ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশিদের সাজা বহাল

Picsart_22-10-24_09-08-24-860.jpg

ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশিদের সাজা বহাল

অপরাধ প্রতিবেদকঃ ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশিদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় মো. বজলুর রশিদকে গত বছরের ২৩ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকায় ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটটি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন ঐ কারা কর্মকর্তা। ঐ আপিল খারিজ করে বিশেষ জজ আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রাখে হাইকোর্ট।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, আপিলকারী বজলুর রশিদ তার লিখিত ও মৌখিক সাক্ষীর কোথাও ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ঋণের আবেদন করেছেন এমন তথ্য প্রদান করেননি। বরং জেরায় তিনি বলেছেন, আমি রূপায়ণ হাউজিং লিমিটেডকে নগদ টাকা দিয়েছি। অথচ তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, ব্যাংক ঋণ ছাড়া ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারবেন না। অথচ ব্যাংক ঋণের জন্য তিনি কোনো দরখাস্তই করেননি। অর্থাৎ আপিলকারী অপরাধের দায় থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য আদালতে একের পর এক মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করেছেন।

হাইকোর্ট বলেছে, কোনো ক্রেতা ফ্ল্যাট নির্মাণ কোম্পানিকে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফ্ল্যাটের মূল্য বা কিস্তি পরিশোধ করেন। আপিলকারী স্বীকারও করেছেন তার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অথচ তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যাংক চেকে বা পে-অর্ডারে প্রদান না করে কেন নগদে পরিশোধ করলেন? এর একটাই উত্তর তা হলো উক্ত টাকা বৈধ না হওয়ায় তিনি ব্যাংকে রাখতে পারেননি।

মায়ের নামে সম্পত্তি কিনে নিজের নামে গ্রহণ

নথি পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট বলেছে, বজলুর রশিদের মাতা নূরজাহান বেওয়ার কোনো আয় ছিল না। ছিল না কোনো আয়কর নথিও। যে দলিলগুলো দ্বারা তিনি সম্পদের মালিক হয়েছেন সে সময় তার আয় না থাকায় প্রশ্ন ওঠে উক্ত সম্পত্তি উনি কীভাবে ক্রয় করলেন? প্রকৃতপক্ষে বজলুর রশিদ তার অবৈধ পন্থায় অর্জিত টাকা দিয়ে উক্ত দলিলগুলোর মাধ্যমে মায়ের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেন। পরবর্তীকালে সেসব সম্পত্তি নিজের নামে হেবামূলে গ্রহণ করেছেন আপিলকারী।

আপিলকারীর এহেন কর্মনীতি নৈতিকতারও পরিপন্থী। কারণ অবৈধ অর্থ বৈধ করার নিমিত্তে গর্ভধারিণী মায়ের নাম ব্যবহার করেছেন, যা এক জন সন্তানের নিকট কোনো ভাবেই কাম্য নয়।

সশ্রম কারাদণ্ড সঠিক হয়নি

দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় আসামিকে দণ্ড ও জরিমানা করেছে বিশেষ জজ আদালত। এই রায় ও দণ্ডাদেশ সঠিক এবং আইনানুগ হয়েছে। তবে আপিলকারীকে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পরিবর্তে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া আইনগত ভাবে সঠিক হয়নি বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত দণ্ডাদেশ সংশোধন করে সশ্রম কারাদণ্ডের পরিবর্তে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়।

আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আপিলকারীর পক্ষে মো. মাসুদ-উল হক ও মোহাম্মদ হুমায়ন কবির শুনানি করেন।

৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। কারা ক্যাডারের ১৯৯৩ ব্যাচের কর্মকর্তা বজলুর রশিদ ঢাকায় কারা সদরদপ্তরে দায়িত্ব পালন করেন।

যদিও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে দুদক।

আরও সংবাদ পড়ুন।

ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বহাল

আরও সংবাদ পড়ুন।

নরসিংদী জেলা কারাগারে ঘুষের অভিযোগ – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

কারা অধিদপ্তরের পাঁচ কারা-উপমহাপরিদর্শককে বদলি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top