সত্য কাহনঃ প্রতারকরা যখন জনতার আদালতে – মোহাম্মদ আবদুল মতিন

PicsArt_06-06-09.45.13.jpg

সত্য কাহনঃ প্রতারকরা যখন জনতার আদালতে –
মোহাম্মদ আবদুল মতিন

প্রতারণা, জুলুম, হত্যা, ধর্ষণসহ নানা অন্যায়ের পর অপরাধীরা যখন ধরা পড়ে তখন সাধারণত তিন ধরণের বিচারের সম্মুখীন হয়ে থাকে। আর ধরা না পড়লে শুধু এক ধরণের বিচার। তিন ধরণের বিচারের মধ্যে প্রথম হলো জনগণের বিচার, দ্বিতীয় হলো দেশে প্রচলিত আইনের বিচার এবং সর্বশেষ মহান আল্লাহর আদালতের বিচার। ধরা না পড়লে শুধু আল্লাহ তা’আলার বিচারের অপেক্ষা।

পাবলিক জার্নালিজম এবং জনতার আদালত বলে একটি কথা আছে। অনেক অন্যায়ই প্রথমে পাবলিকের হাতে ধারা পড়ে, এরপর সাংবাদিকদের কাছে আসে এবং মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। জনগণের কাছে ধরা না পড়লে ভুক্তভোগীরা সংবাদটি প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের কাছে আসে। এরপর বিষয়টি দেশের প্রচলিত আইনের আদালতে গড়ায়।

প্রতারক ও জুলুমবাজরা তাদের ক্ষমতার দাপট, অবৈধ অর্থের দাপট, তাদের পোষা বাহিনীর দাপট ও তাদের নিয়োজিত উকিল-ব্যারিস্টারের কুটকৌশল ও আইনের ফাঁকফোকরে অনেক সময় দেশের প্রচলিত আদালত থেকে পার পেয়ে যায়। কিন্তু জনতার আদালত থেকে তারা রেহাই পায়না। জনগণ এই প্রতারক জানোয়ারদেরকে ঘৃণার থুথু ফেলতে থাকে।

সিডনির জনগণও এই প্রতারকদের অতীতের ইতিহাস ও বর্তমান প্রতারণার কথা জেনেছে এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে বয়কট ও ঘৃণার থুথু ফেলা শুরু করেছে। আর প্রতারকদের যারা সহযোগিতা করছে, প্রতারকদের পক্ষে যারা সাফাই গেয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ওরাও কিন্তু জনগণের আদালত থেকে রেহাই পাবেনা। সিডনির সচেতন সমাজ ওদেরকও ঘৃণার থুথু ফেলছে।

আর সর্বশেষ হলো মহান আল্লাহ তা’আলার আদালত। তিনি হলেন আল-হাকিম, আল-হাকাম ‘সত্য ও ন্যায় বিচারক’ এবং তিনি হলেন আল-মুনতাক্বিম ‘কঠোর প্রতিশোধ গ্রহণকারী’। আল্লাহর আদালত থেকে কেউ রেহাই পাবেনা। আল্লাহর আদালতে বিচারের পর ‘জাহান্নাম সেদিন উচ্চস্বরে ডাকবে তাদের, যারা ন্যায় থেকে দূরে সরে গিয়েছিল, যারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, যারা অন্যায়ভাবে ধনসম্পত্তি গড়েছিল, যার প্রতারকদের সহযোগিতা করেছিল এবং যারা নানাভাবে অন্যায় ও জুলুম করেছিল’।

প্রতারকরা প্রতারণা করে বাঁচার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে এবং পূর্ব থেকেই কিছু কৌশল তৈরী করে রাখে। বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমরা দেখি, অনেক ভূমি দস্যু ও কালো টাকার মালিকরা এখন মিডিয়ার মালিক। এটা হলো প্রতারণা করে বাঁচার সহজ একটি উপায়। এই সিডনিতেও এর ব্যতিক্রম নেই। এখানেও প্রতারকরা মিডিয়ার মালিক।

দু’দিন আগে আমরা দেখেছি, ‘এক মিডিয়া কর্মী ও তথাকথিত রাজনীতিবিদ’ প্রতারকদের সাফাই গেয়ে আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়ে বিভিন্নাভাবে প্রচার করেছেন। পোস্টটির জনপ্রিয়তা দেখানের জন্য নিজের অন্য একটি পেইজে তিনি একাই অর্ধশতাধিকবার শেয়ার করেছেন। লেখাটি শেয়ারের জন্য আবার প্রতারকদের একজন বিভিন্ন মানুষকে ফোনের মাধ্যমে অনুরোধ করে শেয়ারের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতারকদের সাফাই গাওয়া পোস্ট শেয়ার করাও অন্যায় ভেবে অনেকে আবার শেয়ার ডিলেট করে দিয়েছেন।

সিডনির সচেতন জনগণ মুচকি হেসে বলছেন, এই লেখাটি অন্ধকে হাইকোর্ট দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। যিনি লিখেছেন আমি কিন্তু তাকে দোষারূপ করছিনা।

তিনি ওই প্রতারকদের মিডিয়ায় কাজ করছেন, তাকে যা বলা হয়েছে চাকরি বাঁচানো এবং রুটি-রুজির জন্য তিনি তা লিখেছেন। তিনি বিচার বিবেচনা করে লিখেননি।

তাকে দিয়ে হয়তো ভবিষ্যতে আরো লেখানো হবে, তিনি লিখবেন, এধরনের লেখাই তার পেশা। অতীতেও তিনি এরকম লিখেছেন। তাতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। তবে বিবেকবান সাংবাদিকদের দিয়ে ওই প্রতারকরা কখনোই এধরণের লেখাতে পারবেননা। চাকরি যাবে তবুও তারা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবেননা।

সত্য কাহন থেকে আজ বিদায় নিচ্ছি। সত্য ঘটনা নিয়ে আবার হাজির হবো ইনশাআল্লাহ। আরো অনেক ভুক্তভুগী আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। তারা মিডিয়ার মুখামুখি হবেন। তখন প্রতারকদের মুখোশ এবং তাদেরকে যারা সহযোগিতা করছেন তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top