পোশাক রপ্তানির আড়ালে ১০ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৩০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার।
সাগর চৌধুরীঃ অভিনব কায়দায় রপ্তানি জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্যচালান বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসিত হচ্ছে না এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিল অব এক্সপোর্ট জালিয়াতি পূর্বক অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করেছে এবং বিল অব এক্সপোর্টের ২৪ নং কলামে নমুনার কোড ২০ ব্যবহার করেছে। এক্ষেত্রে কোনো অর্থ দেশে প্রত্যাবাসিত না হয়ে সমুদয় রপ্তানি মূল্য বাবদ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি এবং বিধিবহির্ভূত কোড ব্যবহারের মাধ্যমে রপ্তানির একাধিক ঘটনা সম্প্রতি কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক উদঘাটিত হয়েছে।
বর্তমানে চলমান অনিয়মের তদন্তকালে ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিগত সময়ে ১২৩৪টি পণ্যচালানে এমন জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানি সম্পন্ন ১২৩৪ টি চালানের বিপরীতে পণ্যের পরিমাণ ৯১২১ মেট্রিক টন যার প্রত্যাবাসন যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভাব্য পরিমাণ ৩,৫৩,৬৬,৯১৮ মার্কিন ডলার (৩০০ কোটি টাকা প্রায়)।
প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায়
দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানসমূহ টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, পোলো শার্ট, প্রভৃতি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব, নাইজেরিয়া প্রভৃতি দেশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি দেখিয়ে অর্থ পাচার করেছে।
এই ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মূলত বিল অব
এক্সপোর্টে Nature of Transaction এ কোড ২০ ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে।
১০ (দশ)টি প্রতিষ্ঠানের বিল অব এক্সপোর্টসমূহ পর্যালোচনায় বিল অব এক্সপোর্ট ও ইএক্সপিতে বর্ণিত তথ্যের মধ্যে মিল পাওয়া যায় নি।
বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সাউথ ইস্ট ব্যাংক হতে প্রাপ্ত তথ্য মতে, উল্লিখিত ১০ (দশ) প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই উক্ত ব্যাংকে লিয়েনকৃত নয়।
প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সাথে উক্ত ব্যাংক সম্পর্কিত নয় বিধায় উক্ত ব্যাংকের মাধ্যমে বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সেলস কন্ট্রাক্ট বা ইএক্সপি এর রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসিত হয়নি বা হওয়ার কোনো সুযোগও নেই।
প্রজ্ঞা ফ্যাশন লমিটিডেঃ (বিআইএন-0012২৪৭৯৬), আশুলিয়া, সাভার নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে ৩৮৩ টি এবং ২০২০ সালে ৮টি সহ ৩৯১ টি রপ্তানি চালানের মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৩০৮০ মে. টন টি-শার্ট, প্যান্ট, ট্যাংক-টপ, পাজামা প্রভৃতি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
পণ্যচালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায়
1,08,৪১,৬৯৯ মার্কিন ডলার (১২,০৪,৬০,২৪৫ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট এম এ জে শিপিং কর্পোরেশন দেওয়ানহাট, চট্টগ্রাম: রিয়াংকা ইন্টারন্যাশনাল খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম; এ এন্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আগ্রাবাদ, সি/এ চট্টগ্রাম জে জে
এসোসিয়েটস্ সুগন্ধা, চট্টগ্রাম ও এক্সপ্রেস ফরোয়ার্ডারস, বায়োজিদ বোস্তামী, চট্টগ্রাম।
ফ্যাশন ট্রেডঃ (বিআইএন- ১৮১৪১১১২৫৭৬), গুলশান, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ৭৩ টি, ২০১৯ সালে ১১৬টি, ২০১৮ সালে ৫৭টি সহ ২৪৬ টি রপ্তানি চালানে জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ১৭৭৯ মে. টন টি-শার্ট, প্যান্ট, ট্যাংক-টপ, পাজামা প্রভৃতি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ফিলিপাইন, নাইজরেয়িা, সঙ্গিাপুর, অস্ট্রলেয়িা, থাইল্যান্ড, সুদান, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা
হয়েছে।
পণ্যচালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৮০,৫১,৬৪০ মার্কিন ডলার (৬৮,৩৫,৮৪,২৩৬ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট এম এ জে শিপিং কর্পোরেশন দেওয়ানহাট, চট্টগ্রাম, রিয়াংকা ইন্টারন্যাশনাল খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম, এ এন্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আগ্রাবাদ, সি/এ চট্টগ্রাম ইত্যাদি।
এম.ডি.এস ফ্যাশনঃ (বিআইএন-১৮০৩১005379), উত্তরা, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ১৮২টি রপ্তানিচালানে জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ১৩৭৬ মে. টন টি-শার্ট। তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়,অধিকাংশ পণ্যচালান সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, কাতার ও ফিলিপাইন রপ্তানি করা হয়েছে।
পণ্যচালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৫১,৮২,৫৮৬ মার্কিন ডলার (44,00,01,5৫১টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট এ এন্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আগ্রাবাদ, সি/এ চট্টগ্রাম, জি আর ট্রেডিং কর্পোরেশন, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম, পান বেঙ্গল এজেন্সী লিঃ খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম
ইত্যাদি।
হংকং ফ্যাশনস লিমিটেডঃ (বিআইএন-১৮০৩১০০৫৩৭৭), টশি, গাজীপুর নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ১৫৬টি
রপ্তানিচালানে জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ১১৬১ মে. টন টি-শাট রপ্তানি করেছে।
তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালান সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, কাতার, নাইজেরিয়া, কুয়েত,
মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
পণ্যচালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৪৭,৮৯,৬০৬ মার্কিন ডলার (৪০,৬৬,৩৭,৫৮৬ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট এম এ জে শিপিং কর্পোরেশন দেওয়ানহাট, চট্টগ্রাম, পান বেঙ্গল এজেন্সী লিঃ খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম, পরাগ এসএমএস লিঃ আগ্রাবাদ বা/এ, চট্টগ্রাম, রিয়াংকা ইন্টারন্যাশনাল খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও মেসার্স এ কে এন্টারপ্রাইজ সদরঘাট রোড, চট্টগ্রাম।
থ্রি-স্টার ট্রেডিংঃ(বিআইএন-002708434-0101), বনানী, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ১২০টি রপ্তানিচালানে জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৮১৬ মে. টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালান মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনস, কানাডা মিসর প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। পণ্যচালানগুলোতে
রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৩০,৫৩,১০৮ মার্কিন ডলার (২৫,৯২,০৮,৮৬৯ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট জি আর ট্রেডিং কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম, পান বেঙ্গল এজেন্সী লিঃ খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কে আর এস সি এন্ড এফ লিঃ, ফকিরহাট ও চট্টগ্রাম এ এন্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আগ্রাবাদ, সি/এ চট্টগ্রাম।
ফরচুন ফ্যাশনঃ (বিআইএন-17031047942), মিরপুর, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ৫৯টি রপ্তানিচালানে জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৪৩৫ মে. টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে।
তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি
পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালান সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনস, মিশর, কানাডা প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
আলোচ্য পণ্য চালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ১৫,২৪,৮১৩ মার্কিন ডলার (১২,৯৪,৫৬,৬২৩ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট রিয়াংকা ইন্টারন্যাশনাল খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম, এ এন্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আগ্রাবাদ, সি/এ চট্টগ্রাম ও এম/এস এ.কে এন্টারপ্রাইজ ২০০৬ সদরঘাট রোড, চট্টগ্রাম।
অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডঃ(বিআইএন-০০০৭৩১৯২২), কচুক্ষেত, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ৪২টি রপ্তানিচালানের মাধ্যমে অর্থ
পাচার করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ১৯৫ মে. টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালান সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলজিয়াম, নাইজেরিয়া, জর্জিয়া, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
পণ্যচালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৮,৭৭,৪৭০ মার্কিন ডলার (৭,৪৪,৯৭,২০৩ টাকা প্রায়)।
এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট পান বেঙ্গল এজেন্সী লিঃ খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম, এ এন্ড জে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আগ্রাবাদ, সি/এ চট্টগ্রাম জে জে এসোসিয়েট, সুগন্ধা, চট্টগ্রাম, জি আর ট্রেডিং কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম ও এন এইচ কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।
পিক্সি নিট ওয়্যারস লিমিটেডঃ (বিআইএন-001739515-0102), টঙ্গি, গাজীপুর নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ২০টি রপ্তানিচালানে জালিয়াতি
করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়।
রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ১৭০ মে. টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালান সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, কুয়েত, ফিলিপাইনস, নাইজেরিয়া, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এই পণ্য চালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ৫,৯৬,২৮২ মার্কিন ডলার (৫,০৬,২৪,৩৪১ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট জি আর ট্রেডিং কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম ও এন এইচ কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।
স্টাইলাইজ বিডি লিমিটেডঃ(বিআইএন-০০২৫৭১৭৭৫-0208), শাহবাগ, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ১০টি রপ্তানিচালানে জালিয়াতি
করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়।
রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৬৬.৮ মে. টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালান ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়া, স্লোভেনিয়া, পানামা প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
এই পণ্যচালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ২,৫৫,৬২৯ মার্কিন ডলার (2,17,02,902 টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি
এন্ড এফ এজেন্ট জি আর ট্রেডিং কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম, পান বেঙ্গল এজেন্সী লিঃ খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও কে আর এস সি এন্ড এফ লিঃ, ফকিরহাট,
চট্টগ্রাম।
ইডেন স্টাইল টেক্সঃ (বিআইএন-০০২২৯৯২৮৪-০১০১), খিলক্ষেত, ঢাকা নামীয় প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালে ৮টি রপ্তানিচালানে জালিয়াতি করেছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। রপ্তানিকৃত পণ্যচালানগুলোতে ৪২ মে. টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। তাছাড়া উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ পণ্যচালানগুলো টোঙ্গা, ওমান, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
এই পণ্য চালানগুলোতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রায় ১,৯৪,০৮৫ মার্কিন ডলার (১,৬৪,৭৭,৮১৬ টাকা প্রায়)। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি জালিয়াতির সাথে জড়িত সি
এন্ড এফ এজেন্ট জি আর ট্রেডিং কর্পোরেশন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম; পান বেঙ্গল এজেন্সী লিঃ খাতুনগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও কে আর এস সি এন্ড এফ লিঃ, ফকিরহাট,
চট্টগ্রাম।
অর্থ পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিল অব এক্সপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে রপ্তানিকৃত পণ্য হলো টি-শার্ট এবং প্রতি পিসের ওজন দেখানো হয়েছে ৫০০/৮০০/১০০০ গ্রাম বা তারও বেশি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রতি কেজি নিট ফেব্রিক্স দিয়ে কমপক্ষে ৩-৬ টি Long Sleeve I Size টি-শার্ট হয়ে থাকে। এমতাবস্থায় প্রতিটি টি-শার্টের গড় ওজন ন্যূনতম ২৫০ গ্রাম ধরে রপ্তানিকৃত টি শার্টের সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে। তাছাড়া কিছু কিছু পণ্যচালানে রপ্তানি পণ্যের মূল্য খুবই কম ঘোষণা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সমসাময়িক রপ্তানি চালানের সমজাতীয় পণ্যের মূল্য বিবেচনায় নিয়ে সম্ভাব্য রপ্তানিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট বিল অব এক্সপোর্টে অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করেছে। তাছাড়া রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো Nature of Transaction এ বিশেষ রপ্তানির জন্য প্রযোজ্য কোড ২০ ব্যবহার করেছে অথচ তাদের কারো ক্ষেত্রেই উক্ত CPC Code প্রযোজ্য নয়। সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো পারস্পারিক সহযোগিতা ও যোগসাজশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সর্বমোট ৩,৫৩,৬৬,৯১৮ মার্কিন ডলার (৩০০ কোটি টাকা প্রায়) পাচার করেছে।
ইএক্সপির কার্যকারিতা না থাকায় বৈধ পন্থায় বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার সুযোগ নেই অর্থাৎ এক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং সম্পন্ন হয়েছে।
এই ১০ টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ইতোপূর্বে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক ৪টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একই পন্থায় ৩৭৯ কোটি টাকা পাচারের ঘটনা উৎঘাটিত হয়।
প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং অনুসন্ধানসহ ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অধিকন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর BIN (Business Identification Number) এবং সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্টের AIN স্থগিত করা হয়েছে।
ঢাকা কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মোঃ শামসুল আরেফিন খানের পাঠানো এক বার্তায়, এই বিষয়ে গণমাধ্যমে জানানো হয়।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ভ্যাট প্রদান সহজীকরণে কাজ করে যাচ্ছে এনবিআর – আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম