কড়াকড়ি ও উেস কর ;সঞ্চয়পত্র বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে।

Ban_Govt4.jpg

কড়াকড়ি ও উেস কর ;সঞ্চয়পত্র বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে

কড়াকড়ি আরোপ ও উেস কর বৃদ্ধির কারণে কমে গেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি হয়েছে মাত্র দুই হাজার ১৬০ কোটি টাকা।

এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৩৩ শতাংশ কম। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে পাঁচ হাজার ৩৬ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণেই জুলাই মাসে কমে এসেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি।

বাজেট ঘাটতি পূরণে প্রতিবছরই দুইভাবে ঋণ নিয়ে থাকে সরকার। এর একটি হচ্ছে বৈদেশিক সহায়তা, অন্যটি অভ্যন্তরীণ উৎস। অভ্যন্তরীণ উৎস হিসেবে ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেওয়া হয়।

চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

গত অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।

বিক্রি বাড়তে থাকায় সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ঠিক করা হয়। কিন্তু অর্থবছর শেষে নিট বিক্রি দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে শেষ মাস জুনে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল তিন হাজার ২০৮ কোটি টাকা।

সম্প্রতি সঞ্চয়পত্র কেনায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন থেকে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্রের ই-টিন সনদ জমা দিতে হবে। টাকার পরিমাণ এক লাখের বেশি হলে অবশ্যই ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য সঞ্চয়কারীর ব্যাংক হিসাব নম্বর, মোবাইল নম্বর দিতে হবে। এ ছাড়া নতুন ফরম এবং ‘ম্যানডেট’ ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটে পেনশনার সঞ্চয়পত্র ব্যতীত অন্য সব সঞ্চয়পত্রের উেস কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপে গত অর্থবছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে। যদিও গত রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকা অতিক্রম না করলে এই ধরনের বিনিয়োগ থেকে অর্জিত সুদের ওপর আগের নির্ধারণ করা উেস কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহ করতে সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১০ মে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার গড়ে ২ শতাংশ কমানো হয়েছিল।

বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১.৫২ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১.২৮ শতাংশ, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১.০৪ শতাংশ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১.৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের ২৩ মের পর থেকে এই হার কার্যকর আছে। এর আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ছিল ১৩ শতাংশেরও বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top