২৬ জন, জুনে ২০, জুলাই মাসে ১৫, আগস্টে ৪, সেপ্টেম্বরে ৩৫ জন, অক্টোবরে ৩৫ জন, নভেম্বরে ৪৩ জন এবং ডিসেম্বরে ৫৯ জনের বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়ন হয়। তথ্য বলছে, প্রথম শ্রেণির (ক্যাডার-নন ক্যাডার) ৯৪২ কর্মকর্তাসহ গণপূর্তর মোট জনবল ১৩ হাজার ৮৩৪ জন। ১৪ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল), ২ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ইলেকট্রো মেকানিক্যাল), ৪৬ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছাড়া প্রত্যেকেই বদলি- পুনর্বদলির আতঙ্কে আছেন। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বদলি, পুনর্বদলি ও পদায়নের এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের।

গত ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রকৌশলী শামীম আখতারের অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠায়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৩ আবদুল্লাহ আল খায়রুমের সই করা ওই চিঠির শিরোনাম হলো ‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং এইচবিআরআইর (হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট) সাবেক মহাপরিচালক লেবাসধারী ভন্ডপীর মো. শামীম আখতারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে।

চিঠিতে বলা হয়, এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠির সঙ্গে ১০ পাতার অভিযোগ সংযুক্ত আছে। অভিযোগে বলা হয়,‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার। তার আরেকটি পরিচয়ও রয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের ভূঁইগড়ের হাকিমাবাদ খানকা-ই-মোজাদ্দেদিয়ার পীর সাহেব। কম্বোডিয়াসহ বাংলাদেশের কয়েকটি স্থানেও রয়েছে এ খানকার শাখা। পীরের মুরিদরা গণপূর্ত অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার। বাস্তবায়ন করছেন মোটা অঙ্কের উন্নয়ন কাজ। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থা থেকে সুযোগ-সুবিধাও আদায় করে নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে শামীম আখতারের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়।

২ জানুয়ারি গঠন করা ওই কমিটির আহ্বায়ক হন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আশফাকুল ইসলাম বাবুল। অন্য দুই সদস্য হলেন যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান ও যুগ্ম সচিব মো. জহিরুল ইসলাম খান। ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয় তদন্ত কমিটিকে। সে তদন্ত রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে গায়েব। উল্টো দিকে অভিযোগকারীকে পদোন্নতি দিয়ে অভিযোগ প্রত্যহার করা হয়েছে।

আরও সংবাদ পড়ুন।

বরিশাল গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে বরখাস্ত

আরও সংবাদ পড়ুন।

গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের অনিয়ম ও দূর্নীতি

আরও সংবাদ পড়ুন।

গণপূর্ত অধিদফতরের সিন্ডিকেট! ৪ প্রকৌশলীর অনিয়ম ও দুর্নীতি!

আরও সংবাদ পড়ুন।

গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ

আরও সংবাদ পড়ুন।

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সেগুনবাগিচা কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

গণপূর্তের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি হলে কঠোর ব্যবস্থা – গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top