তথ্যের অভাবে অর্থ পাচারকারীদের ধরা যাচ্ছে না – দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ
সুনির্দিষ্ট তথ্যের অভাবে অর্থ পাচারকারীদের ধরা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, বিদেশে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়ায় পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোটার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র্যাক) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়েকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অর্থপাচারের ব্যাপারে কমিশনে যেসব অভিযোগ আসে, তার ভিত্তিতে আমরা কাজ করি। মানিলন্ডারিং এর বিষয়ে আমাদের কাছে ডকুমেন্টরি তথ্য আসতে হয়। ডকুমেন্টরি তথ্যের উপর ভিত্তি করে মামলা করলে মামলায় হারার কোনো সুযোগ থাকে না। একারণে কমিশন ইতিমধ্যে অর্থ পাচার সংক্রান্ত যে মামলা করেছে সেগুলোতে সাফল্য এসেছে।
তিনি আরো বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে- মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত ডকুমেন্ট এবং তথ্য পাওয়াই এখন আমাদের প্রধান অন্তরায়। দেশে ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিকভাবেও আমাদের কাছে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ আসে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট ফোরামে স্বাক্ষর করেছি। এরপরও বিদেশে অর্থ পাচারের ব্যাপারে সময় মতো সব দেশ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি না। অনেক দেশ বলে যে, মামলা হয়েছে কিনা। মামলা হলে তারা তথ্য দেবে। তিনি বলেন, এখানেই সংকট, সঠিক মামলা করতে হলে আগে ডকুমেন্টারি তথ্য দরকার। আগে ডকুমেন্টারি তথ্য না পাওয়ায় মামলা করলে সেটা দুর্বল মামলা হচ্ছে। এমন নানান ধরনের সমস্যা আছে। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্য কমিশন নতুন করে পরিকল্পনা করছে। তবে দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেই বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী, ঘুষ বা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করার ঘটনা দুদক অনুসন্ধান ও তদন্ত করে থাকে। বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ বিদেশে পাচারের ঘটনা তদন্ত করে এনবিআর। আর হুন্ডি বা অন্য কোনো উপায়ে অর্থ পাচার হলে তা পুলিশের সিআইডি তদন্ত করে।