প্ল্যান করতে হবে দীর্ঘ মেয়াদী – শাহানা সিরাজী

PicsArt_05-08-12.33.53.jpg

প্ল্যান করতে হবে দীর্ঘ মেয়াদী – শাহানা সিরাজী

হিটলার কেন ইহুদী নিধন করেছিলো- এ প্রশ্ন আজো বিতর্কিত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানীর পরাজয়ের হন্য হিটলার ইহুদীদের দায়ী করে। তার ধারণা ইহুদীরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করায় জার্মান হেরেছে। পরাজিত জার্মানের ইপর যে সব শর্থ আরোপ করা হয়েছিলো তা যে কোন জাতির জন্য লজ্জাজনক। এতা বোঝা জার্মানীর উপর চাপিয়ে দিয়েছিলো যে তখনই নির্ধারিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতেই হবে। এর নায়ক হবে হিটলার। কারণ হিটলার মারাত্মক রকম দেশপ্রেমিক।

যখন যুদ্ধে জার্মানীরা প্রাণ দিচ্ছিলো ইহুদিরা তখন ব্যবসা বাণিজ্য করে রাতারাতি অর্থের এবয় ক্ষতার মালিক হয়ে যায়। যার হাতে অর্থ আছে ক্ষমতা তার কাছে অটো চলে যায়। ইহুদীদের বড়োপুঁজি তারা সৎ এবং শিক্ষিত। যেখানে খোদ আমেরিকার নাগরিক সেকেন্ডারি পাশের পর আর লেখাপড়া করতে চায় না সেখানে ইহুদীরা বিশ্ববিদ্যালয় দখর করে আছে। চলূন তার একটা নমুনা দেখে আসি-ইহুদীরা মার্কিন জনসংখ্যার মাত্র ২%, আর পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.২%।অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতি ৫০০ জনে একজন ইহুদী!কিন্তু জনসংখ্যার দিক দিয়ে ঢাকা শহরের কাছাকাছি হলেও বিশ্বে ইহুদি সম্প্রদায় থেকে যুগে যুগে বেরিয়ে এসেছে অসংখ্য প্রতিভাবান ব্যক্তি।প্রধান ধর্মগুলোর পর পৃথিবীতে যে মতবাদটি সবচেয়ে বেশী প্রভাব ফেলেছে সেই কমিউনিজমের স্বপ্নদ্রষ্টা কার্ল মার্কস ইহুদি সম্প্রদায় থেকে এসেছেন।বিশ্বের মানুষকে মুগ্ধ করে রাখা যাদু শিল্পি হুডিনি ও বর্তমানে ডেভিড কপারফিল্ড এসেছেন একই কমিউনিটি থেকে।এসেছেন আলবার্ট আইনস্টাইনের মত বিজ্ঞানী, যাকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলা হয় আর প্রফেসর নোয়াম চমস্কি – র মত শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক যাকে প্রদত্ত ডক্টরেটের সংখ্যা আশিটির ও বেশি।
এর অন্যতম কারণ সাধারণ আমেরিকান রা যেখানে হাইস্কুল পাশকেই যথেষ্ট মনে করে সেখানে আমেরিকান ইহুদীদের ৮৫% বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। আমেরিকান নোবেল বিজয়ীদের মোটামুটি ৪০% ইহুদী অর্থাৎ নোবেল বিজয়ী প্রতি চার থেকে পাঁচ জনের একজন ইহুদী।

আমেরিকার অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসররা ইহুদী।হতে পারে ইহুদীরা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ, কিন্তু আমেরিকান রাজনীতিতে তাদের প্রভাব একচেটিয়া। আমেরিকার ১০০ জন সিনেটরের ১৩ জন ইহুদী।এর চেয়ে ভয়ংকর তথ্য হল ইহুদীদের সমর্থন ব্যতীত কোন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হতে পারেনা, কোন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেনা।আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্বাচনী ফাণ্ড বা তহবিল সংগ্রহ একটা বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। বারাক ওবামা বা ক্লিনটন নিজের টাকায় প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন না। ডোনেশান এবং পার্টির টাকায় তাদের নির্বাচনী ব্যয় মিটাতে হয়েছে। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী ফাণ্ড দাতা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে – AIPAC – America Israel Public Affairs Committee.

আমেরিকার এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকগুলো ইহুদীদের দখলে। ফলে আমেরিকার কেউ চাইলেও এদের কিছু করতে পারবে না। বরং জুইশ কমিউনিটি বা ইহুদি সম্প্রদাকে হাতে না-রাখলে ক্ষমতায় টেকা যাবে না। এসব কারণে শুধু জুইশ কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টে প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যেতে হয়।

আমেরিকার রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করে মূলতঃ কর্পোরেট হাউজগুলো। তারা প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত বানাতে পারে, এবং প্রেসিডেন্টকে সরাতে পারে। এসব কর্পোরেট হাউজগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় এদের মালিক কিংবা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কম্পানিগুলোর মূল দায়িত্বে থাকা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা চীফ এক্সজিকিউটিভ অফিসার, সিইও হলেন ইহুদী কমিউনিটির মানুষ।

এই কথা মাইক্রোসফটের ক্ষেত্রে যেমন সত্য তেমনি জাপানিজ কোম্পানি সনির আমেরিকান অফিসের জন্যও সত্য। প্রায় অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদে জুইশ আমেরিকানরা কাজ করছেন। জুইশ কমিউনিটির ক্ষমতাধর বিলিয়নেয়াররা মিলিতভাবে যে-কোনো ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারেন।

মিডিয়া জগতে যদি আপনি তাকান তাহলে দেখবেন;
CNN, AOL, HBO, Cartoon Network, New line cinema, Warner Bross, Sports illustrated, People – Gerald Levin – ইহুদী মালিক নিয়ন্ত্রিত। ABC, Disney Channel, ESPN, Touchstone pictures – Michael Eisner – ইহুদী মালিক নিয়ন্ত্রিত। Fox Network, National Geographic, 20th century Fox Rupert Murdoch – ইহুদী মালিক নিয়ন্ত্রিত।

Top 4 famous Newspapers of USA & their editors New York Times – Arthur Sulzberger
New York Post – Rupert Murdoch
Washington Post – K.M. Graham
Wall street journal – Robert Thomson
সব কয়টি খবরের কাগজ ই ইহুদী মালিক নিয়ন্ত্রিত।
আপনার প্রিয় মিডিয়া ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা Mark Zuckerberg পর্যন্ত একজন ইহুদী। আমেরিকার প্রভাবশালী অধিকাংশ টিভি-ই ইহুদিরা নিয়ন্ত্রণ করছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে।

যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর বেস্ট ১০০ জন ফুটবলারের কতজন ইহুদী? কিংবা পৃথিবীর বেস্ট ১০০ জন ক্রিকেটারের কতজন ইহুদী?
উত্তর হচ্ছে – একজন ও না।
কেন?
বছরের কিছু সময় টি টুয়েন্টি আর ফ্ল্যাশ মব, কিছু সময় আইপিএল আর চিয়ার্স লিডার, কিছু সময় ফিফা বিশ্বকাপ বা আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ, বাকি সময় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ আর স্প্যানিশ প্রিমিয়ার লীগ বা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ নিয়ে ব্যস্ত থাকা আমাদের মনের মধ্যে কী কখনো এই প্রশ্ন আসেনা? ক্যামনে আসবে ভাই, পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাল্গুন, চৈত্র সংক্রান্তি, থার্টি ফার্স্ট আছেনা? এত এত কাজের ভিড়ে এই ধরণের হাইপোথিটিকাল চিন্তা মাথায় আসবে ক্যামনে?

একটা ফুটবলের ব্যাস হয়ত ২০ – ৩০ সে.মি. বা একটা ক্রিকেট বলের ব্যাস আর ও কম হয়ত ১০ – ১২ সে.মি. ইহুদীরা বিশ্ববাসীকে ১০ – ৩০ সেন্টিমিটারের এই ফুটবল ক্রিকেটের বল নিয়ে ব্যস্ত রেখে ১২৮০০ কিলোমিটার ব্যাসের বেশ বড় একটা ফুটবল নিয়ে খেলছে – আর এই বড় ফুটবলটাই হচ্ছে পৃথিবী।

এবার ভাবুন ইহুদীদের শক্তি কোথায়?
মুসলমান এবং ইহুদীদের দশটি মিল দেখুন-

১. মুসলমান এবং ইহুদীর আদি পিতা এক জনই- জনাব ইব্রাহিম(আ)
২. মুসলমান দিনে ৫বার প্রার্থনা করে ইহুদদী ৩বার কিন্তু প্রার্থনা বাধ্যতামূলক।
৩. উভয়ই পুণরোত্থান ও শেষ বিচারের দিন মানে
৪.উভয়ই প্রাচীন সেমেটিক জাতি।
৫, নবী-রাসুলে বিশ্বাস এবং বেহেশত দোযখে বিশ্বাস
৬. খাদ্যাভাস। হারাম এবং হালাল খাবার্
৭.মনোথিজম- একমাত্র একজনই এ বিশ্বালোক সৃষ্টি করেছে। তার ইশারাতেই সব চলছে।
৮. ফেরেশতায় বিশ্বাস
৯. খ্রিস্টানকে রিজেক্ট করা
১০. উভয় জাতিই শান্তি চায়।
কিন্তু শান্তি নেই এ দুজাতির ভেতর। কারণ কি?
একেবারে সোজা হিসোব- রাজনৈতিক। কারণ যাদের এতো অর্থ বিত্ত তাদের একটি রাষ্ট্র নেই। তারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে লড়াই করছে শত শত বছর।

ইসলামিক থিওরিতে তারা অভিশপ্ত যে তাদের কখনো স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে না। দাজ্জাল আসার পর কেবল তারা রাষ্ট্র পাবে। মূল বা আদি কালো ইহুদীরা এ তথ্য জানে। সাদা ইহুদীদের বোম্বিং কর্মকান্ড তারা সাপোর্ট করে না। কারণ তারা জানে তাদের কিতাব তাদেরকে এ ম্যাসেজ দিয়েছে।

তাহলে কোন ইহুদী এতা সব ম্রাচাকার কান্ড ঘটাচ্ছে?

ইজরায়েলে যারা শাসন করে তারা মূলত ইউরোপীয় ইহুদী। এদেরকে বলা হয় আশকেনাজি জুইশ। এরা ইউরোপ থেকে এসে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে গেঁড়ে বসা ইহুদী।
কিছু আরব ইহুদী আছে, যারা আগে থেকেই ফিলিস্তিনে ছিল। আর কিছু অন্যান্য আরব দেশ থেকে এসেছে। এদেরকে বলা হয় মিজরাহি জুউশ। হিস্পানিক কিছু জুইশ আছে। তবে এলিট শ্রেণী হচ্ছে- আশকেনাজি জুইশ। এরাই মূলত জার্মান আর ফ্রান্স থেকে বিতাড়িত হয়ে ফিলিস্তিনীদের জমি দখল করেছে।

এরা অসম্ভব উগ্র, জেনোফোবিক এবং ধণী। ইজরায়েলের এলিট শ্রেণী হচ্ছে এরা। এদের কালচারের সাথে আরব ইহুদীদের কালচার কোনোভাবেই মিলেনা।
ইহুদী ধর্ম অনুযায়ী মেসিয়াহ (মুসলমানদের কাছে দাজ্জাল) না আসা পর্যন্ত ইহুদীদের জন্য আলাদা দেশ গঠন করা পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই অন্যান্য দেশের অর্থোডক্স ইহুদী এবং ইহুদী ধর্মগুরুগণ ইজরায়েলের বিরোধী। কারণ এই রাষ্ট্র ইহুদী ধর্মমতেও নিষিদ্ধ।

ধর্মীয় দেশ দাবী করলেও ইজরায়েল মূলত কোনো ইহুদী দেশ নয়, এটা একটা জায়োনিস্ট দেশ। সহজ ভাষায় বললে- জায়োনিজম হচ্ছে ইহুদী জাতীয়তাবাদের একটি পলিটিক্যাল টার্ম।

জায়োনিস্ট হওয়ার জন্য ইহুদী হওয়া শর্ত নয়। অর্থাৎ ইহুদী নন এমন ব্যক্তিরাও জায়োনিস্ট হতে পারেন। আবার ইহুদী মানেও জায়োনিস্ট নয়।
জায়োনিজমকে বাংলায় সম্ভবত ইহুদীবাদ বলা হয়। হিন্দু আর হিন্দুত্ববাদ যেমন এক নয়, অনেকটা সেরকম। ইহুদী ধর্মকে বলা হয় জুদাইজম।

তো জায়নবাদের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে স্টেট অব ইজরায়েল জাতির পিতা থিউডর হার্ৎজেল। যার স্বপ্ন ছিল তার মুভমেন্টের সমর্থক ইহুদীদের জন্য আলাদা একটা দেশ হবে এবং সেটা হবে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে।
সে আবার অবশ্য তার জীবদ্দশায় ইজরায়েল দেখে যেতে পারে নাই। তবে সে নানাভাবে চেষ্টা করেছিল।
ওসমানী খলীফা আব্দুল হামীদকে সে চিঠি লিখে প্রস্তাব দিয়েছিল যেন ইহুদীদের জন্য বাইতুল মোকাদ্দাসের কাছে কিছু জমি বরাদ্ধ দেয়া হয়।

বিনিময়ে তুরস্কের সব ঋণ পরিশোধ করে দেয়া হবে। খলীফা এই প্রস্তাব নাকচ করে দিলে ১৯০১ সালের মে মাসে থিওডর তার ক্লোজফ্রেন্ড পোলিশ ফিলিপ নিউলিন্সকিকে দিয়ে আবার প্রস্তাব পাঠায়। এবারে খলীফার জন্য বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ সহ নানা উপহারের প্রস্তাব দেয়া হয়।

উল্লেখ্য যে, অন্যান্য ব্যবসা এবং সুদের ব্যবসা করে ইহুদীরা অনেক আগে থেকেই প্রচুর সম্পদের মালিক। ব্যাংকিং কনসেপ্ট জিনিসটাই ইহুদীদের থেকে তাদের সুদের ব্যবসা থেকে এসেছে। এই কারণে তাদের সম্পত্তি ছিল অঢেল।

খলীফা আব্দুল হামীদ বলেছিলেন- ফিলিস্তিনের ভূমি আমার একার সম্পদ নয় যে আমি লিখে দেব। প্রতিটা মুসলমানের রক্তের ফোঁটাতে এর মালিকানা। আমি বেঁচে থাকতে সেটা হতে দিতে পারিনা।

খলীফা আব্দুল হামীদ মারা গেছেন, ওসমানী খেলাফত ধ্বংস হয়েছে। খেলাফত বিলুপ্ত হয়েছে। বৃটিশরা যুদ্ধে জিতেছে। থিউডর হার্ৎজেল মারা গেছে। কিন্তু তার আইডিওলজি দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে। তার স্বপ্নের দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বৃটিশরা ইউরোপ থেকে মার খাওয়া ইহুদীদের জন্য জায়গা বরাদ্ধ করে দিল ফিলিস্তিনে। থিউডরের স্বপ্নের সেই দেশ প্রতিষ্ঠিত হলো ফিলিস্তিনীদের রক্তের উপর। লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হলো। ঘরবাড়ী এবং জীবন হারালো।

জায়োনিস্টদের তখন সশস্ত্র মিলিশিয়া ছিল। তারা ফিলিস্তিনীদের হত্যা করতো, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে সেই ভূমি দখল করতো।

এবং তারা বিশেষভাবে বৃটিশদের সহায়তা পেত।
ইহুদীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই ইজরায়েলেও ইহুদীরাই বৈষম্যের শিকার হয়। যারা কালো ইহুদী তারাও বৈষম্যের শিকার হয়। এ নিয়ে তারা অনেকবার রাস্তায় নেমেছে। সবচেয়ে বেশী শিকার হয় আরব ইহুদীরা। কারণ তাদের ভাষা আরবী, তাদের বেশভূষা আরব মুসলমানদের মত। আরবী বলার কারণে তাদের চাকরী হয়না, আরবদের মত পোষাক পরায় চাকরী হয় না।

ধর্মে ইহুদী হওয়ার পরও জাতিতে একই না হওয়ায় তারা নানা বৈষম্য, বুলিং এবং হেনস্থার শিকার হয়। তাদের বলা হয় আরবদের ঘৃণা করতে। তো যারা পূর্বে আরব দেশে ছিল, তারা অর্থ্যাৎ বৃদ্ধরা বিষয়টা মেনে নিতে পারেনা। তারা প্রতিবাদ করে। কোনো লাভ হয় না।
তো যারা নিজ ধর্ম ইহুদীদের সাথেই এমন করে, তারা আরব মুসলমানদের সাথে কেমন আচরণ করবে সেটা সহজেই অনুমেয়। আবার আমরা তো দেখতেও পাই।
ইজরায়েল শুরু থেকেই বৃটিশ এবং আমেরিকানদের প্রত্যক্ষ সাপোর্ট পেয়ে আসছে। আরব ইজরায়েল যুদ্ধে আমেরিকান সৈন্যরা ইজরায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছে বলেও বলা হয়।

এখনো যখন ইজরায়েল ফিলিস্তিনীদেরকে হত্যা করে, নারী-শিশুদেরও হত্যা করে, ধরে নিয়ে যায় এ নিয়ে জাতিসংঘ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব আনলে আমেরিকা ভেটো দেয়। সরাসরি ইজরায়েলকে রক্ষা করে।
জাতিসংঘের আইন, আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার, যুদ্ধাপরাধ আইন সব কিছুই তারা নিয়মিত লংঘন করে। কিন্তু তাতে তাদের কোনো কিছুই হয় না। কারণ আমেরিকা আছে। তারা প্রকাশ্যেই ইজরায়েলকে রক্ষা করে নেয়, একদম নগ্নভাবে।

ইজরায়েলের কোনো সীমানা নেই। কারণ, তারা প্রতিদিনই দখল করে চলেছে। যেকোনো দিন ইহুদী সেটেলার এসে আপনাকে বলবে এই ঘর আমার। এরপর ইজরায়েলী পুলিশ এসে আপনাকে বের করে দেবে, পুরুষদের জেলে নিয়ে যাবে। তারপর বুলডোজার এসে আপনার ঘর গুঁড়িয়ে দেবে। এরপর সরকারী টাকায় সেখানে ইহুদীদের জন্য ঘর বানানো হবে।

নিজেদের শত শত বছরের ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া ফিলিস্তিনীরা এক দিনেই উদ্বাস্তু হয়ে গেল। রিফিউজি হিসেবে কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। এভাবে তারা প্রতিদিন ঘরবাড়ী দখল করে নেয় আর ফিলিস্তিনীরা উদ্বাস্তু হয়।
ইহুদীদের জন্য ঘরবাড়ী বানানোর জন্য যে টাকা খরচ হয়, তার জন্যও আমেরিকা থেকে সরকারী এবং বেসরকারিভাবে টাকা আসে।

আবার প্রতিবছর ইজরায়েলের জন্য প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা আসে।
পশ্চিমের দেশগুলোতে ইজরায়েলীদের জন্য প্রায় ভিসা ফ্রী। নামী দামী ইউনিভার্সিটি গুলোতে তারা স্কলারশিপ পায়। এর বাইরে আবার প্রায় সব বড় বড় কোম্পানীর বিলিয়ন ডলারের ইনভেস্টমেন্ট আছে ইজরায়েলে। তারা শিক্ষাখাতে ইনভেস্ট করে, গবেষণা খাতে ইনভেস্ট করে, ট্যুরিজম খাতে ইনভেস্ট করে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনীরা আগামীকাল পর্যন্ত তাদের বাড়ীটা থাকবে কিনা জানে না। প্রাণ থাকবে কিনা সেটাও জানেনা। স্কুলটা থাকবে কিনা তাও জানেনা। রাত বিরাতে এসে তল্লাশী চালিয়ে ইজরায়েলী পুলিশ যাকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। অল্পবয়সী শিশু হলেও কোনো রক্ষা নাই।
ফিলিস্তিনীদের সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ ফোর্স রাখারও পারমিশন নাই। ফিলিস্তিনী সিকিউরিটি ফোর্স নামে একটা বাহিনী আছে, তাদের ভারী কোনো অস্ত্র রাখার অনুমতি নাই।

ইজরায়েলের সাথে এক চুক্তিতে এটা মেনে নেয় ইয়াসির আরফাতের পিএলও। ফলে মাহমুদ আব্বাস নামের প্রেসিডেন্ট হলেও কাজে কোনো ক্ষমতা তার নাই।
ইজরায়েল দখল করতে করতে ফিলিস্তিনকে এমনভাবে দখল করেছে- একপাশে গাযা উপত্যকা, অন্যপাশে পশ্চিম তীর। মাঝখানে ইজরায়েল।
ব্যাপারটা অনেকটা পূর্ব পাকিস্তান আর পশ্চিম পাকিস্তানের মত পশ্চিম তীর আর গাযা, মাঝখানে ভারতের মত ইজরায়েল। মনে করার সুবিধার্তে, গাযা হচ্ছে বাংলাদেশ, পশ্চিম তীর পাকিস্তান। মাঝখানে ভারত হচ্ছে ইজরায়েল। (ভৌগোলিক অবস্থান বা ম্যাপ বুঝার সুবিধার্তে বললাম)।

ইজরায়েলীরা পৃথিবীর ১৬০টি দেশে প্রায় ভিসা ফ্রী ঘুরতে পারলেও ফিলিস্তিনীরা এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যেতে ইজরায়েলের অনুমতি নিতে হয়। ফিলিস্তিনের গাযা উপত্যকা থেকে যদি কেউ ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে যেত চায়, তাহলে অনেকদিন আগে এপ্লাই করতে হয়। তাও ৯০% ক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়া যায় না। জিজ্ঞাবাদে ইজরায়েল সন্তুষ্ট হলেই কেবল অনুমতি দেয়।
বেশীরভাগ গাযাবাসী কখনো আল আকসা মসজিদ চোখে দেখেনি। কারণ আল আকসা পশ্চিমতীরে। পিএলও আর হামাস হচ্ছে ফিলিস্তিনের দুটি রাজনৈতিক দল। হামাস সংখ্যাগরিষ্ঠ গাযাতে আর পিএলও পশ্চিম তীরে।
তবে ২০০৬ সালে পুরো ফিলিস্তিনের নির্বাচনে হামাস পিএলওর উপরে জয়লাভ করে ফিলিস্তিনের ক্ষমতায় আসে। ইসমাইল হানিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়। মাহমুদ আব্বাস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দখল করে নেয়।
অনেকটা পাকিস্তানের নির্বাচনের মত। শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হয়েও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। ইসমাইল হানিয়ার ক্ষেত্রেও তাই ঘটে। এরপর থেকে ইসমাইল হানিয়া তার এলাকা গাযাতেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকেন।
বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার মত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ফিলিস্তিন নিজেই তো স্বাধীন নয়। মাহমুদ আব্বাসের পিএলও ইজরায়েলী সকল শর্ত মেনে ফিলিস্তিন তথা পশ্চিমতীরকে ডিমিলিটাইরাইজড করলেও গাযার হামাস সেটা মেনে নেয়নি।
পশ্চিম তীরে ইজরায়েলী শর্ত অনুযায়ী কোনো সেনাবাহিনী নেই। সিকিউরিটি ফোর্স আছে, যাদের নামে মাত্র একটা পুলিশ ফোর্স আছে। যেটা আছে তাদেরও শর্ত হচ্ছে ইজরায়েলী পুলিশকে সাহায্য করতে হবে। তাদের কোনো ভারী অস্ত্র নেই। হাল্কা অস্ত্র যা আছে, সেটাও ইজরায়েলের দেয়া। ওদের গাড়ীও ইজরায়েলের দেয়া। যা ইজরাইল সবসময় ট্র‍্যাক করে।
কোনো ফিলিস্তিনীকে জোর করে বেআইনিভাবে ধরে নিয়ে গেলেও ফিলিস্তিনী সিকিউরিটি ফোর্স কিছু করতে পারে না। এজন্য পশ্চিম তীরের যেকোনো বাড়ীতে ইজরায়েলী পুলিশ চাইলে যেকোনো সময় তল্লাশী চালাতে পারে। আমরা যে পাথর ছুড়ার দৃশ্য দেখি, এগুলা বেশীরভাগই পশ্চিম তীরের। কারণ তাদের অস্ত্র রাখার অনুমতি নেই।
ইচ্ছে হলেই যে ঘরবাড়ি থেকে বের করে দিয়ে দখল করে নেয়, সেটাও পশ্চিমতীরে। কারণ পশ্চিমতীর ইজরায়েলী অকিউপ্যাশনে।
এখানকার বাসিন্দারা মোটামুটি চলাচলের স্বাধীনতা পেলেও ঘরবাড়ী কখন বেদখল হয়ে যাবে বলতে পারেনা। এতে ফাতাহ বা পিএলও কিছু করতে পারেনা।
অন্যদিকে হামাস শাসিত গাযা উপত্যকা ইজরায়েলের কোনো শর্ত মানেনা। তাদের মিলিটারী আছে। তাদের অঞ্চলে ইজরায়েলী পুলিশ ঢুকতে পারেনা। তারা নিজেরাই সেখানকার নিরাপত্তা দেয়। তাদের আর্টিলারি ইউনিট আছে। তাদের কাছে ভারী অস্ত্র আছে। যার বেশীরভাগ তারা নিজেরাই তৈরী করে।
এখানে ইজরায়েলী সেটেলাররা তো দূরের কথা, ইজরায়েলী পুলিশ, ইজরায়েলী আর্মীও ঢুকতে পারেনা। ইজরায়েলের শর্ত মেনে না নেয়ায় গাযা উপত্যকাকে ইজরায়েল চারিদিক থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গাযার দুইদিকে ইজরায়েল, একদিকে মিশর আরেকদিকে সমুদ্র।
তাদের উপর ইজরায়েল ল্যান্ড, এয়ার এন্ড সী ব্লক দিয়ে রেখেছে। গাযা উপত্যকাকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জেল খানা।
মিশর সীমান্তে আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি দেয়াল তুলে দিয়েছে। ফিলিস্তিনীদের চলাচলের জন্য মাটির নীচে সুড়ঙ্গ ছিল, সেগুলো সে বন্ধ করে দিয়েছে।
মুহাম্মদ মুরসী ক্ষমতায় আসার পর যখন মিশর সীমান্ত ফিলিস্তিনীদের জন্য খুলে দেয়, তখন ইজরায়েল মুরসীকে সবচেয়ে বড় থ্রেট হিসেবে নেয়। ইজরায়েল, সৌদি ও আমিরাত জোট মুরসীকে হটিয়ে সিসিকে ক্ষমতায় আনে। সে সময়ে সিসিকে সবার আগে
অভিনন্দন জানায় সৌদি আরব। যদিও ইজরায়েলের উদ্দেশ্য আর তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন, লক্ষ্য ছিল একই। কপাল পুড়ে ফিলিস্তিনীদের।
এরপর থেকেই ফিলিস্তীনের জন্য সেই সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। সুড়ঙ্গ পথ ব্যবহারের জন্য মিশর সীমান্তে যে ঘরবাড়ি গুলো ছিল, বুলডোজার দিয়ে সেসব বাড়ীও ভেঙে দেয় মিশর।
হামাস শাসিত গাযায় শিক্ষার হার ৯৯%। ইজরায়েলী হামলায় ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে সবার আগে তারা স্কুল গুলোকে ঠিক করে। তাদের একটা আন্তর্জাতিক মানের ইউনিভার্সিটি আছে।
গাযায় একটা বিমানবন্দর ছিল, গাযা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট নামে, যা ইজরায়েল ধ্বংস করে দেয়। পুরো ফিলিস্তিনে আর কোনো এয়ারপোর্ট নেই। ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে ইজরায়েলের ফুল স্কেলে দুইবার যুদ্ধ হয়। এতে ইজরায়েলী আর্মীর ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে ইজরায়েলী সেনাদের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটলে ইজরায়েল পিছু হটে। জুলাইয়ের ৮ তারিখ থেকে আগস্টের ২৬ তারিখ পর্যন্ত স্থায়ী এই যুদ্ধে প্রায় ১শ ইজরায়েলী সেনা নিহত হয়, অপরদিকে দুই হাজার ফিলিস্তিনী শহীদ হয়।
কিন্তু ইজরায়েলের জন্য এটাও ছিল বিশাল ধাক্কা।
গাযা উপত্যকায় খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় অষুধ সহ চোরাই পথে আনতে হয়। ইরান চোরাইপথে অস্ত্র আর কাতার টাকা দেয়। এর বাইরে তুরস্ক সমুদ্র সীমা আর ইজরায়েলী সীমা ব্যবহার করে জাহাজভর্তি খাবার, অষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য গাযায় পৌঁছে দেয়। একবার তুরস্কের একটা জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল ইজরায়েল।
সৌদি আরব সহ অন্যান্য আরবদেশ গুলো তাদের দানের একটা বড় অংশ ফিলিস্তিনে পাঠায়। তবে সেটা গাযায় নয় বরং পশ্চিমতীরে যায়।
ইজরায়েল হামাসকে বার বার বলছে- তোমরা যদি আমাদের শর্ত মেনে নাও, সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করো, অস্ত্র সমর্পণ করো, নিরস্ত্র হও তাহলে তোমাদের অবরোধ আমরা তুলে নেব। তোমরা যেখানে চাও যেতে পারবে। আমাদের এখানে চাকরী করতে পারবে। যা কিনতে চাও, তা কিনতে পারবে।
মাহমুদ আব্বাসের পিএলও পশ্চিমতীরে এই শর্ত মেনে নিলেও ইসমাইল হানিয়া আর খালিদ মিশালের গাযা উপত্যকার হামাস সেটা মেনে নেয়নি। যার কারণে তারা অবরুদ্ধ।
এই কারণে পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনীরা ইজরায়েলের দিকে ঢিল আর পাথর ছুঁড়লেও গাযা উপত্যকার ফিলিস্তিনীরা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করে, ইজরায়েলের দিকে মিসাইল ছুঁড়ে।
যদিও ইজরায়েলী অত্যাধুনিক ডিফেন্স সিস্টেম আইরন ডোম ফিলিস্তিনীদের এই মিসাইল আকাশে থাকতেই ধ্বংস করে। তবে এইবার ইজরায়েলের আইরন ডোম হামাসের মিসাইল গুলো সব আটকে দিতে সক্ষম হয়নি। অনেকগুলো মিসাইল ইজরায়েলের নানা শহরের রাস্তা এবং ভবনে আঘাত হেনেছে। এতে ইজরায়েল সহ তার মিত্ররা বেশ অবাক হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে ইসমাইল হানিয়ে গত বছর বলেছিলেন।
আইরন ডোম কতটা আঘাত ঠেকাতে সক্ষম সেটা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।
কারণ হামাসের মিসাইল গুলো কোনো অত্যাধুনিক মিসাইল নয়। এগুলো তারা পাইপ এবং অন্যান্য পরিত্যক্ত জিনিসপত্র থেকে বানায়। এই হ্যান্ডমেইড রকেট গুলো আঘাত হানার পর আইরন ডোম কতটা সেফ সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
প্রায় চার বিলিয়ন ডলার বার্ষিক সামরিক সহায়তা, বিলিয়ন ডলারের শিক্ষা এবং রিসার্চের ইনভেস্টমেন্ট, প্রায় ভিসা ফ্রী ট্রাভেল, নামী ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের একনিষ্ঠ সাপোর্ট এত কিছু পাওয়া ইজরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনিদের টিকে থাকা অসম্ভব ব্যাপার।

এবার আসুন ভিন্ন আলোচনায় আসি-
পবিত্র কুরআনের প্রথম যে শব্দটি অবতীর্ণ হয়েছে তাহেলো ‘ইকরা” মানে পড়ো।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপনাকে পড়তে নির্দেশ দিয়েছে। মনুষ্য সমাজের সকল সুখ –দুঃখ আনন্দ বেদনার জন্য চিকিৎসা, অর্থনীতি, রাজনীতি, সামরিক অস্ত্র-সস্ত্র, খাদ্য আশ্রয় যা কিছু লাগে সব জায়গায় জ্ঞান অর্জন করতে হবে । ইসলামিক মতে নামাজের পর অর্থ উপার্জনের চেষ্টাও ইবাদত । নামাজ ইসলাম প্রধান ইবাদত। কিন্তু নামাজ পড়ার পরপরই হালাল জীবিকা উপার্জনে জমিনে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। কেননা হালাল আয়-রোজগারে জীবিকা নির্বাহ করলে তাতে ইবাদত-বন্দেগিও কবুল হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ‘অতপর নামাজ শেষ হলে তোমরা জমিনে (পৃথিবীতে) ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা (জীবিকা উপার্জনে) সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ১০)

এ আয়াত অনুযায়ী আজানের পর নামাজে চলে যেতে বলা হয়েছে<। আমি হাজির মহান আল্লাহ আমি হাজির। আমি আপনাকে ভুলিনি। তারপরই উপার্জন করতে বলা হয়েছে। কারণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় ইবাদত করা যায় না , মনোযোজে বিঘ্নতা ঘটে। কিন্তু আপনাকে যখন আর সবার সাথে সংগ্রাম করে চলতে হবে তখন অবশ্যই প্রতিযোগিতা করতে হবে সেটা শুধুমাত্র অর্থে নয় বরং টিকে থাকার সর্ব ক্ষেত্রে। সারভাইবেল অফ ফিটেস্ট এর শর্তানুযায়ী যে টিকে থাকার যোগ্যতা অর্জন করে সেইই টিকে থাকে। পৃথিবীর বহুপ্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে মানব সৃষ্ট বিপর্য়য়ে কিংবা প্রর্কতিক ডিজাস্টারে। ঠিক তেমনি মুসলমানেরা তাদের অজ্ঞতার কারণেই একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ মহান আল্লা বলেন, ‘আল্লাহ তাকেই সাহায্য করেন যে নিজেকে সাহায্য করে কারণ মহান আল্লাহশক্তিমান প্রতাপশালী। সুরা হাজ্জ : আয়াত ৪০ তো আপনি ইহুদীদের মুকাবিলা করার জন্য অস্ত্র বানাতে পারলেন না, শক্তিশালী বূহ্য তৈরি করতে পারলেন না, আনার অর্থ নেই, বিশ্বে আপনি অবস্থান তৈরি করতে পারেননি আপনাকে আল্লাহ কোন গ্রাউন্ডে সাহায্য করবে? আল্লাহ তো কোন কোন অসিলায় আপনাকে সাহায্য করব্ েসে অসিলা কোথায়? ঈসা মসীহ বা জেসাস, বা যীশুকে হত্যা করেছে ইহুদীরা কারণ তখন ইমিডিয়েট ধর্ ছিলো ইহুদী ধর্। কিতাব ছিলো ইঞ্জিল। হিসেবে ধর্ যুদ্ধ হওয়া উচিত ছিলো ইহুদী –খ্রিস্টানে। মুসলমানদের সাথে কেন? তাও আবার ফিলিস্তিনি মুসলিমদের সাথে? উত্তর তো একটাই তাদের রাষ্ট্র চাই। মুসলিম কান্ট্রি তো দূরে থাক খোদ ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশেও রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হলে , টিকতে হলে ইহুদী সাপোর্ লাগবে। আমরা মুসলমানেরা ব্যবহারিক কুরআনকে ‘কী করিলে কী হয় ’এর ভেতর নিয়ে এসেছি। আমরা জ্ঞান অর্নের চেয়ে খামাকা কোরান পড়াকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কোরান ভালোবেসে সুর করে পড়ায় কোন ক্ষতি নেই কিন্তু কুরআনের নির্শ মতো পথ না চলা কুরআনকে অবজ্ঞার সামিল। মুসলিম কান্ট্রিগুলো ইহুদীরে আবিষ্কার ইপভোগ করতে কোন সমস্যা হয় না কিন্তু নিজেরা জ্ঞান বিমুখ অলস ভিক্ষুক জীবন যাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ফলে কেউ যদি দ্রুতগামী বোমা নিক্ষেপ করে তারা পড়ে দোয়া। আল্লাহকে পরীক্ষায় ফেলে দেয়। মুসলমানদের মসজিদ যে যে কাজগুলো করতে পারে- ১. দাতব্য হাসপাতাল পরিচালনা, ( মন্দিরগুলো করে থাকে) ২ . দীনি শিক্ষার সাথে সাথে বিজ্ঞান অনুশীলন করানো ৩. বিভিন্ন রকম অর্ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান চালানো ৪. সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ৫. মাতৃভাষায় কুরআন পড়া ৬. আত্মনির্রশীলতা অর্নের জন্য জন্য উদ্বুদ্ধ করণ এবং কাজের সংস্থান করণ ৭.ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করে আত্মসম্মানবোধ জাগ্রত করণ। ৮. মিথ্যাকথা বলা পরিহার করণে জোর প্রচেষ্টা চালানো। কারণ মিথ্যাই সকল অপকর্র মূল। দীর্ মেয়াদী পরিকল্পনা করে মুসলিমদের গ্লানি মুছে পুনরায় গৌরবোজ্ঝ্বল সময় ফিরিয়ে আনা। তথ্য সূত্র: ইন্টার নেট, ইজরাইল বিষয়ক তথ্য সবুর খান, পবিত্র কুরআন শাহানা সিরাজী ইন্সট্রাক্টর (সাধারণ) পিটিআই মুন্সীগঞ্জ কবি. প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top