অর্থপাচারের মামলায় যাবজ্জীবন সাজা চান হাইকোর্ট
আদালত প্রতিবেদকঃ অর্থ পাচারের মামলার বিচারের জন্য বিদ্যমান আইনে সাজার অপ্রতুলতার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, আইনে (মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২) সাজার পরিমাণ অনেক কম। এ ধরনের গুরুতর অপরাধের মামলার বিচারের জন্য আইনে যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখা দরকার ছিলো।
চট্টগ্রামের বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থ পাচারের মামলার এক আসামির জামিন শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এই মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, লুঘু দণ্ড দিয়ে এ ধরনের অর্থ পাচারের মত দুর্নীতির অপরাধ রোধ করা যাবে না। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।
বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থ পাচারের এক মামলায় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ নয়জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বিশেষ আদালত। একইসঙ্গে ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক আতাবুল্লাহ।
এই মামলার আরেক আসামি জনতা ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার এসএম শোয়েব উল কবিরের ১০ বছর সাজা হয়। এরপর আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠায় বিশেষ আদালত। কারাগার থেকে সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন চান।
আসামির জামিন শুনানিতে দুদকের কৌসুলি ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, এই অর্থ পাচারের ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ঐ ব্যাংক কর্মকর্তা। তাকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের সাজা দিয়েছে।
এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, এই মামলায় আসামিদের ১০ বছর সাজা কম হয়ে গেছে। অর্থ পাচারের মত গুরুতর অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা দিতে হবে। আইনে সর্বোচ্চ সাজার পরিমাণ কত?
তখন দুদক কৌসুলি বলেন, সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছর। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ১২ বছর সাজা সেখান থেকে আবার দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। এজন্য আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
দুদক সূত্র বলছে, ব্যাংকিং খাতের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসে বিসমিল্লাহ গ্রুপের। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১২টি মামলায় অর্ধশত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।